Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)

ভবদহের হিন্দু-মুসলিম একাট্টা হয়ে উপভোগ গাউটে পূজার মেলা

এখন সময়: বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর , ২০২৫, ১২:২২:১০ এম

মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি : যশোরের মণিরামপুরে শতবছরের ঐতিহ্য ধরে রাখতে ভবদহপাড়ে আয়োজন করা হয়েছে সপ্তাহব্যাপী মেলার। ‘গাউটে পূজা’ উপলক্ষে রাজবংশিপাড়ার কালিমন্দির চত্বরে এ মেলার আয়োজন করা হয়। হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজা হলেও ভবদহের হিন্দু-মুসলিম একাট্টা হয়ে উপভোগ করছেন এ মেলা। প্রতিদিন বিকেল তিনটায় শুরু হয়ে চলছে গভীর রাত পর্যন্ত। গত ১৪ ডিসেম্বর শুরু হয়ে ‘গাউটে পূজা’ মেলা শেষ হবে ১৯ ডিসেম্বর। এ মেলা এলাকায় স্থাপন করেছে এক অভূতপূর্ব সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধন। এমনটিই জানাগেছে মেলা দেখতে আসা ভিন্ন ভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সাথে কথা বলে।
মণিরামপুর উপজেলার ভবদহের কপালিয়া বাজারের পূর্বপাশে রাজবংশি পাড়ায় অবস্থিত কালি মন্দির চত্বরে শ্রী শ্রী মহামায়া পূজা (গাউটে পূজা) উপলক্ষে ১৪ ডিসেম্বর থেকে আয়োজন করা হয়েছে সপ্তাব্যাপী মেলার। মন্দিরের সামনে নির্মান করা হয়েছে বিশাল প্যান্ডেল। এখানে রয়েছে সুসজ্জিত মঞ্চ। মঞ্চে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা শিল্পীরা ধর্মীয়সহ ভিন্ন ভিন্ন গান পরিবশেন করছে। কবিতা আবৃতি, নাটক ছাড়াও প্রতিরাতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে যাত্রাপালা। প্রচন্ত শীত উপেক্ষা করে হিন্দু সম্প্রদায় ছাড়াও মুসলিমরাও এ মেলায় অংশ নিচ্ছেন। মন্দির চত্বর ছাড়িয়ে তিনভেন্ট স্লুইচগেটের পাশ দিয়ে বহমান প্রায় দেড় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ছোট রাস্তার দুপাশে হরেক রকমের পসরার অন্তত: কয়েক’শ স্টল দেওয়া হয়েছে। কি নেই এসব ষ্টলে। চাসহ বিভিন্ন খাবার, শিশুদের খেলনা, নারী-শিশুসহ সব বয়সিদের পোশাক, জুতা, স্যান্ডেল, প্রসাধনী সামগ্রি, কাঠের তৈরী ফার্নিচারসহ নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রি শোভা পাচ্ছে এসব ষ্টলে। ষ্টলের পাশে রয়েছে নাগোরদোলা, পুতুল নাচসহ ভিন্ন ভিন্ন বিনোদনের ব্যবস্থা। প্রতিদিন বিকেল তিনটা থেকে শুরু হয়ে গভীর রাত পর্যন্ত চলে এ মেলা। অন্যদিকে শ্রীহরি নদীর তিরে এ মেলা হওয়ায় প্রতিদিন ডুমুরিয়া উপজেলা থেকেও সাকো দিয়ে নদী পার হয়ে অনেক মানুষ মেলায় অংশ নিয়ে থাকেন। শুধু ডুমুরিয়া নয়, পার্শ্ববর্তী অভয়নগর, কেশবপুর, ফুলতলা উপজেলা থেকেও মানুষ আসে মেলায়।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) রাতে মেলায় প্রধান অতিথি ছিলেন যশোর-৫ (মণিরামপুর) আসনের ধানের শীষের প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাড. মুহাম্মদ শহীদ ইকবাল হোসেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে শহীদ ইকবাল হোসেন বলেন, শুধু ভবদহ এলাকায় নয় সমগ্র মণিরামপুরে হিন্দু-মুসলিম ভাই ভাই হয়ে একে অপরের সুখদুখে পাশে থেকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রিতি বজায় রেখেছে। আর এ ব্যাপারে বিএনপির পক্ষ থেকে বিশেষ ভূমিকা রাখা হয়েছে।
মেলা অয়োজক কমিটির সভাপতি স্থানীয় ইউপি সদস্য শংকর মন্ডল জানান, শতবছরের ঐতিহ্য গাউটে পূজা উপলক্ষে প্রতিবছর সপ্তাহব্যাপী এ মেলার আয়োজন করা হয়। সনাতন ধর্মের পাশাপাশি মুসলিমরাও এ মেলায় অংশ নেন। কমিটির সাধারণ সম্পাদক অমিত কুমার সরকার জানান, জলাবদ্ধতার সাথে নিরন্তর লড়াই করে ভবদহ এ জদপদের বাসিন্দাদেরকে বসবাস করতে হয়। এখানে হিন্দু-মুসলিমদের মধ্যে চমৎকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রয়েছে। ফলে হাজারো কষ্টের মধ্যে এ মেলা ভবদহবাসীকে একটু আনন্দ দেয়। স্থানীয় ঘের মালিক হরিচাঁদ মল্লিক জানান, এ মেলায় কোন প্রকার আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত হয়না। হিন্দু-মুসলিমদের মধ্যে চমৎকার সম্প্রীতি সম্পর্ক বজায় রয়েছে। মনোহরপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপির সভাপতি আকতার ফারুক মিন্টু জানান, প্রতিবছর এ মেলা এলাকার সব ধর্মের মানুষের মধ্যে আনন্দের বন্ধন তৈরী করে। প্রশাসনের পাশাপাশি বিএনপির পক্ষ থেকে স্বেচ্ছাশ্রমে এ মেলার নিরাপত্তা বিধান করা হচ্ছে। মণিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রজিউল্লাহ খান জানান, এখন পর্যন্ত মেলায় কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

Ad for sale 100 x 870 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
Ad for sale 225 x 270 Position (4)
Position (4)