নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মেঘমল্লার বসু বলেছেন- জুলাই গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচারকে পতন ঘটিয়েছি, রাজাকারের আস্ফালন দেখার জন্য নয়। শনিবার বিকালে যশোর শহরের টাউন হল ময়দানের রওশন আলী মঞ্চে ছাত্র ইউনিয়ন যশোরের ১৩ তম সম্মেলনে তার বক্তব্যকালে তিনি এই মন্তব্য করেন। মেঘমল্লার বসু বলেন-‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মুক্তিযুদ্ধের অপূর্ণ যে লড়াই সেই লড়াইকে পূর্ণতা দেওয়ার কথা বলেই জুলাই আন্দোলনে নেমেছিলো জনগণ। কিন্তু একদল বিপথগামী বাংলাদেশ বিরোধী শক্তি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর এই ২৪ কে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বিরুদ্ধে দাঁড় করার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। জেলায় জেলায় মহল্লায় তাদের যে অপতৎপরতা সেটা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা সব জায়গায় বুঝানোর চেষ্টা করছে, জুলাই ৭১ লড়াইয়ের উল্টো। ৩০ লক্ষ মানুষের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে যে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, কেউ যদি ফ্রান্স আমেরিকায় বসে বলে বাংলাদেশের শহীদ সংখ্যা দুই হাজার, তাহলে তার মোকাবেলা হবে রাজপথে। তার মোকাবেলা হবে বুদ্ধিবৃত্তিক সামাজিকভাবে।’ নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করার জন্য জনগণ জুলাইয়ে রক্ত দিয়েছিলো মন্তব্য করে মেঘমল্লার বসু বলেন-‘আমরা যখন মহান মুক্তিযুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলাম। তখন ৭১ যুদ্ধের প্রশ্নে, যারা বলেছিলো, যারা ৭১ যুদ্ধে যাচ্ছে তারা ভারতের দালাল। হিন্দুদের দালাল। সেই একই গোষ্ঠী ২০২৫ দাঁড়িয়ে এই ধর্মবিক্রির রাজনীতি করছে। আমরা স্পষ্ট বলতে চাই বাংলাদেশ বহু ধর্মের, মতের দেশ। সেখানে যে যার মতো ধর্ম পালন করবে। তাই কেউ নির্ধারণ করে দিতে পারবে না; কে কিসের ধর্ম পালন করবে। ধর্ম চর্চার অধিকার মানুষের নাগরিক অধিকার, মানুষের নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করার জন্য জুলাইয়ে রক্ত দিয়েছিলাম। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে সমালোচনা করে মেঘমল্লার বসু বলেন-‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর যে সরকার আসলো, সেই সরকার প্রথমে অনেক বড় বড় কথা বলেছিলো। আওয়ামী লীগের বৈদেশিক নীতি আর এই দেশে চলবে না। আমরা এমন নীতি চাই, যেখানে অন্য রাষ্ঠের সাথে আমাদের সম্পর্ক হবে সমমর্যাদাপূর্ণ। বাস্তবে আমরা দেখছি, ভারতের সাথে যেসব অসমচুক্তি হয়েছে, সেই অসমচুক্তি একটিও দুর হয়নি। আদানীর কাছ থেকে বেশি বেশি বিদ্যুৎ নেয়া হচ্ছে। রামপাল চুক্তি এখনো রয়েছে, ভারতের কাছে আম-ইলিশ পাঠিয়ে কূটনীতিক রাজনীতিক এখনো জারি রাখা হয়েছে। সাথে সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাম্রাজ্যবাদী শক্তিদের কাছে দেশ বিক্রির যে পায়তারা সেটা অব্যহত রয়েছে। দেশ বিরোধী সকল শক্তিকে রুখে দিতে ছাত্র ইউনিয়ন সবসময় রাজপথে থাকবে।’ যশোর জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি আকরাম হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নে সহ সভাপতি নাজিফা জান্নাত, সাধারণ সম্পাদক শিমুল কুম্ভকার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গাজী গোলাম মোস্তফা, সিপিবি যশোর জেলা সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবু হাসান, উদীচী যশোর সংসদের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান খান বিপ্লব, জেলা বাসদ নেতা ইমরান খান, যশোরের ১৩ তম সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির আহ্বায়ক রাশেদ খান প্রমুখ। এর আগে বিকালে জাতীয় সংগীতের সাথে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গাজী গোলাম মোস্তফা।