নানামুখী সংকটে ইবিতে কমছে বিদেশি শিক্ষার্থী

এখন সময়: শনিবার, ২০ এপ্রিল , ২০২৪, ০১:৫৯:৪২ পিএম

ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) দিনে দিনে কমছে বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা। পূর্বের শিক্ষাবর্ষগুলোতে গড়ে ১৪ জন করে শিক্ষার্থী ভর্তি হলেও নানামুখী সমস্যার কারণে সর্বশেষ ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হয়েছে মাত্র একজন বিদেশী শিক্ষার্থী। সেশনজট, অনুন্নত শিক্ষাব্যবস্থা, ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশে বিলম্বসহ নানা কারণে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ভর্তির আগ্রহ হারাচ্ছেন বিদেশী শিক্ষার্থীরা বলে অভিযোগ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স ডিভিশনের তথ্য মতে, গত ৫ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স, মাস্টার্স, এমফিল ও পিএইচডিতে মোট ৬০ জন বিদেশী শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। এর মধ্যে বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত আছে ২৬ শিক্ষার্থী। বাকি শিক্ষার্থীদের অনেকে লেখাপড়া শেষ করলেও করোনাকালে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় কিছু শিক্ষার্থী অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে গেছে। এছাড় কিছু শিক্ষার্থী অকৃতকার্যও হয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সর্বশেষ ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে বিদেশী শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে মাত্র একজন। এর আগে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে বিভিন্ন বিভাগে অনার্সে ১৩ ও মাস্টার্সে একজন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। এছাড়া ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে অনার্সে ৯ ও মাস্টার্সে তিনজন ও পিএইচডিতে চারজনসহ মোট ১৬ জন বিদেশী শিক্ষার্থী ভর্তি হয়।

২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষ থেকে ভর্তি শুরু হওয়ার পর ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত প্রতি বছর গড়ে প্রায় ১৪ জন বিদেশী শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে মাত্র একজন বিদেশী শিক্ষার্থী পায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।

বিদেশী শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা না থাকায় এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে বিদেশী শিক্ষার্থীরা। এছাড়া সম্প্রতি বিদেশী শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি বৃদ্ধি করা হয়েছে। তাছাড়া শিক্ষার্থীদের প্রতি সঠিক তদারকির অভাব রয়েছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিদেশী শিক্ষার্থী দৈনিক স্পন্দন কে জানান, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমাদের পর্যাপ্ত সুযোগসুবিধা প্রদান করা হয় না। স্কলারশিপ নিয়ে ভর্তি হলেও আমদেরকে সব ধরনের ফি গুণতে হচ্ছে। আগে আমরা ভালো সুযোগ-সুবিধা পেলেও এখন সেভাবে পাচ্ছি না। পূর্বে হল ফি ৫০ ডলার নেয়া হলেও এখন জোরপূর্বক ২০০ ডলার করে নেয়া হচ্ছে। আমাদের ভালোমন্দের দিকে কর্তৃপক্ষের কোনো নজর নেই।

এ ব্যাপারে বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আবু হেনা মোস্তফা জামাল বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটটি পূর্ণাঙ্গ নয়। এখান থেকে তথ্য পাওয়া কোনো বিদেশী শিক্ষার্থীর পক্ষে সম্ভব না। এছাড়া এখানে আবেদনের সুযোগ না থাকায় বিদেশী শিক্ষার্থীরা ওয়েবসাইটে আবেদন করতে পারছে না।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান দৈনিক স্পন্দন কে জানান, দীর্ঘ দুই বছরের বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতির কারণে মানুষের চলাফেরা সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ায় এমনটি ঘটেছে বলে আমি মনে করি। এছাড়া আর অন্য কারণ আছে বলে আমার জানা নেই।

 

বিদেশী শিক্ষার্থী ভর্তির ব্যাপারে প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ আছে কি না এ ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রো-ভিসি দৈনিক স্পন্দন কে বলেন, আমাদের উদ্যোগ চলমান রয়েছে। আমরা তো আর বলছি না তোমরা এসো না। বৈশ্বিক পরিস্থিতি ভিন্ন হওয়ায় হয়তো এমন হয়েছে। আগামী বছরগুলোতে দেখা যাক কি হয়। এরপর পরিবেশ-পরিস্থিতি অনুযায়ী আমরা পরবর্তীতে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেবো।