৩৮ দিন পর কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন

বাবাকে হত্যার অভিযোগে মায়ের বিরুদ্ধে ছেলের মামলা

এখন সময়: বুধবার, ২৪ এপ্রিল , ২০২৪, ১০:৪২:৩৬ এম

সুব্রত সরকার, মহম্মদপুর (মাগুরা) : মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার বড়রিয়া গ্রামের আবু বক্কার শেখ (৫৫) নামের এক ব্যক্তির মরদেহ মৃত্যুর ৩৮ দিন পর কবর খুঁড়ে তোলা হয়েছে। হত্যার অভিযোগে মামলা হওয়ায় আদালতের নির্দেশে মরদেহটি কবর খুঁড়ে তোলা হয়। ওই ব্যক্তির বড় ছেলে সিজান মাহমুদ সাগর তার মা ও মামাসহ ৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন। এরপর বুধবার সকালে কবর থেকে মরদেহ তুলে মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

এ সময় সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাসুদেব কুমার মালো, সংশ্লিষ্ট কাজে কর্তব্যরত পুলিশ, চিকিৎসক ও কবর থেকে মরদেহ তোলার কাজে নিয়োজিত ডোমরা উপস্থিত ছিলেন। কবর খুড়ে মরদেহ উত্তোলনের খবর ছড়িয়ে পড়লে ধোয়াইল গোরস্থানে উৎসুক জনতার ভিড় জমে।

মামলায় বলা হয়েছে, গত ২ অক্টোবর ভোরে মারা যান আবু বক্কার শেখ। তিনি দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছর সৌদি আরবে থেকে ব্যবসা করতেন। এ কারণে এলাকায় তিনি ‘ধনী বক্কার’ নামে পরিচিত। তিনি সৌদিতে থাকার সুযোগে তার স্ত্রী স্থানীয় রকিবুল ইসলাম হিরক নামে একজনের সাথে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। বহুবার তাকে অনৈতিক পথ থেকে ফিরে আসার কথা বললেও তিনি তা শোনেন নি। একমাস আগে তার স্ত্রী প্রেমিকের সাথে নিরুদ্দেশ হন। এক সপ্তাহ্ পর বাড়িতে ফিরে আসলে স্বামীসহ কয়েকজন তার নিরুদ্দেশ হওয়ার কারণ জানতে চাইলে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং বেশি বাড়াবাড়ি করলে স্বামীকে খুন করার হুমকি দেয়। ঘটনার একদিন আগে মামলার বাদীর আপন মামা মাছুদুর রহমানের বাড়িতে আসামিরা বসে আবু বক্কার শেখকে হত্যার পরিকল্পনা করে। সেই পরিকল্পনা মোতাবেক ঘটনার দিন গত ২ অক্টোবর ভোর রাতে আবু বক্কারকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করার পর বালিশ চাপা দিয়ে শ^াসরোধে হত্যা করা হয়। এরপর আসামিরা তড়িঘড়ি করে বক্কার শেখের মরদেহ দাফন করে।

মামলার বাদী সিজান মাহমুদ সাগর জানান, বাবার লাশ দাফনের পর বিশ^স্ত কয়েকজনের কাছে পিতার মারা যাওয়ার রহস্য জানতে পারেন। বক্কার শেখ মারা যাওয়ার ১০ দিন পর গত মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) তিনি মাগুরা আদালতে মামলা দায়ের করেন।

 এ মামলায়  মায়ের প্রেমিক রকিবুল ইসলাম হিরককে প্রধান আসামি করা হয়েয়ে।  ২ নম্বর আসামী করা হয়েছে তার মা সীমা পারভীনকে। ৫ নম্বর আসামি করা হয়েছে তার আপন মামা মাছুদুর রহমানকে। এই মামলায় মোট ৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাত রয়েছে আরও ৪/৫ জন। মৃতের লাশ উত্তোলন করে ময়না তদন্তের কথাও বলা হয়েছে মামলায়।

গত বুধবার (১২ অক্টোবর) জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ হাবীবুর রহমান মামলার আবেদনটিকে এফআইআর (ফার্স্ট ইনফরমেশন রিপোর্ট) হিসেবে গণ্য করে পুলিশ রিপোর্ট দাখিলের জন্য মহম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জকে (ওসি) নির্দেশ দেন।  মামলার খবর পেয়ে আসামীরা আত্মগোপন করেন।

 

মহম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অসিত কুমার রায় বলেন, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী কবর খুড়ে মরদেহ উত্তোলন করে মর্গে পাঠানো হয়েছে।