যশোরে ৬৪৯ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ, ফলনে খুশি চাষিরা

এখন সময়: শনিবার, ২০ এপ্রিল , ২০২৪, ০৪:০৭:৫৫ এম

 

মারুফ কবীর: বৈশাখের প্রখর রোদে সবুজ পাতা ভেদ করে লালচে আভা ছড়াচ্ছে সুমিষ্ট ফল লিচু। পুষ্ট হয়ে ওঠা লিচুর থোকার ভারে নুয়ে পড়েছে গাছের ডালপালা। যশোরের বিস্তীর্ণ লিচুর বাগানে এমন দৃশ্য জানান দিচ্ছে লিচুর বাম্পার ফলনের। চলতি মৌসুমে যশোরের ৮ উপজেলায় ৬৪৯ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ হয়েছে। যশোরের হাটে বাজারে এখানকার চাষিদের আবাদ করা লিচু বিক্রি শুরু হয়েছে। লিচুর বেশ ভালো দাম পাচ্ছেন চাষি ও বাগান মালিকরা।

দেশি লিচু, চায়না-৩, বোম্বাই, বারি, বারি-৪,মোজাফফর, ঈশ^রদী, বেদানা, এলাচসহ বিভিন্ন জাতের লিচু চাষ হয় যশোরে। শহরের মণিহার এলাকা ও বসুন্দিয়ায় প্রতিদিন লিচুর হাট বসে। এসব হাটে প্রতিদিন কোটি টাকার লিচু বেচাকেনা হয়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রমতে, যশোরের ৮ উপজেলায় মধ্যে সবচেয়ে বেশি লিচু চাষ হয় সদর ও বাঘারপাড়া উপজেলায়। পরিবহন ও বাজার ব্যবস্থাপনা ভালো হওয়ায় দিন দিন এ জেলায় লিচু চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এবছর ঝড়-বৃষ্টি কম থাকায়  লিচুর ভালো ফলন হয়েছে। যশোর সদরে সবচেয়ে বেশী ২৬৪ হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ হয়েছে। এছাড়া বাঘারপাড়া উপজেলায় ১২৫ হেক্টর, চৌগাছা উপজেলায় ৮৬ হেক্টর, শার্শা উপজেলায় ৬০ হেক্টর, মণিরামপুর উপজেলায় ৪৬ হেক্টর, অভয়নগর উপজেলায় ২৫ হেক্টর,ঝিকরগাছা উপজেলায় ২৪ হেক্টর ও কেশবপুর উপজেলায় ২০ হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ হয়েছে।

এর মধ্যে  মোজাফ্ফর লিচু ২৪৬ হেক্টর, চায়না-৩ ১৬০ হেক্টর, বোম্বাই ১৫৮ হেক্টর,রাবি-৩ ৪০ হেক্টর , রাবি-৪ ৩১ হেক্টর  এবং ঈশ^রদী ও স্থানীয় জাতের লিচু ৭ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে।

যশোর সদর উপজেলার ডাকাতিয়া গ্রামের লিচু বাগানি বজলুর রশিদ জানান, এ বছর ঝড়-বৃষ্টি তেমন না থাকায় লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। এক একটি গাছ থেকে ২ থেকে ৩ হাজার পিস লিচু পাওয়া যাচ্ছে।  চলতি মৌসুমে ২ লাখ টাকা দিয়ে একটি বাগান লিজ নিয়েছি। বাগানে দেশি, চায়না ও চায়না-থ্রি লিচুর ফলন ভালো হয়েছে। ভালো ফলন পেতে নিয়মিত গাছের পরিচর্যা করেছি।

মতলেব মোল্লা নামে এক বাগান মালিক বলেন, লিচু  চাষিদের জন্য কোনো প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে না কৃষি বিভাগ। নিজেদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েই চাষ করতে হয়। এদিকে, যশোর শহরের  মোড়ে মোড়ে পাওয়া যাচ্ছে লিচু। প্রকারভেদে খুচরা বাজারে একশ লিচু বিক্রি হচ্ছে ৩শ থেকে ৭শ টাকা পর্যন্ত। যশোরের মণিহার এলাকার জমে উঠেছে লিচুর হাট। প্রতিদিন কোটি টাকার বেশি বেচাকেনা হচ্ছে। এখান থেকে লিচু  বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করছেন ব্যবসায়ীরা। ভালো দাম পেয়ে বাগান মালিকরাও খুশি। এবছর পাইকার বাজারে ১২শ থেকে ৩ হাজার টাকা প্রতি হাজার লিচু বিক্রি হচ্ছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মঞ্জুরুল হক বলেন, আবহাওয়া ভালো থাকায় এবার লিচুর ফলন ভালো হয়েছে। লিচুর স্বাদ ও মান রক্ষায় চাষিদের সবরকম সহায়তা করা হচ্ছে।