নিজস্ব প্রতিবেদক : ঝিকরগাছার ছোট পোদাউলিয়া গ্রামের কামরুজ্জামান কামু হত্যা মামলায় দুই ভাইয়ের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে যশোরের একটি আদালত। একই সাথে তাদের প্রত্যেককে আরো ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে। হত্যার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ওসমানের স্ত্রী খাদিজা খাতুনকে খালাস দেয়া হয়েছে। সোমবার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পঞ্চম আদালতের বিচারক জুয়েল অধিকারী এক রায়ে এ সাজা দিয়েছেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলো ঝিকরগাছা উপজেলার শংকরপুর ইউনিয়নের ছোট পোদাউলিয়া গ্রামের মৃত জবেদ আলীর দুই ছেলে ওসমান গণি ও আলী হোসেন। সাজাপ্রাপ্ত দুইজনই কারাগারে আটক আছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পিপি আজিজুল ইসলাম।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ছোট পোদাউলিয়া গ্রামের নুরুল হকের ছেলে কামরুজ্জামান কামুর সাথে তার চাচাতো ভাই ওসমান ও আলী হোসেনের জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। ২০২৩ সালের ৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় নিজের জমিতে সীমানা প্রাচীর নির্মাণকে কেন্দ্র করে কামরুজ্জামানের সাথে ওসমান গণি ও আলী হোসেনের বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে ওসমান ও আলী হোসেন বাড়ি থেকে ধারালো দা এনে কামরুজ্জামান কামুকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। তাকে বাঁচাতে গিয়ে কামরুলের বড় ভাইয়ের স্ত্রী আনোয়ারা, ছোট ভাইয়ের স্ত্রী পারভীন ও ভাইপো আতাউর রহমান হামলার শিকার হন। তাদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে আহত চারজনকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালে আনার পথে কামরুজ্জামানের মৃত্যু হয়। আহত তিনজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় নিহত কামরুজ্জামানের ভাই রুহুল আমিন সরদার বাদী হয়ে ঝিকরগাছা থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলা তদন্ত শেষে ঘটনা সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়ায় ওই তিনজনকে অভিযুক্ত করে ২০২৪ সালের ৩ জুলাই আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই বনী ইসরাইল।
দীর্ঘ সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামি ওসমান গনি ও আলী হোসেন এর বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত ৩০২ ধারার হওয়ায় বিচারক তাদের প্রত্যেককে মৃত্যুদণ্ড, ১০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দিয়েছেন। একই সাথে ৩৪ ধারার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক প্রত্যেককে আরো ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন।