মিরাজুল কবীর টিটো : যশোর পৌর এলাকার অধিকাংশ রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। রাস্তা থেকে খোয়া পিচ উঠে গিয়ে অনেক ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় পৌরবাসীর চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। পৌরসভা কর্তৃপক্ষ বলছেন, রাস্তা সংস্কারের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
শহর ঘুরে দেখা গেছে, দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে শহরের অধিকাংশ রাস্তার বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। রাস্তাগুলো থেকে খোয়া পিচ উঠে গিয়ে ছোটবড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। চারদিনের বৃষ্টিতে রাস্তাগুলো আরো খারাপ অবস্থা হয়েছে। পৌরবাসীর চলাচলে দুর্ভোগ হলেও বাধ্য হয়ে রাস্তাগুলো দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। রাস্তা গুলো হচ্ছে এমএম কলেজের দক্ষিণ গেটের সামনের রাস্তা, বেজপাড়া তালতলা, আনসার ক্যাম্প, কবরস্থানপাড়া, চারখাম্বা থেকে কোল্ডস্টোর পর্যন্ত রাস্তা, আইটি পার্কের পূর্ব পাশের রাস্তা, পোস্ট অফিসপাড়ার রাস্তা, ঘোপ ধানপট্টি বউবাজারের রাস্তা, শংকরপুরের বিদ্যুৎ অফিসের পূর্বপাশের রাস্তা, আরএন রোড নতুন বাজারের রাস্তা ও জেলা প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের সামনের রাস্তা।
বেজপাড়ার তালতলার বাসিন্দা জিল্লুর রহমান ভিটু জানান, বেজপাড়া তালতলা মোড় রাস্তা দিয়ে টার্মিনাল পর্যন্ত এলাকাবাসী যাতায়াত করে। ২৬ বছরের বেশি সময় রাস্তাটি সংস্কার হয় না। সংস্কারের অভাবে রাস্তাটি চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সেই সাথে বেজপাড়া বিশ্বাসপাড়া, আনসার ক্যাম্প ও কবরস্থান পাড়ার রাস্তা চলাচলের অযোগ্য। পৌরপ্রশাসকের আগে যিনি মেয়র ছিলেন ওই সময় রাস্তা সংস্কারের দাবিতে তালতলাবাসী একাধিকবার পৌরসভা ঘেরাও করে। তখন মেয়র শুধু রাস্তা সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু সংস্কার করেননি। বর্তমান পৌর প্রশাসক কথা দিয়েছেন রাস্তা ও ড্রেন সংস্কার করা হবে। তা না হলে পৌরসভা ঘেরাও করা হবে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা সরকারি এমএম কলেজের দক্ষিণ গেটের সামনের রাস্তা। এ রাস্তাটি দিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা কলেজে আসেন। সেই সাথে এলাকাবাসী যাতায়াত করে। এ রাস্তাটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ২০ বছরের বেশি রাস্তাটি সংষ্কার করা হয়নি। রাস্তা পাশের ড্রেনের চেয়ে নিচু হওয়ায় পানি জমে থাকে। পানি জমে থাকার কারনে রাস্তা বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। খড়কী যাওয়ার প্রধান রাস্তা হওয়ায় এলাকাবাসীকে বাধ্য হয়ে রাস্তাটি দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। পৌরসভা থেকে এ রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু না করলেও ড্রেন নির্মাণ কাজ শুরু করেছে। এতে করে এলাকাবাসীর চলাচলের ক্ষেত্রে দুর্ভোগের শেষ নেই। এলাকাবাসি দাবী পৌরসভা থেকে দ্রুত ড্রেন নির্মাণ কাজ শেষ করে রাস্তার সংস্কার কাজ শুরু করুক।
এ এলাকার বাসিন্দা ও সরকারি এমএম কলেজের সহকারী অধ্যাপক হামিদুল হক বলেন, কলেজের দক্ষিন গেটের সামনের রাস্তা দিয়ে আমাদের দুর্ভোগের মধ্যে চলাচল করতে হচ্ছে। রাস্তা সংস্কারের বিষয়ে পৌরপ্রশাসকের কাছে গেলে তিনি জানান, রাস্তা টেন্ডারের নোটিশ হয়েছে। বৃষ্টি হওয়া বন্ধ হলে রাস্তার কাজ শুরু হবে। একাজ শেষ হবে ডিসেম্বরে। সেই আশায় বুক বেঁধে আছি।
ঘোপধানপট্টি বুউ বাজারের রাস্তাটি অনেক দিন সংস্কার করেনি পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। সংস্কারে অভাবে রাস্তার মাঝে ছোটবড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হলে রাস্তায় পানি জমে পথচারীদের চলাচলে দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়। এরাস্তা দিয়ে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকার মানুষ বাজার করতে আসে। অনেক মানুষ রাস্তাটি দিয়ে শহরে আসা যাওয়া করে। অথচ পৌরসভা থেকে রাস্তাটি সংস্কারের কোন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। এলাকাবাসী রাস্তা সংস্কারের দাবী জানিয়েছেন।
শহরের গুরুত্বপূর্ণ একটি রাস্তা চাঁচড়া বিদ্যুৎ কেন্দ্রে পূর্ব পাশের রাস্তা। রাস্তাটি বেজপাড়া থেকে টার্মিনাল পর্যন্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা। এ রাস্তাটি মাঝে এত বেশি গর্তের সৃষ্টি হয়েছে মানুষের পায়ে হেটে চলাচল করতে কষ্টকর হয়ে পড়ে। আর ছোটবড় যানবহানে কোন সুস্থ মানুষ চলাচল করলে অসুস্থ হয়ে পড়বে। পৌরসভার কাছে এলাকাবাসীর এ রাস্তাটি সংস্কার করা হোক।
এছাড়া শহরের চলাচলের অন্যতম ব্যস্ততম রাস্তা আরএন রোড নতুন বাজারের রাস্তা, জেলা প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের সামনের রাস্তা ও পোষ্ট অফিসপাড়ার রাস্তা। এসব রাস্তার মাঝে গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ব্যাপারে প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার রাশেদুল হক জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির জেলা প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের সামনের রাস্তা সংস্কারের বিষয়ে প্রস্তাব রাখেন। তারপরও রাস্তা সংস্কারে কোনো উদ্যোগ নেয়নি পৌরসভা।
এ ব্যাপারে পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মোরাদ আলী বলেন-রাস্তা সংস্কারের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। বৃষ্টি শেষ হলে সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।