নিজস্ব প্রতিবেদক: সাপের কামড়ের শিকার হয়ে যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা শিশুসহ দুজনের মৃত্যৃ হয়েছে। মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে এক নারী যশোরের বাসিন্দা। আর শিশুটিকে ঝিনাইদহের শৈলকুপা থেকে এই হাসপাতালে আনা হয়। এ ছাড়া সাপের কামড়ে আহত তিনজন হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন। তাদের মধ্যে একজনকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছে। মঙ্গলবার ভোর থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার মধ্যে সাপের কামড়ের শিকার হয় তারা।
মৃত্যুবরণকারীরা হলো, যশোর সদর উপজেলার বানিয়ালী গ্রামের রিংকু হোসেনের স্ত্রী রোজিনা খাতুন (২৫) ও ঝিনাইদহ শৈলকুপার হাবিব বিশ^াসের ছেলে তাজিম বিশ^াস(১৪)।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীনরা হলো, যশোর শহরের বেজপাড়া এলাকার সুধীর মন্ডলের ছেলে দীপ্ত মন্ডল (৩০), সদর উপজেলার বারীনগর সাতমাইল গ্রামের সমির হোসেনের স্ত্রী শিখা বেগম (৩২) এবং শার্শার নিজামপুর গ্রামের শরিফ হোসেনের ছেলে শিহাব (১৮)। শিহাবকে মঙ্গলবার ভোরে হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ড থেকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছে।
মৃত রোজিনার ভাই আলামিন জানান, মঙ্গলবার সকালে ঘর পরিষ্কার করতে গিয়ে রোজিনা ঘরের খাটের নিচে হাত দিয়ে জিনিসপত্র বের করতে যায়। তখন বিষধর সাপ তাকে কামড় দেয়। পরে স্থানীয় কবিরাজের কাছে নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হলে স্বজনরা তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। এ সময় চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরেক মৃত তাজিম বিশ^াসের বাবা হাবিব জানান, মঙ্গলবার বাড়ির পেছনে বাগানে কাঠ পাড়তে যায় তাজিম। এ সময় বিষধর সাপ তাকে কামড় দেয়। পরে পরিবারের লোকজন তাকে প্রথমে শৈলকুপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখান থেকে চিকিৎসক তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে রেফার করেন। পরে জরুরি বিভাগে আনলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দিপ্ত মন্ডল জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সকালে ১০টার দিকে বাড়ির পাশের ড্রেন পরিষ্কার করছিলেন। এ সময় সাপের মত কিছু তার পায়ে কামড় দেয়। পরে দ্রুত হাসপাতালে আসলে চিকিৎসক ভর্তি করেন। তবে কি সাপে কামড় দিয়েছে সেটা জানেন না।
আইসিইউতে চিকিৎসাধীন শিহাব হোসেনের ভাই জানিয়েছেন, সোমবার রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় ‘কালা সাপ’ শিহাবকে কামড় দিয়েছে। পরে পরিবারের লোকজন দ্রুত তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিহাবের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক মঙ্গলবার ভোরে তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করেন। একই ভাবে মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে বাড়ির উঠানে থেকে রান্না ঘরে যাওয়ার পথে সাপের কামড়ে অসুস্থ হন শিখা খাতুন।
এ ব্যাপারে যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ বিচিত্র মল্লিক জানান, হাসপাতালে মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে শুধুমাত্র সর্পদংশনে শিশুসহ দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া মঙ্গলবার ভোর থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে তিনজন সর্পদংশনে অসুস্থ হয়ে ভর্তি হয়েছে। শিহাবকে ‘কালা সাপে’ কামড় দিলেও অপর দুইজনকে কোন সাপে কামড় দিয়েছে তা নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। এমনকি অসুস্থ ব্যক্তিরাও বলতে পারেননি।