নিজস্ব প্রতিবেদক : মাহমুদা খাতুন (৫২) নামে এক রোগী নিয়ে ‘বিপাকে’ পড়েছেন যশোর শহরের কুইন্স হসপিটাল কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘ ৫৩ দিন ধরে হসপিটালের ৭০৩ নম্বর কেবিনটি রোগী ও স্বজনদের দখলে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রোগীর ছাড়পত্র দেয়া হলেও তারা হসপিটাল ছেড়ে যাচ্ছেন না। ফলে সিভিল সার্জন অফিসে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। রোগীর মেয়ের দাবি, তার মা অপচিকিৎসার শিকার হয়েছেন। অপারেশন করা চিকিৎসকের দেয়া রোগীর ছাড়পত্র না নিয়ে তারা হসপিটাল ছাড়বেন না।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, গত ১৬ মে যশোর শহরের বকচর মসজিদ পাড়ার মতিউর রহমানের স্ত্রী মাহমুদা খাতুনকে চিকিৎসার জন্য ১৬ মে কুইন্স হসপিটালে আনা হয়। ১৭ মে অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মাহবুবুল আলম রোগীকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তলপেটের চামড়ার নিচে সিপাসিচ সিস্ট শনাক্ত করেন। রাতে তাকে লোকাল এ্যান্সেথেসিয়া দিয়ে বহির্বিভাগের রোগী হিসেবে অপারেশন করা হয়। অপারেশনের পর রোগীকে বাসায় যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হলেও তার স্বজনরা ভর্তির জন্য অনুরোধ করেন। অনেক কাকুতি মিনতির পর চিকিৎসক ভর্তি করেন। এরপর তারা হসপিটালটির ৩০৭ নম্বর কেবিনে ওঠেন। ২২ মে রোগীর ছাড়পত্র দিলেও তারা হসপিটাল ছেড়ে যাননি। রোগীর স্বজনরা নানা তালবাহানায় হাসপাতালে থেকে গেছেন। একে একে ৫৩ দিন পার হলেও তারা হাসপাতাল ছাড়তে ও বিল পরিশোধ করতে নারাজ।
রোগীর মেয়ে রাবেয়া বসরী জানান, তার মা সুস্থ হয়নি। অন্য ডাক্তারের দিয়ে লেখা ছাড়পত্র দিচ্ছেন। কিন্তু যে ডাক্তার তার মায়ের অপারেশন করেছেন ওই ডাক্তারের লেখা ছাড়পত্র দিচ্ছেন না। কেননা তার মায়ের অপচিকিৎসা করা হয়েছে। তাই তারা হসপিটালে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন ।
কুইন্স হাসপাতালের এডমিন আইটি হাসান ইমাম শিমুল জানান, মিথ্যাচার করছেন রোগীর স্বজনরা। ফাইল গায়েব করা বা টাকা দিয়ে মীমাংসার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। রোগীর স্বজনদের অভিযোগের উপর ভিত্তি করে ৭ জন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দিয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠন করে রোগীর বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। সেখানে কোনো সমস্যা পাওয়া যায়নি। কিন্তু তারা হসপিটাল ছেড়ে যেতে চাইছেন না।
যশোরের ডেপুটি সিভিল ডা. সার্জন নাজমুস সাদিক রাসেল জানান, হসপিটাল কর্তৃপক্ষের লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর মঙ্গলবার সরেজমিন তদন্ত করা হয়। তারা হসপিটালের কর্মকর্তা ও রোগীর স্বজনদের সাথে কথা বলেছেন। তদন্ত এখনো শেষ হয়নি।