সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : দাবিকৃত যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় হত্যার শিকার হয়েছেন তাসলিমা বেগম নামের এক গৃহবধূ। প্রথমে তাকে শরীরের যৌনাঙ্গসহ বিভিন্ন স্থানে পৈশাচিক নির্যাতন চালিয়ে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়। এর এক পর্যায়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে গলায় রশি পেঁচিয়ে আত্মহনন করেছে বলে অপপ্রচার চালায়। দাবিকৃত যৌতুকের মাত্র ১৪ হাজার টাকা না পেয়ে গৃহবধূর স্বামী যশোরের কেশবপুর উপজেলার ৪ নম্বর বিদ্যানন্দকাটি ইউনিয়নের ভান্ডারখোলা গ্রামের মৃত চাঁদ আলী সরদারের ছেলে কামাল হোসেন এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন গৃহবধূর ছোট ভাই আসাদুজ্জামান।
মঙ্গলবার বেলা ১২টার সময় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আসাদুজ্জামান এসব অভিযোগ করেন। এ সময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেন তার সেজ ভাই মাওলানা মিজানুর রহমান।
নিহত গৃহবধূ তাসলিমা বেগম সাতক্ষীরা তালা উপজেলার শিরাশনি গ্রামের মৃত আবুল কাশেম শেখের মেয়ে। সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত অভিযোগে গৃহবধূর ভাই আসাদুজ্জামান তার বোনের হত্যার বিচার ও কামাল হোসেনের ফাঁসি ও দ্রুত গ্রেফতার দাবি করে সাংবাদিক সম্মেলনে আরও বলেন, আমার বোন তিন সন্তানের জননী। বিয়ের পর থেকে সে যৌতুকের দাবিতে আমার বোনকে বিভিন্ন সময় নির্যাতন করতো। গত ৭ মাস পূর্বে বড় ছেলে রাহুল ইসলামকে সোদিআরবে পাঠানোর কথা বলে বোন তাসলিমার নিকট ২ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। সে সময় তিনভাই মিলে ১ লাখ টাকা প্রদান করা হয়। তবে আর কখনো যৌতুক নিবেনা বলে একটি মুচলেকা দিয়ে যায় তার স্বামী কামাল হোসেন ও বড় ছেলে রাহুল ইসলাম। কিন্তু এই ঘটনা যেতে না যেতেই গত ২৭ সেপ্টেম্বর আবারও যৌতুক চেয়ে ২০ হাজার টাকা দাবি করে। আমার বড় ভাই কষ্টে তাকে ওই দিন ৬ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে প্রদান করে। আর বাকি টাকা ৩০ সেপ্টম্বর দিবো বলে কামাল হোসেনকে আশ্বস্ত করি। কিন্তু বাকি ১৪ হাজার টাকা না পেয়ে ২৮ সেপ্টেম্বর আমার বোনকে মারপিট করে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে কামাল হোসেন। পরবর্তী হত্যাকাণ্ডটি ভিন্নখাতে নিতে গলায় রশি দিয়ে বাড়ির ঘরের আঁড়ায় টানিয়ে ঝুলিয়ে দেয়। এ ঘটনা জানতে পেরে আমার ভাই মাওলানা মিজানুর রহমান কেশবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করে লাশের ময়না তদন্ত সম্পন্ন করান। পরবর্তীতে কামাল সরদার লাশ নিজ পারিবারিক কবরস্থানে দাফনের অস্বীকৃতি জানায়। এক পর্যায়ে বিষয়টি কেশবপুর থানার ওসি আনোয়ার হোসেনকে অবহিত করলে তার হস্তক্ষেপে রাতে লাশ দাফন হয়। আমরা ইতোমধ্যে কামালের বিরুদ্ধে কেশবপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছি। থানার ওসি জানান, মরদেহের ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে না অসা পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছিনা। কামাল হোসেন ময়না তদন্তের রিপোর্ট ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে যশোর সদর হাসপাতালে দৌঁড়ঝাঁপ শুরু করেছেন।