সুব্রত কুমার ফৌজদার, ডুমুরিয়া: গুটি কয়েক আবাসিক (প্লট) ব্যবসায়ীর বাধার মুখে কৈয়া-রায়ের মহল সড়কে রোড ব্যারিয়ার দিতে পারেনি এলজিইডি। মঙ্গলবার দুপুরে সড়কের মোস্তর মোড় নামক স্থানে রোড ব্যারিয়ারসহ বার স্থাপনের সময় মব সৃষ্টি করে বাঁধা দেয়। একপর্যায়ে কাজ ফেলে ফিরতে বাধ্য হয় এলজিইডি’র কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার।
জানা যায়, কৈয়া-রায়েরমহল সড়ক দিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ওভারলোড বালির ডাম্পারসহ ভারি যানবাহন। মাত্র ৮ মে. টনের ধারণ ক্ষমতার সড়কে ৪০ থেকে ৫০ মেট্রিক টন বা তার চেয়েও ভারী যানবাহন চলছে। এক্সেল লোডের চেয়ে দুই থেকে তিন গুণ ওজন বহনকারী ট্রাক চলাচলের কারণে মেরামতের ৬ মাস না যেতে বেহাল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। ধারণক্ষমতার দ্বিগুণ ওজন বহন করলে সড়কের ক্ষতি হয় ১৬ গুণ। ফলে দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কে যানচলাচলের একেবারই অনুপযোগী হয়ে গেছে। এরপরেও সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্লট ব্যবসায়ীদের ওভার লোড বালির ট্রাক চলাচল করে এ সড়কে। যত্রতত্র (সড়কের পাশে) বালি আনলোড করা হয়। ভরাট করা হচ্ছে মাঠের পর মাঠ কৃষি জমি। ধুলা-বালির কারণে সড়ক দিয়ে সাধারণ মানুষের চলাচলেও বিগ্ন সৃষ্টি হচ্ছে।
এদিকে খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের জিরোপয়েন্ট এলাকায় রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে সাতক্ষীরা সড়কের যানবাহনগুলো কিছুদিন চলেছে এই সড়কে। কৈয়া ব্রীজের একটি অংশ ভেঙে যাওয়ার পর সাতক্ষীরা সড়কের গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়। কিন্তু তার আগেই জনগুরুত্বপূর্ণ কৈয়া-রায়েরমহল পল্লী সড়কটি বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়। এসব কারণে সড়ক রক্ষার্থে রোড ব্যারিয়ার স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় ডুমুরিয়া উপজেলা প্রশাসন। এতে প্রায় ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় ডুমুরিয়া উপজেলা পরিষদ। গত মঙ্গলবার মোস্তর মোড় নামক স্থানে রোড ব্যারিয়ার স্থাপন করছিলো কর্তৃপক্ষ। দুপুর আড়াইটার দিকে নির্ধারিত পরিসীমায় ব্যারিয়ারের বার স্থাপনের কাজ চলছিলো। এসময় স্থানীয় কয়েকজন আবাসিক ব্যবসায়ীর নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন এসে মব সৃষ্টি করে কাজে বাঁধা দেয়।
এলজিইডি’র কার্যসহকারী মফিজুর রহমান বলেন, ওরা আমাদের শুধু মারেনি, আর সবই করেছে। এতো অশ্লীলভাষা আগে কোনদিন শুনিনি। ক্রেন ড্রাইভারকেও মারতে যাচ্ছিলো।
ঠিকাদার খান শাহিন (মোহন) জানান, গত কয়েকদিন ধরে সড়কের মোস্তর মোড় এলাকায় রোড ব্যারিয়ারের কাজ চলছে। সেদিন বারসহ ব্যারিয়ার স্থাপন করার সময় স্থানীয় তানিসা আবাসিক প্রকল্পের মালিকসহ ২০/৩০জন লোক এসে কাজে বাঁধা দেয়। পরিস্থিতি বেসামাল বুঝে কাজ অসমাপ্ত রেখেই চলে আসি।
উপসহকারী প্রকৌশলী আতাউর গণি মিনজু জানান, কৈয়া-মোস্তর মোড় সড়কে সম্প্রতি ভারী যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। অতিমাত্রায় ওভারলোড গাড়ি চলাচলের কারণে দ্রুত সড়ক নষ্ট হয়ে গেছে। যার কারণে সড়ক রক্ষার্থে রোড ব্যারিয়ারসহ সাড়ে ৮ ফুট উঁচু রেখে বার স্থাপনের কাজ চলছিলো। কিন্তু স্থানীয় এক প্লট ব্যবসায়ী লোকজন নিয়ে এসে মব সৃষ্টির চেষ্টা চালিয়েছে। তাই ব্যারিয়ারের বার স্থাপনা না করেই ফিরে এসেছি। উপজেলা প্রশাসনসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের আলোকে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।