শেখ কাজিম উদ্দিন, বেনাপোল : দীর্ঘ ১১ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে দু’দেশের বেনাপোল-পেট্রাপোল স্থলবন্দরের শীর্ষ কর্মকর্তাদের মাসিক বাণিজ্য বৈঠক। গত বছরের ৫ আগস্ট’ সরকারের পালাবদলের পর থেকে ভারত-বাংলাদেশের সরকারি পর্যায়ের এই বৈঠক আর হচ্ছে না। এতে, আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য পরিচালনায় নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। যেকারণে, চলমান সংকট নিরসনে রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, স্থলপথে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে মোট বাণিজ্যের ৮০ শতাংশ সম্পন্ন হয়ে থাকে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরের মাধ্যমে।
আমদানিকৃত পণ্যের মধ্যে শিল্প ও ওষুধ শিল্পের কাঁচামাল, শিশু খাদ্য, কসমেটিকস এবং গার্মেন্টস পণ্য রয়েছে। রফতানি পণ্যের মধ্যে পাট, তৈরি পোশাক, কেমিকেল, প্লাস্টিক পণ্য এবং মাছ উল্লেখযোগ্য।
বাণিজ্যিক জটিলতা সমাধানে ২০০৬ সালে দুই দেশের যৌথ উদ্যোগে মাসিক বৈঠকের রীতি চালু হয়। বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্তের শূন্যরেখায় কাস্টমস, বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়ে প্রতিমাসে বৈঠক করতেন। এতে অনেক সমস্যার দ্রুত সমাধান হতো। তবে ৫ আগস্টের পর থেকে বৈঠক বন্ধ থাকায় এখন নানা সমস্যার সমাধান বিলম্বিত হচ্ছে। এতে বেনাপোল বন্দর দিয়ে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ৬০ শতাংশ বাণিজ্য কমে গেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের দপ্তর সম্পাদক মোস্তাফিজ্জোহা সেলিম বলেন, বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও জটিলতা নিরশনের বৈঠক বন্ধ থাকায় দিন দিন সংকট আরও প্রকট হচ্ছে। দ্রুত পূর্বের ন্যায় বৈঠকটি চালু করা প্রয়োজন।
ভারত-বাংলাদেশ ল্যান্ডপোর্ট চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মতিয়ার রহমান জানান, বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে বছরে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার পণ্য আমদানি এবং বাংলাদেশ থেকে ১০ হাজার কোটি টাকার পণ্য ভারতে রপ্তানি হয়। এই বিশাল বাণিজ্য সচল রাখতে মাসিক বৈঠক চালু রাখা অত্যন্ত জরুরি। তিনি আশা প্রকাশ করেন, দুই দেশ খুব দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) শামিম হোসেন জানান, আগে দু’দেশের শুন্যরেখায় নিয়মিত মাসিক বৈঠক হতো, এখন কোনো সমস্যা হলে ফোনে যোগাযোগ করতে হচ্ছে। তবে সরকারের নির্দেশ পেলে পূর্বের ন্যায় বৈঠক আয়োজনের জন্য ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে।