বিল্লাল হোসেন : যশোরে ৪টি হসপিটাল ও ক্লিনিক সিলগালা করে দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এ ছাড়া ৬টি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দশ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নে মঙ্গলবার ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালানো হয়। এ সময় প্রতিষ্ঠানগুলোয় জরিমানা ও সিলগালা করা হয়। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস।
সিভিল সার্জন অফিস সূত্র জানায়, মঙ্গলবার স্বাস্থ্য বিভাগের ৩টি দল যশোর শহর ও শার্শা উপজেলার বিভিন্ন হসপিটাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালায়। যশোর শহরে অভিযান টিমে ছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইউনুছ আলী, সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. ইফরাত জেরিন নুরানী ও ডা.নিগার সুলতানা লিয়া।
আরেকটি অভিযানে ছিলেন, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের যশোর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সৈয়দা তামান্না তাসনীম, সিভিল সার্জন অফিসের বক্ষব্যাধি কনসালটেন্ট ডা. পলাশ কুমার দাস ও ক্যাব সদস্য আব্দুর রকিব সরদার।
দুইটি টিম আলাদাভাবে অভিযান চালিয়ে যশোর শহরের ঘোপ জেল রোডের উত্তরা হসপিটাল সিলগালা করে ৫০ হাজার টাকা জরিমানার পর আদায় করে। এ ছাড়া একই রোডের জনতা হসপিটালে ৫০ হাজার টাকা, মুজিব সড়কের পিস হসপিটালে ২০ হাজার টাকা, হরিনাথ দত্তলেনের নোভা মেডিকেল সেন্টারে ১ লাখ টাকা, জেনারেল হাসপাতাল মোড়ের দড়াটানা হসপিটালে ৫০ হাজার ও ঘোপ সেন্টাল রোডের আধুনিক হসপিটাল কর্তৃপক্ষকে ৫০ হাজার জরিমানার পর আদায় করা হয়।
এদিকে, শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুস সালামের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে বুরুজবাগান ক্লিনিক, মুক্তি ক্লিনিক ও পল্লী ক্লিনিক সিলগালা করেন। ডা. আব্দুর সালাম জানান, এই তিনটি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দশ দফা নির্দেশনার কোনটা মানা হচ্ছিলো না। যে কারণে প্রতিষ্ঠানের অস্ত্রোপচার কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
ডা. পলাশ কুমার দাস জানান, পিস হসপিটালে ‘অন ডিউটি ডাক্তার’ ছিলনা। নোভা হসপিটালে রোগ নির্ণয়ে মেয়াদোত্তীর্ণ রিএজেন্ট ব্যবহার, ফাঁকা প্যাথলজি রিপোর্টে ডাক্তারের স্বাক্ষরসহ নানা অনিয়ম চোখে পড়ে। দড়াটানা হসপিটালের অপারেশন থিয়েটারে মেয়াদোত্তীর্ণ রিএজেন্ট রাখা ছিলো। এ ছাড়া আধুনিক হসপিটালে প্যাথলজিতে মেয়াদোত্তীর্ণ রিএজেন্ট পাওয়া গেছে।
০িনর্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইউনুস আলী জানান, উত্তরা প্রাইভেট হাসপাতাল ও জনতা হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক লিমিটেডে অভিযান পরিচালনা করা হয়। নানা অনিয়মের অভিযোগে এই দুই প্রতিষ্ঠানকে ৫০ হাজার টাকা করে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। চিকিৎসা পরিবেশ না থাকার কারণে উত্তরা প্রাইভেট হসপিটাল সিলগালা করা হয়েছে।
যশোরের সিভিল সার্জন বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস জানান, হসপিটাল ক্লিনিক ও ডায়াগনিস্টক সেন্টার মালিকেরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ১০ নির্দেশনাকে ‘ডোন্ট কেয়ার’ হিসেবে দেখছেন জানতে পারেন। এরপর থেকে জেলা ও উপজেলা শহরে একাধিক টিম অভিযানে নামানো হয়েছে। অভিযানের প্রথম দিন মঙ্গলবার ৪টি হসপিটাল ও ক্লিনিক সিলগালা করা হয়েছে। এ ছাড়া ৬ স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
তিনি আরও জানান, নির্দেশনা না মেনে অবৈধভাবে পরিচালনা করা হসপিটাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান অব্যাহত থাকবে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।