অধিকাংশে নির্বাপক ব্যবস্থা নেই

অগ্নি ঝুঁকিতে যশোর শিক্ষাবোর্ডসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান !

এখন সময়: শনিবার, ২০ এপ্রিল , ২০২৪, ০২:০২:০১ এম

মিরাজুল কবীর টিটো: যশোর শিক্ষা বোর্ডসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে অগ্নি ঝুঁকিতে। এসব প্রতিষ্ঠানে অগ্নিনির্বাপক গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবস্থা নেই। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট বা অন্য কোন কারনে অগ্নিকান্ড ঘটলে তা থেকে জীবন ও জানমাল রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে।

অগ্নিনির্বাপকের জন্য গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবস্থা অফিসে আছে কি-না সে বিষয়ে জানেন না বোর্ডের সচিব ও নিরাপত্তা অফিসার।

ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ জানায়, বিভিন্ন সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে অগ্নিনির্বাপক গ্যাস সিলিন্ডার রাখার আইন থাকলেও সেটা বাস্তবায়ন করা হয় না।

১৯৬৩ সালে যশোর শিক্ষা বোর্ড স্থাপিত হয়। প্রতিষ্ঠাকালীন থেকে এ পর্যন্ত ৬০ বছরের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার জরুরি কাগজপত্র সংরক্ষণ করা আছে। রেকর্ড রুমে এসব কাগজপত্র বই আকারে সংরক্ষণ করা হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের বিভিন্ন ডকুমেন্ট রয়েছে। যা একবার নষ্ট হয়ে গেলে পাওয়া যাবে না। শিক্ষাবোর্ডের সাততলা ও প্রতিষ্ঠাকালীন তিনতলা ভবনে প্রায় ১শ’র বেশি বিভাগ রয়েছে। অনেক কক্ষে রয়েছে পুরাতন বৈদ্যুতিক লাইন। যশোর শিক্ষা বোর্ড দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্বেও এখানে অগ্নিনির্বাপকের কোন ব্যবস্থা নেই। নেই কোন গ্যাস সিলিন্ডার।

অফিসের স্টোরকিপারের দায়িত্বরত এক কর্মচারী জানান, এর আগে অগ্নিনির্বাপক গ্যাস সিলিন্ডার ছিল। সেগুলোর মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারনে টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। তারপর থেকে আর নেই।

বোর্ডের নিরাপত্তা অফিসার আনিছুর রহমান এ বিষয়ে তিনি জানেন না বলে জানান। তিনি চেয়ারম্যান ও সচিব স্যারের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। 

এ বিষয়ে বোর্ডের সচিব প্রফেসর আব্দুল খালেক সরকার বলেন, ‘অগ্নিনির্বাপক গ্যাস সিলিন্ডারের বিষয়ে আমি জানিনা। নিরাপত্তা অফিসার এ বিষয়ে আমার সাথে কথা বলতে এসেছিলেন। আমি তাকে বলেছি অগ্নিনির্বাপক গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করতে।’

একই অবস্থা যশোরের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেখানেও তাৎক্ষনিক আগুন নেভানোর অগ্নিনির্বাপক গ্যাস সিলিন্ডার নেই।

যশোর আব্দুর রাজ্জাক কলেজের অধ্যক্ষ জেএম ইকবাল হোসেন, যশোর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক আহসান হাবীব পারভেজ, নিউটাউন বাদশাহ ফয়সল ইসলামী ইন্সটিটিউটের প্রধান শিক্ষক এসএম রবিউল আলম, ঘোপের এনএম খান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফরোজা সুলতানা, উপশহর শহীদ স্মরণী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহাজাদ হোসেন বাবু জানান তাদের প্রতিষ্ঠানে অগ্নিনির্বাপক গ্যাস সিলিন্ডার নেই।

যশোর ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আজিজুল হক জানান, বর্তমানে বেশি অগ্নিকান্ড ঘটে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটের কারনে। এজন্য প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে অগ্নিনির্বাপক গ্যাস সিলিন্ডার রাখা প্রয়োজন।

তিনি জানান, ‘এ বিষয়ে আইন আছে, কিন্তু বাস্তবায়ন নেই। আমরা যখন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এবিষয়ে প্রচারণামূলক অনুষ্ঠান করি ওই সময় অগ্নিনির্বাপক গ্যাস সিলিন্ডার রাখার বিষয়ে বলা হয়।’

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুস সালামও স্বীকার করেন কোন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অগ্নিনির্বাপণ গ্যাস সিলিন্ডার নেই। এটা রাখার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

জেলা শিক্ষা অফিসার একেএম গোলাম আযম বলেন, এ বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিনির্বাপক গ্যাস সিলিন্ডার রাখলে ভাল হয়। অগ্নিকান্ড থেকে জানমাল রক্ষা করা যাবে।