দেশের প্রথম ছয় লেনের সেতু পরিদর্শন

তত্ত্বাবধায়ক সরকার এখন মিউজিয়ামে : সেতুমন্ত্রী

এখন সময়: শনিবার, ২০ এপ্রিল , ২০২৪, ০৫:০৩:১৪ পিএম

ফরহাদ খান, নড়াইল: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি বলেছেন, বিএনপি প্রতিদিনই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দিবাস্বপ্ন দেখছে, কিন্তু আদালতের রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার এখন মিউজিয়ামে চলে গেছে। আমাদের কিছু করার নেই। এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে আগামী সংসদ নির্বাচন নিরপেক্ষ ভাবে অনুষ্ঠিত হবে। এটা বারবার বলার পরও তারা (বিএনপি) পানি ঘোলা করছে।  

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে নড়াইল-গোপালগঞ্জ সীমান্তবর্তী কালনা এলাকায় নির্মিত দেশের প্রথম ছয় লেনের সেতু পরিদর্শনে এসে তিনি এসব কথা বলেন।

সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, আমরা মিয়ানমারের উসকানির ব্যাপারে সংযমী আচরণ করছি। পরিষ্কার কথা, আমরা কারো সঙ্গে যুদ্ধ করব না। আমরা প্রথম আক্রমণকারী হতে চাই না। ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ বিশ^ অর্থনীতিকে বিধ্বস্ত করে তুলেছে। আরেকটি যুদ্ধ আমরা করতে চাই না।

 

এদিকে কালনা সেতু চালুর ব্যাপারে মন্ত্রী বলেন, অক্টোবরে উদ্বোধন হবে কালনা পয়েন্টে নির্মাণাধীন সেতুটি। নড়াইলবাসীর জন্য এ সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেতুটি উদ্বোধনের তারিখ প্রধানমন্ত্রী নির্ধারণ করবেন। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর কালনা সেতু ছিল মিছিংলিংক। এ সেতু চালু হলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে কানেক্ট করবে। আর সেতুটির নামকরণ হবে মধুমতি সেতু। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন নড়াইল ২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মতর্ুুজা, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর খুলনা অঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আসলাম আলী, গোপালগঞ্জ অঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সুরুজ মিয়া, কালনা সেতুর প্রকল্প পরিচালক শ্যামল কুমার ভট্টাচার্য, প্রকল্প ব্যবস্থাপক আশরাফুজ্জামান, নড়াইলের পুলিশ সুপার সাদিরা খাতুন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ফকরুল হাসান, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, লোহাগড়া উপজেলা আ’লীগের সভাপতি মুন্সী আলাউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক লোহাগড়া পৌর মেয়র সৈয়দ মসিয়ূর রহমানসহ অনেকে। 

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইম্প্রুভমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে কালনা সেতু নির্মিত হয়েছে। কালনা সেতু চালু হলে গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, নড়াইল, যশোর, বেনাপোল, সাতক্ষীরাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলার কোটি কোটি মানুষ উপকৃত হবেন।

কালনা সেতুর প্রকল্প ব্যবস্থাপক এবং সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুজ্জামান বলেন, কালনা দেশের প্রথম ছয় লেনের সেতু। নেলসন লোস আর্চ টাইপের (ধনুকের মতো বাঁকা) সেতু এটি। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৬৯০ মিটার এবং প্রস্থ ২৭ দশমিক ১ মিটার। উভয় পাশে ছয় লেনের সংযোগ সড়ক প্রায় সাড়ে ৪ কিলোমিটার। সেতু নির্মাণে মোট ব্যয় প্রায় ৯৬০ কোটি টাকা। এশিয়ান হাইওয়ের ওপর অবস্থিত এটি। সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে সিলেটের তামাবিল হয়ে ঢাকা, ভাঙ্গা, নড়াইল, যশোর, বেনাপোল, কোলকাতা পর্যন্ত সরাসরি ভূমিকা রাখবে। তবে এতোদিন কালনা পয়েন্টে মধুমতি নদী ধারা বিছিন্ন ছিল। সেতু নির্মাণের ফলে সেই বিছিন্নতা আর রইল না। কালনা সেতু চালু হলে শুধু জাতীয় ক্ষেত্রেই নয়, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে। ভারত, কোলকাতা, আসামসহ দেশের মধ্যে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর, বেনাপোল ও নোয়াপাড়া নদীবন্দরের মধ্যে যোগাযোগের মাইলফলক রচিত হবে। নড়াইলের লোহাগড়ায় ইপিজেড (রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল) চালুসহ ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

কালনাঘাটে স্থাপিত নামফলক থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘কালনা সেতু’র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। কালনাঘাট থেকে ঢাকার দুরত্ব মাত্র ১০৮ কিলোমিটার। ফলে ঢাকার সঙ্গে নড়াইল, বেনাপোল, যশোর, খুলনাসহ আশপাশের সড়ক যোগাযোগ কোথাও ১০০ কিলোমিটার, কোথাও আবার ২০০ কিলোমিটার কমে যাবে।