নিজস্ব প্রতিবেদক: মাদক ব্যবসার টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে বিরোধে খুন হয়েছে অভয়নগরের হাবিবুর রহমান (২৪) । তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গলায় চাকু ঠেকিয়ে ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প দিয়ে মাথায় আঘাত করে পেট কেটে নাড়িভুড়ি বের করে বস্তার সাথে ইট বেঁধে ভৈরব নদে ফেলে দেয়া হয়।
যশোর ডিবি পুলিশের হাতে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ৪জনকে আটক করে তাদের জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর এ তথ্য পাওয়া গেছে বলে ডিবি জানিয়েছে। একই সাথে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত একটি জিআই পাইপ ও দুইটি স্ট্যাম্প উদ্ধার করেছে। পুলিশ ভৈরবে নেমে তল্লাশী করে ওই অস্ত্র ও নিহতের মোবাইল ফোনসেট উদ্ধার করে।
গত ৩০ জুলাই দুপুরে ভৈরব নদের জয়েন্ট ট্রেডিংয়ের বালুর মাঠ অংশ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি উপজেলার তালতলা মধ্যমপুর গ্রামের রেজাউল ইসলামের ছেলে।
আটককৃতরা হলো একই এলাকার নূর ইসলামে ছেলে মেহেদী হাসান (২২), বিভাগদী গ্রামের মোশারফ হোসেনের ছেলে হুমায়ুন শেখ (২১), মৃত আজাহার শেখ ওরফে আজার ছেলে ফয়সাল শেখ (২১) এবং খন্দকার আনিছুর রহমানের ছেলে খন্দকার আল আমিন (৩০)।
পুলিশ জানিয়েছে, একই এলাকার মাদক ব্যবসায়ী ইয়াছিনের সাথে হাবিবুরের বন্ধুত্ব ছিলো। মাদক বিক্রির টাকার ভাগবাটোয়ারা এবং একচ্ছত্র মাদক ব্যবসা নিয়ে হাবিবুরের সাথে দুরত্ব সৃষ্টি হয়। ফলে ইয়াছিন তার অন্যান্য সঙ্গিদের নিয়ে হাবিবুরকে হত্যার পরিকল্পনা করে। গত ২৮ জুলাই সন্ধ্যার দিকে আরেক মাদক বিক্রেতা হাসানের মাধ্যম দিয়ে হাবিবুরকে বালুর মাঠে ডেকে নেয় হত্যাকারীরা। এরপর রাত ৮টার দিকে সেখানে নিয়ে তাকে স্ট্যাম্প ও জিআই পাইপ দিয়ে পিটিয়ে জখম করে। একটি ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলায় আঘাত করে হত্যা করে। হাত-পা বেঁেধ হাবিবুরের পেট কেটে নাড়িভুড়ি বের করে এবং বালির বস্তার মধ্যে ভরে ইটে বেঁেধ ভৈরবে ফেলে দেয়।
পুলিশ আরো জানিয়েছে, ২৮ জুলাইয়ের পর সে বাড়িতে না ফেরায় নিহতের স্ত্রী অভয়নগর থানায় একটি নিখোঁজ জিডি করে। গত ৩০ জুলাই বেলা সাড়ে ১২টার দিকে লাশ ভেসে উঠলে প্রথমে হাবিবুরকে কেউ চিনতে পারেনি। পরে পরিবারের লোকজন তার মোবাইল ফোনসেট ও দেহের কাপড় দেখে সনাক্ত করে। অভয়নগর থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশ এই হত্যার তদন্ত করে। প্রথমে সন্দেহ ভাজন আসামি মেহেদী হাসানকে বুধবার দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে আটক করা হয়। আসামি মেহেদীর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী একই রাত সোয়া দুইটার দিকে হুমায়ুন শেখ (২১), সাড়ে ৩টার দিকে ফয়সাল শেখ ও সোয়া ৪টার দিকে খন্দকার আল আমিন (৩০)কে নিজ বাড়ি হতে আটক করা হয়। পরে তারা একে একে এই হত্যার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করে। বৃহস্পতিবার বিকেলে আটক চারজনকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়।