Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)

তাদের হাতে হারিকেনই ধরিয়ে দিতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

এখন সময়: রবিবার, ১৩ জুলাই , ২০২৫, ০২:৫৪:৫৮ পিএম

 স্পন্দন ডেস্ক: সারাদেশে লোড শেডিং ও জ্বালানি খাতে অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে বিএনপি হারিকেন নিয়ে যে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে, তার সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাদের হাতে ‘হারিকেনই ধরিয়ে দিতে হবে’।

শোকের মাস উপলক্ষে সোমবার বাংলাদেশ কৃষক লীগ আয়োজিত ‘স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা দেখেছি আমাদের বিএনপি নেতারা হারিকেন নিয়ে আন্দোলন করছে। তাদের হাতে হারিকেনই ধরায়ে দিতে হবে। তাদের সবার হাতে হারিকেন ধরায়ে দেন।

“আর দেশের মানুষকে আমরা নিরাপত্তা দেব, দেশের মানুষ যাতে ভালো থাকে, সেদিকে আমরা ব্যবস্থা নেব। সেই কাজটাই আমরা করব, এটাই বাস্তব। কারণ জাতির পিতা আমাদের সেটা শিখিয়েছেন।”

মহামারীর অভিঘাত এবং রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে দেখা দেওয়া মন্দা প্রসঙ্গও আসে সরকারপ্রধানের বক্তব্যে।

তিনি বলেন, “শুধু বাংলাদেশ না, সমগ্র বিশ্ব, উন্নত দেশও; আজকে আমেরিকার মত জায়গায় যেখানে মূল্যস্ফীতি ১ শতাংশ ছিল, সেটা এখন ৯.১ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ইংল্যান্ডে ৯.৪ শতাংশ মূল্যস্ফীতি। জার্মানিতে ৮.৯ শতাংশ তাদের মূল্যস্ফীতি।”

“নেদারল্যান্ডসে, সেখানে ৯.৪ শতাংশ। পুরো ইউরোপে ৮.৯ শতাংশ তাদের মূল্যস্ফীতি হার। বাংলাদেশে এখনও আমরা ৭.৫ শতাংশে আমাদের মূল্যস্ফীতি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছি। যেখানে উন্নত দেশগুলো হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে আমরা আমাদের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।”

দলীয় নেতাকর্মীদের দেশবাসীর কাছে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “তাদের (দেশবাসী) আহ্বান জানাতে হবে যে সারা বিশ্বব্যাপী যেখানে খাদ্য মন্দা, আমাদের খাদ্য আমাদের নিজেদের উৎপাদন করতে হবে।”

জনশুমারির প্রাথমিক ফলাফলে দেশের জনসংখ্যার তথ্য নিয়ে যারা সংশয় প্রকাশ করছেন, তাদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, “আমি তাদেরকে জিজ্ঞেস করব, তাদের হিসাবটা পছন্দ হয় না কেন? তাহলে নিজেরাই সন্তান পয়দা দিতে থাকুক, আর জনসংখ্যা বাড়াতে থাকুক। যাদের পছন্দ হয় না, তারা সেটা করুক। আমরা খাবার দেব, কোনো আপত্তি নেই।”

১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পরের ঘটনাপ্রবাহ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “(জিয়াউর রহমানকে) সেনাপ্রধান বানিয়েছিল খন্দকার মোশতাক, যেই মোশতাক ছিল ষড়যন্ত্রকারী। তারই দোসর ছিল জিয়াউর রহমান, এটা প্রমাণিত এই কারণে যে মোশতাকের সাথে জিয়া ছিল বলেই তো জিয়াকে সেনাপ্রধান করা হল। এবং মোশতাকই সেটা করল।”

বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বাঁচাতে খন্দকার মোশতাক ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেন, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্সটা আইনে পরিণত করে জাতির পিতার হত্যাকারীদের বিচারের হাত থেকে রেহাই দিয়ে তাদেরকে মুক্ত করে পুরস্কৃত করেছিল। যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষমতায় বসিয়েছিল।

“অর্থাৎ যে আদর্শ নিয়ে, যে লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছিল, সেই আদর্শ-লক্ষ্য থেকে বাংলাদেশ সম্পূর্ণভাবে বিচ্যুত হয়ে গেল। ভোট নিয়ে খেলা, মানুষের ভোটের যে অধিকার সেটা নিয়ে ছিনিমিনি খেলা, মানুষের খাদ্য অধিকার কেড়ে নেওয়া, যে দেশকে জাতির পিতা সম্পূর্ণ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার পদক্ষেপ নিয়েছিল, আবার সেই দেশ পিছিয়ে গেল।”

যে বাঙালির জন্য বঙ্গবন্ধু আজীবন সংগ্রাম করেছেন, সেই বাঙালির হাতেই নির্মমভাবে তাকে সপরিবারে যে প্রাণ দিতে হয়েছিল, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে তার মেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “কী দুর্ভাগ্য আমাদের, যাদেরকে একটা মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করলেন, যাদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য নিজের জীবনটাকে উৎসর্গ করলেন, আমরা সন্তান হিসেবে স্নেহ বঞ্চিত হলাম, আমার মা সারাটা জীবন যে ত্যাগ স্বীকার করলেন; আর সেই বাঙালিদের হাতেই আমার বাবাকে জীবন দিতে হলো, মাকে জীবন দিতে হলো, ভাইদেরকে জীবন দিতে হল।

“এই প্রশ্নের উত্তর কখনও খুঁজে পাই না যে- এত বড় বেইমানি, এত বড় মুনাফেকি কীভাবে করে!”

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার আগে হওয়া ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে বলেন,“নগদ টাকা দিয়ে কেনা খাদ্যের জাহাজ আমেরিকা বাংলাদেশে পৌছাতে দিল না। যেখানে সম্পূর্ণভাবে হিসেব করা ছিল যে খাদ্য নিয়ে জাহাজ আসবে।”

উত্তরবঙ্গে প্রায় সময় হওয়া দুর্ভিক্ষের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন,“৭৪ এর দুর্ভিক্ষে যতটা না হয়েছে, তার চেয়ে অনেক বেশি অপপ্রচার হয়েছে। বাসন্তী নামের একটি মেয়ে, আসলে মানসিকভাবে সে সুস্থ ছিল না। তাকে একটি জাল পরিয়ে ছবি তুলে সারা বিশ্বে প্রচার করা হল।

“অথচ সেই সময়ে একটা কাপড়ের দামৃ ১০/১২ টাকায় একটা শাড়ি পাওয়া যায়। একটা মাছ ধরার জালের দাম দেড়শ টাকার নিচে ছিল না।”

ছয় বছর নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে দেশে ফেরার পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে দেখার অংশ হিসেবে বাসন্তীদের বাড়িতেও গিয়েছিলেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন,“আমি সেই কুড়িগ্রামের চিলমারীতে তিন মাইল কাদা পানি বেয়ে মেঠো পথে হেঁটে সেই বাসন্তীর বাড়ি গিয়েছিলাম। দেখেছিলাম বাসন্তির সেই ছিন্ন কাপড়। তার মা অসুস্থ পড়ে আছে, কোনোমতে একটা চালার নিচে। সেটা ঠিক ঘরও বলা যায় না। মাছি ভন ভন করছে। এই অবস্থায় রয়েছে তার মা।

“আমি শুধু বলেছিলাম, আমার বাবার রক্ত নিয়ে তো বাসন্তীদের ভাগ্য পরিবর্তন হয়নি। তাহলে কেন হত্যা করা হল। এত বছর মানুষের শোষণ বঞ্চনার শিকারই তারা থাকল। তাহলে যে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমাদেরকে চোর বানাল, ডাকাত বানাল, এত কিছু করলৃ। তাহলে দেশের মানুষ কী পেল?”

ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে এ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, মো. আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, দপ্তর সম্পদক বিপ্লব বড়ুয়া, কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ, সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতি উপস্থিত ছিলেন।

Ad for sale 100 x 870 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
Ad for sale 225 x 270 Position (4)
Position (4)