কালিগঞ্জ (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে ভাই ভাই কোল্ডস্টোরেজে আলু রেখে চরম বিপাকে পড়েছেন জাহাঙ্গীর হোসেন ও মাহাবুর রহমান নামে দুই ব্যবসায়ী। কোল্ডস্টোরেজ কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও দায়সারা ভূমিকায় নষ্ট হয়ে গেছে ৩৮ লক্ষাধিক টাকার আলু। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার মথুরেশপুর ইউনিয়নের দুদলী এলাকায় অবস্থিত ভাই ভাই কোল্ডস্টোরেজে। এ ঘটনায় ক্ষতিপূরণ পাওয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর গত ২৭ অক্টোবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা।
লিখিত অভিযোগে উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের চাঁচাই গ্রামের মরহুম ইনতাজ আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন (৫২) ও হোগলা গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে মাহাবুর রহমান (৪৮) জানান, উপজেলার মথুরেশপুর ইউনিয়নের দুদলী মিস্ত্রিপাড়া মসজিদ সংলগ্ন ভাই ভাই কোল্ডস্টোর রয়েছে। সেখানে বীজ ও খাওয়ার আলু রাখার জন্য দেখতে গেলে ভাই ভাই কোল্ড স্টোরেজের মালিক দুদলী গ্রামের কাজী হাফিজুর রহমানের ছেলে কাজী শাহীন ও কাজী মুরাদ সর্বোচ্চ সুবিধা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। সরল বিশ্বাসে ভাই ভাই কোল্ডস্টোরেজে তারা ৬৭০ বস্তা বীজ এবং ১ হাজার বস্তা (প্রতি বস্তায় রক্ষিত আলুর ওজন ৬২ কেজি) খাওয়ার আলু সংরক্ষণের জন্য দেন যার আনুমানিক মূল্য ৪১ লক্ষ ৪১ হাজার ৬০০ টাকা। অভিযোগে ব্যবসায়ীরা আরও জানান, মাঝে মধ্যে তারা ভাই ভাই কোল্ডস্টোরেজে আলু দেখার জন্য গেলে মালিক কাজী শাহীন ও কাজী মুরাদ তাদেরকে আলু না দেখতে দিয়ে বিভিন্নভাবে বুঝিয়ে বের করে দিতেন। একপর্যায়ে বীজ ও খাওয়ার আলুর প্রয়োজন হওয়ায় কোল্ডস্টোরে যেয়ে তাদের রাখা আলুর বস্তা ভিজা এবং প্রতিটি বস্তায় আলুর অঙ্কুর বের হওয়া অবস্থায় দেখতে পান। এ সময় আলুর বস্তার অঙ্কুর বের হওয়ার কারণ জানতে চাইলে কাজী শাহীন ও কাজী মুরাদ তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করতে শুরু করেন। তাৎক্ষণিক ওই কোল্ডস্টোরেজে রক্ষিত ১ হাজার ৬৭০ বস্তা আলুর মধ্যে ১২০ বস্তা আলু করে নিয়ে সেগুলো খাওয়ার ও বিক্রির অনুপযোগী বলে নিশ্চিত হন তারা। কোল্ডস্টোরেজে নিয়ম অনুযায়ী আলু না রেখে ইচ্ছেমতো সংরক্ষণ করায় তাদের প্রায় ৩৮ লাখ ৪৪ হাজার টাকার আলু নষ্ট হয়েছে। ক্ষতিপূরণ চাওয়ায় ভাই ভাই কোল্ডস্টোরেজের মালিক কাজী শাহীন ও কাজী মুরাদ ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর হোসেন ও মাহাবুর রহমানকে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করেছেন তারা।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ভাই ভাই কোল্ডস্টোরেজের মালিক কাজী শাহীন বলেন, তাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা সঠিক নয়। ভাই ভাই কোল্ডস্টোরেজের যথেষ্ট সুনাম রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, যারা আলু রেখেছিল ইতোমধ্যে তারা আলু নিয়ে গেছে। জাহাঙ্গীর ও মাহাবুরও আলু নিয়ে গেছে বলে জানালেও ১ হাজার ৬৭০ বস্তার মধ্যে তারা কত বস্তা আলু নিয়ে গেছে তা তিনি নিশ্চিত করতে পারেন নি। হুমকি-ধামকি প্রদানের বিষয়টিও অস্বীকার করেন কাজী শাহীন।