Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)

❒কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

৯ লাখ টাকার পুরনো লোহা ১ লাখ ৫ হাজার টাকায় বিক্রি!

এখন সময়: শুক্রবার, ৪ জুলাই , ২০২৫, ০৯:০৩:০১ এম

আলমগীর কবীর, কোটচাঁদপুর: কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ হাসপাতালের ৯ লাখ টাকার পুরনো লোহা সাজানো অকশনের মাধ্যমে মাত্র ১ লাখ ৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন। স্থানীয় পুরনো লোহা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, গত ১০ মে ব্যবসায়ীদের কাছে অফিসিয়াল চিঠি, নোটিশ, মাইকিং কিংবা যথাযথ নিয়ম না মেনেই এ মালামাল বিক্রি করা হয়। গত ৮ জুন রাত ৮টার দিকে ক্রেতা এ মালামাল আলমসাধু ও ভ্যানযোগে হাসপাতাল থেকে নিয়ে যান। মালামাল রাতে নিয়ে যাওয়ার কারণে হাসপাতালের সামনের ব্যবসায়ীসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত এলাকাবাসীর মাঝে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে আলোচনা-সমালোচনার মাধ্যমে বিষয়টি শহরময় ছড়িয়ে পড়ে। এরপর সচেতন মহলের দু’একজন ঘটনা জানার জন্য হাসপাতালের অফিস সহকারী ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কাছে যান। কিন্তু তারা এ ব্যাপারে কোনো সদুত্তর দেননি। এ দিকে বুধবার রাতে নেয়া পুরনো মালামাল খাদ্য গুদাম সংলগ্ন জাকিরের লোহার দোকানে বিক্রির জন্য নিয়ে যায়। জাকিরের দোকানের ভিতর ও বাইরে মাল রাখার পর স্থান সংকুলান না হওয়ায় অবশিষ্ট মাল খাদ্য গুদামের সংরক্ষিত এলাকায় রাখা হয়। এ ব্যাপারে খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা নোমান খানের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, সব মাল রাখার জায়গা না হওয়ায় বুধবার রাত ৯ টার দিকে স্থানীয় ছোট ভাইদের জোর অনুরোধে শুধু রাতের জন্য এ মাল রাখার অনুমতি দিই। তবে পরদিন বৃহস্পতিবার সকালেই তারা তাদের মালামাল সরিয়ে নেয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলছে সকালে পুরনো মালামাল ওজন শেষে ১৬/১৭টি আলমসাধু বোঝাই করে সরিয়ে নেয়া হয়। এ মালামালের একটি অংশ পার্শ্ববর্তী খালিশপুর বাজার ও বাকিটা জীবননগরে পুরাতন লোহার দোকানে বিক্রি করা হয়।

জানা যায় বিক্রি করা পুরাতন মালামালের পরিমাণ ১৭ টন ২শ’ ৭০ কেজি। এর মধ্যে ১৬ টন লোহা কোটচাঁদপুরের বাইরে ও বাকী ১ টন ২শ’ ৭০ কেজি মাল স্থানীয় ব্রীজঘাট এলাকার ইমরানের দোকানে বিক্রি করা হয়। পুরাতন লোহা ব্যবসায়ী ইমরান জানান, ক্রয়কৃত মালামালের মধ্যে রয়েছে নি¤œমানের লোহা, প্লেনসীট, রোগীদের সাইট টুল, খাট, হিটার মেশিন, ট্রলি ও চেয়ার ইত্যাদি। তিনি এ মাল ৪৮ টাকা কেজি দরে মোট ৬০ হাজার ৯শ’ ৬০ টাকায় কিনেছেন। একটু উন্নত বাকী মাল ৫০ টাকা দাম বললেও আমাকে দেয়নি।

সূত্র বলছে, এ মাল ৫২ টাকা কেজি দরে জাকির নামে এক ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করা হয়। অবশ্য জাকির ৫৫ টাকা কেজি দরে ১৬ টন মাল বৃহস্পতিবার সকালে বিক্রি করে দেন। জাকির ও ইমরানের কাছে বিক্রি করা মালের মোট দাম ৮ লক্ষ ৯২ হাজার ৯শ’ ৬০ টাকা। অথচ স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ কাগজ কলমে ১ লক্ষ ৫ হাজার টাকায় ডাকে অংশ নেয়া  আরিফ নামে অব্যবসাদার এক যুবককে সর্বোচ্চ দরদাতা দেখিয়ে এ লোহা বিক্রি করেছেন। এতে সরকার মোটা অংকের অর্থ প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

প্রসঙ্গত কোটচাঁদপুরে ১শ’ শয্যা হাসপাতালের নির্মাণ কাজ চলছে। এর সাথে ৩টি ডক্টরস কোয়ার্টার বর্ধিতকরণ, ১টি নার্স, আরএমও কোয়ার্টার ও পুরনো ৫০ শয্যা হাসপাতালের সংস্কারের কাজও চলমান রয়েছে। এ সমস্ত ভবনের লোহার দরজা, জানালা, গ্রীল, ফ্যান, ওয়াটার হিটারসহ বিভিন্ন পুরাতন লোহার সামগ্রী ঠিকাদাররা পরিবর্তন করে হাসপাতালের ভিতরে রেখে দেন। যা কথিত অকশনের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়েছে।

কোটচাঁদপুর উপজেলা পুরাতন লোহা (ভাঙড়ি) ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম জানান, আমাদের সমিতির অধীনে ১৮টি দোকান রয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অকশনের ব্যাপারে আমাদের কোনো রকম অবহিত করেননি। যে কারণে কোনো ব্যবসায়ী এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। তবে যারা কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে এ পুরাতন মাল কিনেছেন তারা কেউই এ ব্যবসার সাথে জড়িত নন। এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আ: রশিদের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, সব রকম সরকারি নির্দেশনা মেনেই সর্বোচ্চ দরদাতার কাছে অকশনের মাধ্যমে এ মাল বিক্রি করা হয়েছে। তবে তিনি এ ব্যাপারে পত্রিকায় লেখালেখি না করার জন্য পরামর্শ দেন।

Ad for sale 100 x 870 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
Ad for sale 225 x 270 Position (4)
Position (4)