ডুমুরিয়া (খুলনা) প্রতিনিধি : হাইকোর্ট থেকে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ থাকা সত্তে¡ও খুলনার ডুমুরিয়ায় আওয়ামী লীগের এক নেতার বিরুদ্ধে ১৭২ বছরের পুরাতন এক মসজিদের জায়গায় আরেকটি মসজিদ নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে দুই পক্ষের মারামারিতে নারীসহ ৬ জন আহত হয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়। শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে গোলনা গ্রামে হাজিডাঙ্গা সড়কে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মসজিদ কমিটি সভাপতি মহাসিন খান থানায় অভিযোগ করেছেন।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার গোলনা আহলে হাদিস আল মদিনা জামে মসজিদটি ঐতিহ্যবাহী; মসজিদটি ১৮৫০ খ্রিস্টাবে স্থাপিত। ওই মসজিদের নামে দানকৃত জায়গায় নতুন আরো একটি মসজিদ নির্মাণ করাকে কেন্দ্র করে গোলনা আহলে হাদিস আল মদিনা জামে মসজিদ কমিটির সাবেক ও বর্তমান কমিটির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ বিরোধ চলে আসছে। মসজিদ কমিটির সভাপতি থেকে বাদ পড়ে গিয়ে খান আবু বক্কার ভিন্ন নামে আরো একটি মসজিদ নির্মাণ কার্যক্রম শুরু করেন পুরাতন মসজিদের জায়গায়। এ নিয়ে বর্তমান কমিটির সভাপতি মহাসিন হোসেন খান হাইকোর্টে সিভিল রিভিশন মামলা দায়ের করেন। যার নম্বর ২৫১৭/২৪। মামলার প্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত গত ১২ জুন ৮ সপ্তাহের স্থগিতাদেশ দেন। এই রায়কে উপেক্ষা করে ১৪ জুন (বৃহস্পতিবার) গভীর রাতে নতুন মসজিদের ছাদ ঢালাইয়ের কাজ শুরু করা হয়।
মসজিদ কমিটির সভাপতি মহাসীন হোসেন খান বলেন, হাইকোর্টের আদেশ উপেক্ষা করে রাত আড়াইটা থেকে ছাদ ঢালাইয়ের কাজ শুরু হয়। ভোরে থানা পুলিশের সহায়তায় আমি সেখানে গিয়ে কাজ করতে নিষেধ করি। কিন্তু ওরা আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে গালিগালাজ করে। প্রতিবাদ করলে আমাকে মারধর করা হয়। তখন আমার পরিবার পরিজন এগিয়ে আসলে আমার মেজ ভাইয়ের স্ত্রী সালমা বেগম(৩৫), সেজ ভাই ইয়ামিন খান(৪২), ছোট ভাই আলামীন খান (৩৮), আমার ছেলে অলিদ খান(১৮) ও ভাইপো মেহেদী হাসান জিহাদকে (১৮) বেদম মারপিট করে। আহতদের ডুমুরিয়া ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় আবজাল হোসেন খান বলেন, গোলনা আহলে হাদিস আল মদিনা জামে মসজিদের নামে অনেক মূল্যবান জমি ও অর্থ রয়েছে। এ মসজিদে বক্কার খান দীর্ঘদিন সভাপতি ছিলো। বিগত দিনে সে কোনো হিসাব-নিকাশ দেয়নি। বর্তমান কমিটি থেকে বক্কার খান ও তোজাম্মেল হোসেন খান বাদ পড়ায় অসৎ উদ্দেশ্যে ভিন্ন নামে একটি মসজিদ নির্মাণ করছেন। তার বিরুদ্ধে ভুয়া একটি মসজিদের নাম দিয়ে সরকারি ১ লাখ ২০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে আবু বক্কার খানের ছেলে আবুল বাশার খান বলেন, মহাসিন খান গংরা আমাদের বাড়িতে এসে হামলা করেছে। ওরা আব্বার পা ভেঙে দিয়েছে। আব্বাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছি।
এ বিষয়ে থানা অফিসার ইনচার্জ সুকান্ত সাহা বলেন, হাইকোর্টের স্থিতাবস্থার আদেশ পেয়ে ওই রাতেই কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। আদালতের পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত কাজ বন্ধ থাকবে।