বিল্লাল হোসেন: যশোরের চৌগাছায় সততা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অবৈধভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে প্যাথলজিস্ট ও ল্যাব টেকনিশিয়ান ছাড়াই রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট দেয়া হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানের হিসাব কর্মকর্তা (একাউন্ট অফিসার) মেডিকেল টেকনোলজিস্ট সেজে গুরুত্বপূর্ণ সব পরীক্ষার প্রতিবেদন তৈরি করছেন। ফলে হাজার হাজার টাকা ব্যয় করে রোগীরা সঠিক রিপোর্ট পাচ্ছে কিনা সন্দেহ রয়েছে।
জানা গেছে, গত সেপ্টেম্বর মাসে সিভিল সার্জন অফিসে সততা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্স পাওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষ আবেদন করে। আবেদনে ডিপ্লোমা পাস করা প্যাথলজিস্ট হিসেবে তানভীর রহমান মিঠুর নাম দেয়া হয়। অভিযোগ উঠেছে, তানভীর রহমান মিঠু সততা ডায়াগনস্টিকে কাজ করেন না। লাইসেন্স পাওয়ার জন্য আবেদনে তার নাম ব্যবহার করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, লাইসেন্স পাওয়ার আগেই সততা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অবৈধভাবে চিকিৎসা ও প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ সকল কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। ডায়াগনস্টিক সেন্টারে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক (প্যাথলজিস্ট), একজন রিপোর্ট প্রদানকারী, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট থাকা বাধ্যতামূলক হলেও তা মানা হয়নি। ডায়াগনস্টিক সেন্টারের হিসাব কর্মকর্তা ইমরান হোসেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট সেজে সব গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রতিবেদন (রিপোর্ট) দিচ্ছেন।
অভিযোগ উঠেছে, রোগীদের রক্ত প্রস্রাব নিয়ে ডায়াগনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষ নিজেদের ইচ্ছামতো ভুয়া রিপোর্ট প্রদান করছেন। এতে মালিকপক্ষ লাভবান হলেও রোগীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। একদিকে যেমন হাজার হাজার টাকা খরচ করে সঠিক রিপোর্ট পাচ্ছেন না। অন্যদিকে ভুয়া রিপোর্ট অনুয়ায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করে রোগীরা শারীরিকভাবে আরও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সততা ডায়াগনস্টিক সেন্টার লাইসেন্স পাওয়ার আগে যদি মালিকপক্ষ এমন প্রতারণা করতে পারে তাহলে আগামীতে রোগী ঠকানো আরও বাড়তে পারে বলে অনেকেই শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
এই বিষয়ে সততা ডায়াগনস্টিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল ইসলাম জানান, লাইসেন্স পাওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছে। এখনো লাইসেন্স হয়নি। স্যার ও ম্যাডামের মৌখিক অনুমতি নিয়ে ডায়াগনস্টিকের কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। প্যাথলজিস্ট ছাড়া রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন কিভাবে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
যশোরের সিভিল সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসান জানান, সততা ডায়াগনস্টিক সেন্টার লাইসেন্স পাওয়ার আগেই কার্যক্রম শুরুর বিষয়টি তিনি জানতেন না। প্যাথলজিস্ট ছাড়া পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা শতভাগ অনিয়ম। খোঁজ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।