বাবুল আক্তার, চৌগাছা: যশোরের চৌগাছায় মাল্টা চাষ করে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন চাষি বিপ্লব হোসেন। বিপ্লব হোসেন পৌর শহরের ইছাপুর গ্রামের মৃত তৌয়ব আলীর ছেলে। তিনি ড্রাগন, পেয়ারা, কমলা ও চায়না লেবু চাষের পাশাপাশি মাল্টা লেবুর আবাদ করেছেন। তিনি ফলের চাষ করে প্রতি বছর লাখ লাখ টাকা লাভবান হচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানা, এ উপজেলায় এবার ২৮ হেক্টর জমিতে মাল্টা চাষ হয়েছে। এতে মাল্টা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৯৮০ মেট্রিক টন। এবার বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে উপজেলায় মাল্টা চাষ অনেক বেড়েছে। সঠিকভাবে পরিচর্যা করা হলে চারা রোপণের দুই বছরের মাথায় ফল আসতে শুরু করে। এ ফলের আবাদে সার কীটনাশক তুলনামূলক কম লাগে। পোকার আক্রমণ নেই বললেই চলে। যে কারণে ফলের চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।
বিপ্লব হোসেন একজন সরকারি সুবিধাভোগী ফল চাষি। ইছাপুর গ্রামের পশ্চিম মাঠে তার মাল্টা বাগানে গিয়ে দেখা যায় প্রতিটি গাছে প্রচুর পরিমাণে মাল্টা এসেছে। গাছের মাল্টার সাথে দোল খাচ্ছে চাষি বিপ্লব হোসেনের স্বপ্ন পূরণের আশা।
দেখা যায়, মাল্টার গাছ গুলো ফলের ভারে ন্যুয়ে পড়ার উপক্রম। মাল্টার গাছ যেন পড়ে না যায় সে জন্য বাঁশের খুঁটি দেয়া হয়েছে। চাষি বিপ্লব হোসেনের পাশাপাশি পরিবারের লোকজনও পরিচর্যা কাজে সহায়তা করেন। মাল্টা বাগান জুড়ে গাছে গাছে প্রচুর পরিমাণে মাল্টা দোল খাচ্ছে। অন্য বছরের তুলনায় এবছর বেশি পরিমাণে মাল্টা ধরেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে লাভবান হওয়ার আশা করছেন তিনি।
বিপ্লব জানান, ২০২০ সালের শুরুর দিকে প্রায় দেড় বিঘা জমি বর্গা নিয়ে বারি-১ জাতেরপয়সা মাল্টা চাষ শুরু করেন তিনি। দেড় বিঘা জমিতে মাল্টা গাছের চারা রোপণ করেন ১৩০টি। মাল্টা চাষে লাভবান হবেন এমন প্রত্যাশা বুক বেঁধে পরিচর্যা করে যাচ্ছেন তিনি।
বিপ্লব তার ফল বাগানের চার ধারে বেড়া হিসেবে দেশী জাতীয় কাগুজে লেবু গাছ লাগিয়েছেন। বেড়ার পাশ দিয়ে লাগিয়েছেন মেটে আলু, পোল্লা, ঝিঙ্গা, ঢেড়স ও শীম। তিনি সাথী ফসল হিসেবে ফলের গাছের ফাঁকে ফাঁকে হলুদ, পেঁপে, পুঁইশাক, লাল শাক, বেগুন ইত্যাদি আবাদ করেছেন। ফল চাষের পাশাপাশি এ সকল সাথী ফসল থেকেও বেশ টাকা আয় করে থাকেন বলে তিনি জানান।
মাল্টা চাষি বিপ্লব বলেন, স্থানীয় বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি মাল্টা ৮০ থেকে ৯০ টাকা পাইকারী বিক্রি হচ্ছে। আমার বাগান থেকে ইতোমধ্যে ১০ হাজার টাকার মাল্টা বিক্রি হয়েছে। এবার প্রায় সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার কেজি মাল্টা পাওয়ার আশা করছি।
উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন, কৃষি বিভাগের তত্ত্বাবধানে নিয়মিত মাল্টার বাগানপরিদর্শন ও পরামর্শ প্রদান করা হয়।
উপজেলা কৃষি অফিসার মুসাব্বির হুসাইন বলেন, ফলের চাষে লাভবান হওয়ায় মাল্টাসহ বিভিন্ন প্রকার ফল চাষ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রশিক্ষণসহ ফল চাষে এখন কৃষকদের সরকারি ভাবে সহায়তা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।