নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে নতুন করে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। এ ভাইরাসে আতঙ্কিত না হয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার আহবান জানিয়েছেন যশোরের সিভিল সার্জন ডাক্তার মাসুদ রানা।
জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে রোববার কালেক্টরেট সভা কক্ষ অমিত্রাক্ষরে অনুষ্ঠিত জেলা উন্নয়ন ও সমন্বয় কমিটির সভায় এ আহবান জানান।
সিভিল সার্জন ডাক্তার মাসুদ রানা বলেন, দেশে নতুন করে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। বর্তমানে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কি ধরনের হতে পারে, সেটা বলা যাচ্ছে না। যশোর জেলা সীমান্তবর্তী হওয়াতে করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি বেশি। কারণ প্রতিবেশি রাষ্ট্র ভারতে এই ভাইরাসের নতুন ভেরিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। তবে যশোরবাসীকে সতর্ক থাকতে হবে। বেনাপোলে মেডিকেল টিম দায়িত্ব পালন করছে। যেসব মানুষ ভারত থেকে দেশে আসছেন। তাদেরকে পরীক্ষা করার পর প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে। এ ভাইরাসে বয়স্ক ও ডায়াবেটিকস বা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য ঝুঁকির কারণ। প্রতিটি উপজেলায় এসব রোগীদের জন্য ওয়ার্ডে ব্যবস্থা করা হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে আতঙ্ক না হতে বলা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে ভ্যাকসিনের কোন বিকল্প নেই। হাসপাতালে ৪ হাজার ৬০০ ও পৌরসভায় ২ হাজার ২শ’ ভ্যাকসিন ও উপজেলা গুলোতেও ভ্যাকসিন আছে। কেউ ভ্যাকসিন দিতে চাইলে দিতে পারবে। আমাদের প্রত্যেকের সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে। সাথে সাথে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে।
বর্ষাকালে ডেঙ্গু বৃদ্ধি পাবে। এজন্য ভবনগুলোর কোন পাত্রে পানি জমে না থাকে সেদিকে নজর দিতে হবে।
২৫০ শযা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হুসাইন সাফায়াত বলেন, ডেঙ্গু রোগী তেমন নেই। করোনা ভাইরাসের ২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি আছে। করোনা রোগীর জন্য ৮টি বেড প্রস্তুত আছে। প্রয়োজন হলে এসব রোগী আইসিটিইউতে ভর্তি রাখা হবে।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম বলেন, করোনা ভাইরাসের বিষয়ে প্রস্তুত থাকতে হবে। ভারত থেকে কোন মানুষ দেশে আসলে আগে পরীক্ষা করতে হবে। তারপর প্রবেশ করতে দিতে হবে। তিনি বলেন শহরের যানজট নিরসনে ও পথচারীদের স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচলের জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে। কিছু সংখ্যক মানুষের জন্য বেশি সংখ্যক মানুষের কষ্ট মেনে নেয়া যায় না। এবছর ঈদে জেলা পরিষদের অর্থায়নে জেলার ১৬শ ৮০জন দুস্থ মানুষকে মাংস, সেমাই,চিনি ও ঈদ সামগ্রী দেওয়া হয়েছে। জুলাই যোদ্ধা ও বীরমুক্তিযোদ্ধাদের বাড়িতে বাড়িতে ঈদ সামগ্রী পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক ও পৌরপ্রশাসক রফিকুল হাসান বলে বর্ষাকালে যাতে ডেঙ্গু বৃদ্ধি না পায়, এজন্য মাস ব্যাপি মশক নিধন অভিযান শুরু করা হবে। ঈদুল আযহার পর শহর পরিস্কার রাখার জন্য কোরবানীর পশুর বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। শতভাগ ড্রেন পরিষ্কার করা হয়েছে। বর্ষাকালে জলাবদ্ধতা হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, শহরকে যানজট মুক্ত ও ফুটপথ বেদখল মুক্ত করতে সবাইকে এক হতে হবে। শিক্ষা বোর্ড অফিসের সামনে, মনিহার এলাকায় রাস্তার ধারে বাস থামিয়ে রাখা বন্ধ হচ্ছে না। এজন্য বল প্রয়োগ করতে হবে।
জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আছাদুজ্জামান বলেন, পালবাড়ীর মোড়ে জেলা পরিষদের স্কুল এন্ড কলেজ প্রতিষ্ঠা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এটি করলে শিক্ষার ক্ষেত্রে ভুমিকা রাখবে। পৌরসভার ৮০ শতাংশ জমি অবৈধ দখলদারদের দখলে। সেগুলো উদ্ধারের বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে।
প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন বলেন, রেল রোডে রোড লাইট সময় মতো জ¦ালানো ও নেভানো হয় না।
এসময় বক্তব্য রাখেন এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আহমেদ মাহাবুবুর, সড়ক ও জনপথে নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জী, জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার রাশেদুল হক, যশোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোশাররফ হোসেন, শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী নাজিব হাসান, অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়দেব চক্রবর্তী, কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোকসানা খাতুন প্রমুখ। এ সময় বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।