Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)

সাফ ফুটবল : সাথী ও ইতির সাফল্যে গর্বিত মাগুরা

এখন সময়: শুক্রবার, ৪ জুলাই , ২০২৫, ০৯:১৮:০৮ এম

শাহীন আলম তুহিন, মাগুরা : সাফ ফুটবলে বাংলাদেশের মেয়েরা জয়ী হয়েছে। তাদের এ খুশিতে আজ সারাদেশ ভাসছে আনন্দের বন্যায়। বাংলাদেশের এ নারী ফুটবলে অংশ নিয়েছে মাগুরার ইতি রাণী ও সাথী বিশ্বাস। অতিরিক্ত গোলরক্ষক হিসেবে বাংলাদেশ দলে ইতি ও সাথী বিশ্বাস নাম লিখিয়েছিল। অসাধারণ  ফুটবল নৈপূণ্য প্রদর্শন করে বাংলাদেশ দল ৩-১ গোলের ব্যবধানে নেপালকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয়। তাদের এ সাফল্যে মাগুরা শ্রীপুর উপজেলার গোয়ালদহের সাথী ও ইতি পরিবারে চলছে আনন্দের বন্যা। বুধবার দেশে ফিরেছে তারা। 

চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল নারী সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য সাথী বিশ্বাস। কিন্তু জাতীয় দলের হয়ে সাফ ফুটবলে তার খুব প্রয়োজন ছিল। পরীক্ষা দেবে নাকি খেলায় অংশ নেবে? এমন সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিল তখন মা বাবা দুজনই। কিন্তু শেষে সাড়া দেন তারা খেলার জন্য। মেয়েকে তারা বোঝান, পরীক্ষা তুমি পরেও দিতে পারবে কিন্ত দেশের জন্য খেলাটায় তোমার জন্য বড় বিষয়।

মেয়ের এমন সাফল্যে সাথীর বাবা বিদ্যুৎ বিশ্বাস জয়ের পর রাতে আর  ঘুমাতে পারেননি। তিনি পেশায় একজন ছবি তোলার কারিগর। স্থানীয় বাজারে ছোট একটি কম্পিউটারের দোকান রযেছে তার। মেয়ে দেশের বাইরে যাবার পর পরই পরিবারের পক্ষ থেকে তার দলের জন্য আশীর্বাদ করা হয়েছে। যেন সাফল্যের সাথে খেলে চ্যাম্পিয়ন হতে পারে। 

তিনি আরো জানান, আমার মেয়ে বিকেএসপি ভর্তি হয় ক্লাস সিক্সে। এরপর সেখানে পড়ালেখা।বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে (বাফুফে) অন্তর্ভুক্ত হয় তিন বছর আগে। তবে বাফুফেতে যোগ দেয়ার পর জাতীয় দলে খেলা শুরু করে সাথী। এতে কিছু আর্থিক সাপোর্ট পরিবারকে সে দিতে পেরেছে। যা আমরা ভাবতেও পারিনি। কারণ সামান্য আয়ের উপর সংসার। তার উপরে মেয়ে যদি ঢাকায় পড়ালেখা করে তবে খরচ তো একটু বেশি হবেই। তবে আমরা চেয়েছি ও ভাল কিছু করুক। ভাল খেলোয়াড় হয়ে সমাজে পিছিয়ে পড়া মেয়েদের এগিয়ে নিক। আজ ওরা জিতে সেই স্বপ্ন পূরণ করেছে দেশের।

সাথী বিশ্বাসের মা সুদেবী বিশ্বাস বলেন, ‘ওরা যে সাফ গেমসে জিতে যাবে তার জন্য আমি সৃষ্টিকর্তাকে বার বার ডেকেছি। কারণ ওর এবার এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার কথা ছিল। একটানা এতবছর পড়ে পরীক্ষা দেয়াটা তো সৌভাগ্যের। কিন্তু যখন ফোন করে একদিন বলল সাফ গেমসে তার নাম দলে রাখতে চাইছে স্যারেরা। তখন মেয়ে কি করবে বুঝে উঠতে পারছিল না। ওর বাবার সাথে কথা বললাম। দুজনই সিদ্ধান্ত নিলাম ‘মেয়ে খেলায় অংশ নিক’। দেশের জন্য তাকে দলে নিয়ে যদি ভাল কিছু হয় তবে তাই হোক।

সুদেবী বিশ্বাস আরও জানান, বাংলদেশ জিতার পর পরিবারের মধ্যে আনন্দ মধ্যে আনন্দের বন্যা বইছে। শুধু আমাদের পরিবারের মধ্যেই সারা গ্রামবাসী আজ আনন্দের জোয়ারে ভাসছে।

বাংলাদেশ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ সোমবার রাতে শিরোপা জেতার পর বিজয়ী দলে অতিরিক্ত গোলরক্ষক হিসাবে ছিলেন সাথী আক্তারের নাম। খেলা শুরু হবার আগে বাংলাদেশ স্কোয়াডে দেখতে পান তার মা বাব্।া ফাইনালে তাকে মাঠে খেলতে না দেখলেও অতিরিক্ত খেলোয়ার হিসাবে মাঠেই ছিলেন তিনি।

অপরদিকে, ইতি পরিবারে চলছে আনন্দের বন্যা। বাংলাদেশ নারী দলের এ সাফল্যে তাদের পরিবার ও গ্রামবাসীরা করছে আনন্দের উচ্ছ্বাস। 

ইতির বাবা মনোজিত কুমার জানান, মেয়ের সাফল্যে আমি খুবই খুশি। আমার মেয়ে অতিরিক্ত খেলোয়াড় হিসেবে দলে স্থান পেয়েছে এতেই আমি গর্বিত। সে আজ খেলেনি ত কি হয়েছে, আগামীতে খেলবে। আমি চাই আমার মেয়ে আগামীতে দেশের মুখ উজ্জল করুক।

মেয়ের এ সাফল্যে ইতির মা উন্নতি রানী বলেন, আমার মেয়ে দেশের মুখ উজ্জল করেছে। আমরা দেশে থেকে তার জন্য বরাবরই আর্শীবাদ করেছে যেন সাফল্য অর্জন করতে পারে। তারা দেশে ফিরে এসেছে। বাড়িতে আসলে তার মুখখানা দেখলে আমার মনটা ভরে যাবে। মেয়ের এ সাফল্যে আজ আমাদের শুধু পরিবারই নয় , আমার গ্রামবাসীরাও গর্বিত। 

Ad for sale 100 x 870 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
Ad for sale 225 x 270 Position (4)
Position (4)