বাঘারপাড়া (পৌর) প্রতিনিধি : যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলায় এক রাতে কয়েকশ’ কৃষকের ধান ইটভাটার আগুনযুক্ত ছাইয়ে পুড়ে গেছে। রোববার রাতে ফাইভ স্টার ইটভাটা থেকে ছড়িয়ে পড়া ছাইয়ের আগুনে প্রায় ২শ’ বিঘা জমির আমন ধান পুড়ে যায়। সোমবার সকালে ক্ষুব্ধ কৃষকরা জড়ো হয়ে ইটভাটা ঘেরাও করেন। এ ছাড়া ইটভাটা মালিকের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ের দাবিতে এদিন ১৫০ জন কৃষক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কৃষি অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন।
জানা গেছে, দ্রæত সময়ের মধ্যে ভাটা থেকে ইট পেতে ভাটা কর্তৃপক্ষ ‘ফাজার’ মুখ খুলে দেয়। এতে সারা রাত ভাটার আগুনযুক্ত ছাই আশপাশের ধান ক্ষেতে ছড়িয়ে পড়ে। এতে দোহাকুলা গ্রামে ২০০ বিঘার ধান পুড়ে যায়।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার দোহাকুলা গ্রামে মনপিরিত মাঠে ফসলি জমিতে কড়ইতলা গ্রামের শাহীন হোসেনের ‘ফাইভ স্টার ব্রিকস’ নামের একটি ইটভাটা আছে। দ্রæত ইট পোড়ানো শেষ করতে ইট ভাটার ‘ফাজার’ মুখ খুলে দেয়া হয়। এতে রাতে ভাটার আগুন ৩০ থেকে ৪০ হাত উপরে উঠে যায়। এ সময় ভাটার উত্তর ও উত্তরপশ্চিম পাশের কমপক্ষে ২শ’ বিঘা জমির আমন ধানের পাতাসহ গাছ পুড়ে যায়। এমাঠে কৃষক ইকবালের ৬ বিঘা, আমিনুল ইসলামের ২ বিঘা, আসলামের ২ বিঘা, মিজানুরের ২ বিঘা, সোহেলের ১ বিঘা, বাদশার ২ বিঘাসহ কমপক্ষে ১৫০ কৃষকের আমন ধানের ক্ষতি হয়েছে। মাঠের বেশির ভাগ জমিতে গুটিস্বর্ণা ও হাবু ধানের চাষ করেছেন কৃষকেরা।
দোহকুলা গ্রামের পূর্বপাড়ার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক বাদশা মিয়া জানান, মাঠে তার ২বিঘা জমি আছে। সেখানে কিছু অংশে হাবু ও কিছু অংশে গুটিস্বর্ণা চাষ করেছিলেন। সকালে গিয়ে দেখেন মাঠের সব ধান পুড়ে গেছে। ফসলের শেষ সময়ে এসে শাহিনের ভাটার আগুনে সব শেষ হয়ে গেলো। তাপ যতদূর গেছে সবই পুড়ে গেছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সায়েদা নাসরিন জাহান অভিযোগ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে বলেন, আমি সরেজমিন ধানের মাঠ পরিদর্শন করেছি। পোড়া ধানে আর ফলন পাওয়া হবে না। হাবু ধানের যেগুলোর শিষ পুড়ে গেছে সেগুলো আর ‘রিকভার’ হবে না। তিনি আরও বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করে প্রণোদনার আওতায় আনা যায় কি না সেটি নিয়ে ইউএনও’র সাথে আলোচনা করবো।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসনে আরা তান্নি জানান, ইট ভাটায় ধান পোড়ার খবর পেয়ে মাঠ পরিদর্শন করেছি। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
‘ফাইভ স্টার ব্রিকস’র মালিক শাহীন হোসেনের ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।