 
                    সিরাজুল ইসলাম, কেশবপুর : কেশবপুরে কুশুলদিয়া গ্রামের বুড়িভদ্রা নদীর উপর নির্মিত ব্রিজটি চার বছরেও শেষ হয়নি। যার ফলে পথচারীদের চলাচলের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। 
কেশবপুর উপজেলার মজিদপুর ইউনিয়নের কুশুলদিয়া গ্রামে বুড়িভদ্রা নদীর উপরে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে একটি আরসিসি ব্রিজ। ২০২২ সালে ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শুরু করে। কিন্তু চার বছরেও ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শেষ না-হওয়ায় পথচারীদের চলাচলের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। দীর্ঘদিন ব্রিজটির নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকায় চলতি বছর ৮ ফেব্রুয়ারী “সাড়ে ৩ কোটি টাকার সেতুর নির্মাণকাজ ফেলে ঠিকাদার উধাও” শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় পুনরায় ব্রিজের নির্মাণ কাজ শুরু করে। ব্রীজের সংযোগ সড়ক শুরু করে খোয়াসহ সেভ পিলার বসানো হয়েছে। কিন্তু ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সড়কের দু’পাশ ধসে পুকুরের মধ্যে বিলীন হওয়াসহ সেফপিলার উপড়ে গেছে। সেই থেকে বন্ধ রয়েছে ব্রিজের নির্মাণ কাজ। 
কেশবপুর স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর সূত্রে জানাগেছে- কেশবপুর-ভান্ডারখোলা সড়কের মজিতপুর ইউনিয়নের কুশুলদিয়া গ্রামের ‘নয়ের বাজার মোড়’ থেকে গোলাঘাটা বাজার পর্যন্ত বুড়িভদ্রা নদীর উপর দিয়ে একটি গ্রামীণ সড়ক রয়েছে। কুশুলদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে থেকে অদুরে বুড়িভদ্রা নদীর উপরে ৪২ মিটার দৈর্ঘের একটি আরসিসি ব্রীজ নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। যশোর অঞ্চলের গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প আওতায় ব্রীজ নির্মাণে ৩ কোটি ২৯ লাখ ৬০৩ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কাজটি পান মেসার্স অর্পি-অর্নি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী ইদ্রিস আলী। তিনি ২০২২ সালে ২ জুন ব্রিজ নির্মাণ কাজ শুরু করেন। সিডিউল অনুযায়ী ২০২৩ সালের ২৩ নভেম্বর ব্রীজ নির্মাণের কাজ শেষ হওয়ার কথা।
কুশুলদিয়া গ্রামের ডজনখানেক মানুষের সাথে আলাপ কালে জানাগেছে- বুড়িভদ্রা নদীর উপর নির্মাণাধীন ব্রিজটি এলাকার নেপালনাথের ব্রীজ নামে পরিচিত। শত বছরের পুরাতন ওই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন কুশুলদিয়া, সরফরাজ, মজিতপুর, বাজিতপুর, মীর্জাপুর,মঙ্গলকোট সহ এক ডজনখানেক গ্রামের মানুষ চলাচল করে থাকে। বুড়িভদ্রা নদীর পশ্চিমপার্শে কুশুলদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কুশুলদিয়া মোড়ের নয়ের বাজার রয়েছে। ব্রীজের পূর্বপাশে গোলাঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাসবেহারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, গোলাঘাটা দারুসছুন্না দাখিল মাদ্রাসা থাকায় সেতুটি গ্ররুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। গত চার বছরেও ব্রিজের নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় এর সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এলাকাবাসী পথচারী ও হাটুরেরা। এই এলাকাটি কাঁচামাল তরি-তরকারি উৎপাদন কারী এলাকা হিসাবে পরিচিত। কৃষকের উৎপাদিত কৃষিপণ্য কেশবপুরে বাজারযাত করতে এই সেতুর উপর দিয়ে চলাচল করতে হয়। এই সেতুর স্থানে পুরাতন সেতু ভেঙে নতুন ব্রিজ নির্মাণ করা হচ্ছে। এলাকাবাসীর ভোগান্তি এড়াতে দ্রুত ব্রীজ নির্মাণকাজ শেষ করার দাবী জানিয়েছেন। 
এ বিষয়ে কেশবপুর উপজেলার প্রকৌশলী নাজমুল হক দৈনিক স্পন্দনকে বলেন, ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সড়কের দু’পাশ ধসে পুকুরের মধ্যে বিলীন হওয়াসহ সেফপিলার উপড়ে গেছে। কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা দেখার জন্য ইচ্ছা করে সেতুর কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে সড়কে চলাচলের উপযোগী হয়েছে। নদীর পানি কমে গেলে পুনরায় সড়ক ও সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।