ডুমুরিয়া প্রতিনিধি : দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বীর প্রতীক বলেছেন, ‘সরকার মানুষের কল্যাণে উপকুল অঞ্চলে আশ্রয় কেন্দ্র স্থাপন করছে। এটা দুর্যোগের সময় সেল্টার হিসেবে থাকবে এবং দুর্যোগ পরবর্তিকালে কমিউনিটি সার্ভিসের জন্য সবাই ব্যবহার করতে পারবে।’ গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টায় খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার শরাফপুর দারুল উলুম কওমী মাদ্রাসা দুর্যোগ আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শনে এসে তিনি একথা বলেন। আশ্রয়কেন্দ্রের নির্মান কাজ যথাযথভাবে হয়েছে কিনা বা এর সুফল সাধারণ মানুষ পাচ্ছে কিনা সেটা দেখার জন্য সরেজমিনে পরিদর্শনে এসে স্থানীয় অধিবাসিদের সাথে মতবিনিময়কালে এর সুফল তুলে ধরে উপদেষ্টা ফারুক ই আজম আরো বলেছেন, এই আশ্রয়কেন্দ্রটি মাদ্রাসার তত্ত্বাবধায়নে থাকবে আর এলাকাবাসী সবাই এর উপকার ভোগি হবে। আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শনে এসে তিনি কাজের গুণগত মান সন্তুষ্ট প্রকাশ করলেও ভবনের ছাদে ওঠার সিঁড়ি না রাখায় নকশা ও পরিকল্পনা কর্মকর্তাদের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘প্রকল্প তৈরির সময় যথেষ্ট গবেষণা ও পরিকল্পনার অভাবে এতবড় ভুল হয়েছে। তবে টিআর প্রকল্পের মাধ্যমে অতিরিক্ত বরাদ্দে ভবনের ছাদে ওঠার জন্য স্টীলের সিঁড়ি নির্মাণ করার কথা বলেছেন উপদেষ্টা ফারুক ই আজম। আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রের সকল কাজ সম্পন্ন করার কথাও বলেছেন তিনি।’ ভবনে ইলেক্ট্রিক, সেনেটারী, টাইলস ও সাইড উন্নয়নের কিছু কাজ বাকি আছে। শরাফপুর ইউনিয়নের জালিয়াখালী চরাঞ্চলে ভদ্রা নদীর তীরবর্তী রক্ষা বাঁধ নির্মাণসহ একটি সাইক্লোন সেন্টার স্থাপনের জোর দাবী করেন শরাফপুর ইউপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মনোরঞ্জন দাস। এসময় উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রেজওয়ানুর রহমান, খুলনা জেলা প্রশাসক মোঃ তৌফিকুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আল-আমিন, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল করিম, থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ মাসুদ রানা, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এসএম আব্দুল্লাহ বায়েজিদ, মাদ্রসার মুতামিম মাওলানা আব্দুর রহমান, ঠিকাদার মিজানুর রহমান, বিএনপি নেতা শাহনুর রহমান শাহিন, হেমায়েত রশিদ খান, শেখ আব্দুর রশিদ প্রমুখ। পরে উপদেষ্টা ফারুক ই আজম শিবনগর খেয়াঘাটের দক্ষিণ পাশে নির্মানাধীন দুর্যোগ আশ্রয়কেন্দ্রটি পরিদর্শন করেন। সেখানে নির্মাণাধীন ভবনের একটি অংশ নদীগর্ভে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে সেই অংশের কাজ স্থগিত রাখার নির্দেশ দেন তিনি। প্রায় ৭ কোটি টাকা বরাদ্দে নির্মাণ হচ্ছে ঘ্যাংরাইল নদীর তীরে ওই আশ্রয়কেন্দ্রটি।
প্রসঙ্গত, “দুর্যোগ আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ ও উন্নয়ন” শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ডুমুরিয়া উপজেলায় ২০২৪/২৫ অর্থবছরে নির্মাণাধীন শরাফপুর উলুম কওমী মাদ্রাসা দুর্যোগ আশ্রয়কেন্দ্রে বরাদ্দ ২ কোটি ৪৩ লাখ ৩৭ হাজার টাকা, স্বর্ণদ্বীপ মহাবিদ্যালয় দুর্যোগ আশ্রয়কেন্দ্রে বরাদ্দ ২ কোটি ৯৮ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ও শিননগর খেয়াঘাটের দক্ষিন পাশে দুর্যোগ আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণে বরাদ্দ ৬ কোটি ৯৫ লাখ ৬৮ হাজার টাকা।