নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ফের অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে গাইনী ওয়ার্ড ও প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ ঘটনাটি ঘটে। অগ্নিকান্ডের ঘটনায় রোগী ও স্বজনদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে ফায়ার সার্ভিস নিশ্চিত করেছে। শর্ট সার্কিটের কারণে এর আগেও একাধিকবার হাসপাতালে অগ্নিকান্ড ঘটেছে। হাসপাতালে দায়িত্বরত ইলেকট্রিশিয়ান আব্দুস সালাম জানান, ৫ হাজার কেভির ওয়েরিংয়ে ব্যবহার হচ্ছে ১১ হাজার কেভি। পুরনো সংযোগে অতিরিক্ত চাপে শর্ট সার্কিট হচ্ছে। যে কোন সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনায় প্রাণহানি হতে পারে।
জানা গেছে, সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে গাইনী বিভাগ ও প্রশাসনিক ভবনের সামনে হঠাৎ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। সেখানকার চারপাশ ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। এসময় রোগী ও স্বজনদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তারা দিগবিদিক ছোটাছুটি করতে থাকেন। তবে এতে কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গণপূত বিভাগ ২০০০ সালে তিনতলা ভবন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বুঝেয়ে দেন। এর আগে ১৯৯৯ সালে ভবনে বিদ্যুতের ওয়েরিংয়ের কাজ করা হয়। ২০২১ ভবনে ভবনটির যাত্রা শুরু হয়। দিন দিন হাসপাতালের পরিধি বৃদ্ধি, ভারী যন্ত্রপাতি স্থাপন ও এসির ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় পুরোনো বিদ্যুতের সংযোগ বাড়তি চাপ নিতে পারছে না। ফলে শর্ট সার্কিট থেকে দুর্ঘটনার ঝুঁকি রয়েছে।
হাসপাতালে দায়িত্বরত গণপূর্ত বিভাগের ইলেকট্রিশিয়ান (রাজস্ব) আব্দুস সালাম জানান, ৫ হাজার কেভির ওয়েরিংয়ে ব্যবহার হচ্ছে ১১ হাজার কেবি। দীর্ঘদিনের পুরানো ওয়েরিং নড়বড়ে হয়ে গেছে। ফলে বাড়তি চাপ সহ্য করতে পারছে না। যে কারণে শর্ট সার্কিট হয়ে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটছে। ওয়েরিং মেরামত করা না হলে যে কোন সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনার সৃষ্টি হতে পারে।
হাসপাতালের তথ্য কর্মকর্তা ডা. গোলাম মোর্তুজা জানান, হঠাৎ করে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় গোটা হাসপাতালে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে ৯৯৯ এ কল করে সহযোগিতা চান। কিছু সময়ের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা হাসপাতালে পৌঁছে আগুন নেভাতে সক্ষম হন।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স যশোরের উপ সহকারী পরিচালক দেওয়ান সোহেল রানা জানান, ওয়েরিংয়ের সংযোগ তার দুর্বল, সার্কিট অপরিচ্ছতা, ম্যানুয়াল সার্কিট ব্রেকারের কারণে শর্ট সার্কিট হয়ে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদ জানিয়েছেন, গাইনী ওয়ার্ডে অগ্নিকান্ডের পাশাপাশি প্রশাসনিক ভবনের সামনে ধোঁয়া দেখা যায়। এরপর হাসপাতালের রোগী স্বজন ও চিকিৎসক কর্মচারীরা এদিক-ওদিক ছোটাছুটি শুরু করেন। তাৎক্ষনিকভাবে আগুন নেভাতে সক্ষম হওয়ায় কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তিনি আরও জানান, বিদ্যুতের সংযোগগুলো পুরোনো হওয়ায় ওভার লোড নিতে পারছে না। সে কারণে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকছে। অটো সার্কিট ব্রেকার স্থাপন করাসহ লাইন আধুনিক করার বিষয়ে গণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তাদের লিখিতভাবে জানানো হবে।