ডুমুরিয়া প্রতিনিধি: ডুমুরিয়ায় দালালদের উৎপাত ও দৌরাত্মের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে গুটুদিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ। এনিয়ে গত সপ্তাহে প্রশাসন অভিযান করলেও থামেনি তাদের দৌরাত্ম। প্রতিনিয়ত সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছেন। উপায়ন্তর না পেরে বৃহস্পতিবার সকালে ভুক্তভোগী জনগণ ডুমুরিয়া সহকারী কমিশনার (ভুমি) বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
জানা যায়, একটা সময় উপজেলার থুকড়া বাজারের গুটুদিয়া ইউনিয়ন ভুমি অফিস ঘুষ-দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত ছিলো। তখন দালাল ছাড়া কাজ হতো না এমনকি একটি ফাইলও নড়তো না। দু’টাকার খাজনা দশ হাজার টাকা নেয়া হতো। দালালদের কাছে কোন কাজই অসাধ্য ছিলো না। বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও ঘুসের রেটে হেরফের হলে প্রকৃত জমির মালিকদের নানা হয়রানির শিকার হতে হতো। এসব ছিলো সাবেক ইউনিয়ন ভুমি কর্মকর্তা ইকবাল হোসেনের সময়। তাকে নিয়ন্ত্রণ করতো থুকড়া বাজারের চিহ্নিত দালাল জামির, নাসির উদ্দিন রাঙা ও রোকার জিয়াসহ ডজন খানেক দালাল। তাদের কথার বাহিরে চললে সেবা গ্রহিতাদের নিরাশ হয়ে ফিরতে হতো। কিন্তু বর্তমানে এক নারী ভূমি সহকারী কর্মকর্তা যোগদানের পর খানিকটা পাল্টে গেছে সেই চিত্র। দালালদের বিরুদ্ধে অনেকটা ফাটাকেষ্ট’র মতো ভুমিকা নিয়ে গোটা অফিসটা তিনি বেশ কন্ট্রোলে রেখেছেন। কিন্তু তবুও দালালেরা পিছু হটেনি। আবারও সক্রিয় হচ্ছে চক্রটি। এদের বিরুদ্ধে গত ৮ সেপ্টেম্বর উপজেলা প্রশাসন অভিযান চালায়। সেদিন দালাল কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত এনামুল ওরফে মিথুনের কম্পিউটার ঘরটি সিলগালা করা হয়। এরপরেও থামেনি তাদের দৌরাত্ম। এবার দালালেরা অফিসের বাহিরে থেকে সেবাগ্রহিতাদেরকে টানা হেচড়া শুরু করেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে দালাল চক্রের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী স্বোচ্চার হয়েছে।
থুকড়া এলাকার ভুক্তভোগী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আবারো বৃদ্ধি পেয়েছে থুকড়া ভুমি অফিসের সেই দালালদের দৌরাত্ম্য। এদের বিরুদ্ধে কথা বলায় গত ১৬ সেপ্টেম্বর জামির নামের চিহ্নিত এক দালাল আমাকে হুমকি-ধামকি দিয়েছে। আমরা দালালমুক্ত ভুমি অফিস গড়তে এলাকাবাসী স্বোচ্চার হয়েছি।
এ বিষয় ডুমুরিয়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) অপ্রতিম কুমার চক্রবর্তী জানান, দালালদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছেন। দালাল চক্রের সদস্যরা এখন অফিসে ঢুকছে না। স্থানীয়দের বলা হয়েছে, ভুমি অফিসের আশপাশে যেখানে দালালদের দেখা পাওয়া যাবে সেখানেই প্রতিহত করতে হবে। দালাল না ধরে সরাসরি অফিসে গিয়ে ভূমিসেবা গ্রহণের জন্য তিনি পরামর্শ দেন। এতে দালাল ও মধ্যস্বত্বভোগীদের হয়রানি থেকে মুক্ত থাকা যাবে এবং ভূমি সংক্রান্ত কাজে স্বচ্ছতা ও গতিশীলতা আসবে।