Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)

বাংলাদেশের স্বপ্ন সাফজয়ী ফুটবল কন্যা অর্পিতা

এখন সময়: বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি , ২০২৫, ০১:২৯:৫৪ পিএম

 

শাহীন আলম তুহিন, মাগুরা : ছোট্ট একটি মাটির ঘরে দরিদ্রের সাথে বেড়ে ওঠা অর্পিতা এখন বাংলাদেশের স্বপ্ন। সম্প্রতি নেপালে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সাফ নারী অনূর্ধ্ব ১৬  চ্যাম্পিয়নশীফ ফুটবলে অর্পিতার নেতৃত্বে বাংলাদেশ দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে আরো এক ধার এগিয়ে নিয়ে গেল অর্পিতার দল। মাগুরা শ্রীপুর উপজেলার গোয়ালদাহ গ্রামে এক দরিদ্র পরিবারে জন্ম অর্পিতা বিশ্বাসের। ছোটবেলা থেকেই ফুটবল খেলাধূলার প্রতি ছিল তার অপরিসীম মনোযোগ। গোয়ালদাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫ম শ্রেণিতে পড়াকালীন সময় তার ফুটবল খেলার হাতে খড়ি শেখান এ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রভাস চন্দ্র দেব জ্যোতি ও সহকারী শিক্ষক শহিদুল ইসলাম। তাদের নেতৃত্বে এ বিদ্যালয় থেকে গড়ে উঠেছে একটি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ফুটবল দল। বিদ্যালয়ের ক্লাস রুটিন শেষ করে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে প্রতিদিন শুরু হতো অর্পিতাদের ফুটবল প্রশিক্ষণ। এ মাঠ থেকে অর্পিতা ফুটবলের নানা কলাকৌশল রপ্ত করে। একে উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন খেলায় অংশ নিয়ে অর্পিতা সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার অর্জন করে। পাশাপাশি ২০১৭ সালে খুলনা বিভাগীয় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুনেছা মুজিব গোল্ডকাপ ফুটবল খেলায় অর্পিতা সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার অর্জন করে।

অর্পিতার মা গায়েত্রী বিশ্বাস জানান, আমার মেয়ে অর্পিতা একটি দরিদ্র পরিবারের সন্তান। অনেক কষ্ট করে আমি তাকে মানুষ করেছি। ছোটবেলা থেকে তার ফুটবল খেলাধুলার প্রতি প্রচণ্ড ঝোঁক ছিল। সেই থেকে তার স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দেন তার শিক্ষক প্রভাস চন্দ্র দেব জ্যোতি ও সহকারী শিক্ষক শহিদুল ইসলাম। তারা তাকে ফুটবল খেলার নানা কলাকৌশল রপ্ত করতে শেখান। বিকেএসপিতে যাওয়ার ব্যাপারেও তাদের অনেক ভূমিকা রয়েছে। অর্পিতার বাবা একটি দুর্ঘটনায় আহত হয়ে তার একটি পা অকেজো হয়ে যাওয়ায় আমাদের পরিবার বিপাকে পড়ে যায়।  অর্পিতার বাবার চিকিৎসা বাবদ অনেক টাকা খরচ হয়ে গেছে। কিন্তু তার পা ভালো হয়নি। পরিবারের একটি মাত্র ছেলে সে এখন অটো চালক। পরিবারের খরচ চালাতে আমিও একটি গার্মেন্ট কর্মী হিসেবে কাজ করছি। আজ আমার মেয়ের সাফল্যে আমি খুবই খুশি। আমরা চাই অর্পিতা যেন বাংলাদেশের মুখকে আরো বিশ্বেও দরবারে ভালো ভাবে তুলে ধরুক। তার সাফল্যে আজ আমাদের পরিবারসহ এলাকার সকল মানুষ খুশি।

অর্পিতার বাবা মনোরঞ্জন বিশ্বাস বলেন, আমি একজন সাধারণ সবজি বিক্রেতা। দুর্ঘটনায় পায়ে সমস্যা থাকার কারণে পরিবারের আর্থিক সংকট দূর হয় না। এরই মধ্যে আমার মেয়ে অর্পিতা বড় হয়েছে। তার এ সাফল্যে আমার পরিবারের সবাই খুবই খুশি। অর্পিতা এখন অনুর্ধ্ব-১৬ দলের নেতৃত্ব দিচ্ছে। বিকেএসপিতে ক্যাম্প চলাকালীন সময়ের পর অর্পিতা মুঠোফোনে জানান, আমরা সাফ ফুটবলে ভালো সাফল্য অর্জন করাতে খুবই খুশি। ভালো ফুটবল খেলে আমরা বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে ভালো পর্যায়ে নিতে পেতে ভালো লাগছে। আগামীতে আরো ভালো করতে চাই। আমি এখন অনূর্ধ্ব-১৬ দলের নেতৃত্ব পেয়েছি। তাই আগামীতে ভালো ফুটবল খেলা উপহার দিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে চাই।

অর্পিতার শৈশবকালীনফুটবল কোচ প্রভাস চন্দ্র দেব জ্যোতি বলেন, অর্পিতা একজন চৌকস ফুটবল খেলোয়াড়। আমার বিদ্যালয়ে পড়াকালীন সময়ে অর্পিতার ফুটবল প্রশিক্ষণ শুরু করি। খেলার প্রতি গভীর মনোযোগ আর দৃঢ়তার সাথে ফুটবল রপ্ত করার ফলে অর্পিতার খুব সহজে এগিয়ে গিয়েছে সামনে। আমরা সব সময় তার জন্য আশীর্বাদ করি সে যেন বাংলাদেশকে ভালো কিছু দিতে পারে। আজ সে অনূর্ধ্ব-১৬ দলের নেতৃত্ব দিচ্ছে। আগামীতে সে জাতীয় দলের নেতৃত্বে দিবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা। 

 

Ad for sale 100 x 870 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
Ad for sale 225 x 270 Position (4)
Position (4)