নিজস্ব প্রতিবেদক : মহান বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নার্গিস বেগম বলেছেন- বাংলাদেশ আমাদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত, কারও দয়ার দান নয়। এই দেশকে নিরাপদ রাখা স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব অক্ষুন্ন রাখার দায়িত্ব আমাদের সকলের। চব্বিশের রক্তাক্ত গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতনের মাধ্যমে প্রাথমিক বিজয় অর্জিত হয়েছে। সমগ্র জাতি নতুন সূর্যোদয় দেখার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। কাঙ্খিত গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বির্নিমাণের জন্য দেশবাসী প্রতীক্ষমাণ। আগামী ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হতে যাচ্ছে। এই নির্বাচনের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে বাংলাদেশ আগামী দিনে কোন পথে যাবে। প্রিয় দেশবাসী সতর্ক থাকুন, যারা বাংলাদেশের জন্ম মুহুর্ত থেকে ষড়যন্ত্র করছে এবং চব্বিশের গণঅভ্যূত্থানের পর পালিয়ে থেকে চক্রান্ত করে আমাদের গণতান্ত্রিক যাত্রাকে নস্যাৎ করতে চায়। কোন ভাবেই দেশ বিরোধী চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রকারীরা সফল হতে না পারে। কেউ যেন পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যেতে না পারে। আবার যেন কোনদিন স্বৈরাচারের কালো ছাঁয়া আমাদের মাথার ওপর তুলতে না পারে।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে যশোর জেলা বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন তিনি। চৌরাস্তা মোড়ে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভার শুরুতে অধ্যাপক নার্গিস বেগম মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানসহ স্বাধীনতা যুদ্ধ, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানসহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নিহতের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ ও তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) এবং ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোর-৩ ( সদর ) আসনে ধানের শীষ মনোনীত প্রার্থী অনিন্দ্য ইসলাম অমিত।
এ সময় তিনি আরও বলেন, বৈষম্যহীন, গণতান্ত্রিক মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার আকাঙ্খা নিয়ে একাত্তরের জাতির সূর্য সন্তানরা রক্ত এবং আত্ম বলিদান করেছিল। দেশীয় বিশ্বাস ঘাতকরা সেই রক্ত এবং আত্মদানকে বারবার ব্যহত করেছে। তারা দেশকে বিদেশীদের কবজায় তুলে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু দেশ প্রেমিক জনতা তারা বারবার প্রতিহত করে প্রিয় মাতৃভূমিকে রক্ষা করেছে। পাশ্ববর্তী দেশের সাজানো নীল নকশার নির্বাচনের মাধ্যমে ২০০৮ সালে জনগণের মতামতকে পদদলিত করে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় বসিয়ে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছিল। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য দীর্ঘ ১৬ বছর আন্দোলন করেছি।
তিনি বলেন, কাদের নেতৃত্বে আগামীতে দেশ নিরাপদ থাকবে সেটি জনগণ ঠিক করবে। আমরা দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাবো যে দলের প্রতি বিগত দিনে আপনারা চার চার রাষ্ট্রপরিচালনা দায়িত্ব দিয়ে আস্থা রেখেছিলেন, আগামীতেও আস্থা রাখুন। যে দল গণতন্ত্রের জন্য দীর্ঘ সময় রাজপথে রক্ত দিয়েছে। যে দলের প্রতিষ্ঠাতা মহান স্বাধীনতার ঘোষক। যার হাত ধরে বাংলাদেশ নামক স্বাধীন ভূখন্ড অর্জিত হয় যিনি বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিতা করেছিলেন। যার সহধর্মিনী আপোষহীন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া স্বৈরচার এরশাদকে হটিয়ে গণতন্ত্র উপহার দিয়েছিলেন। তাদের যোগ্য উত্তরসূরী তারেক রহমানের ওপর আস্থা রাখুন। তিনি আগামী দিনে দেশকে কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পৌঁছে দিতে পারবেন। তার পিতা ও মাতার দেখানো পথের উত্তরাধিকার হিসেবে বৈষম্যহীন, , মানবিক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে বির্নিমাণ করতে পারেন।
আলোচনায় সভায় সভাপত্বি করেন, জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু। বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন, নগর বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম চৌধুরী মুল্লুক চাঁদ, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আঞ্জুরুল হক খোকন, জেলা মহিলা দলের সভাপতি রাশিদা রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মোস্তফা আমির ফয়সাল প্রমুখ। আলোচনা সভা পরিচালনা করেন , জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম।