নিজস্ব প্রতিবেদক: বাঘারপাড়ার ষাটখালি গ্রামের জুবায়ের হোসেনকে ওমানে পাচারের দায়ে স্বামী-স্ত্রীকে ৫ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছে যশোরের মানব পাচার প্রতিরোধ ট্রাইব্যুনাল। মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক (সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ) ডক্টর আতোয়ার রহমান এক রায়ে এ আদেশ দিয়েছেন। সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলো, যশোর সদরের শাখারিগাতি গ্রামের ইমরান হোসেন ও তার স্ত্রী রেকসোনা বেগম।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, ষাটখালি গ্রামের নূর জালাল মোল্যার ভাইরা ভাই আসামি ইমরান ওমানে যাওয়ার পর তার ছেলে জুবায়েরকে ওমানে নেয়ার প্রস্তাব দেয়। জুবায়েরকে ওমান নিতে ইমরান ও তার স্ত্রী রেকসোনার সাথে তাদের চুক্তি হয়েছিল ৩ লাখ টাকা। চুক্তি অনুযায়ী রেকসোনকে প্রথমে ৬৫ হাজার টাকা দেয়া হয়। পরে ভিসা ও বিমান টিকিট দেখিয়ে রেকসোনা আরও ২ লাখ ৩৫ হাজার টাকা নেয়। ২০১৫ সালের ২৫ মার্চ জুবায়েরকে ঢাকায় নিয়ে পরদিন ওমান পাঠিয়ে দেয় রেকসোনা। জুবায়ের ওমান পৌঁছানোর পর ইমরান তাকে নিয়ে একটি ঘরে আটকে রেখে ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে নির্যাতন শুরু করে। বিষয়টি জুবায়ের ফোনে স্বজনদের জানায়। স্বজনরা আসামি রেকসোনাকে চাপ দিলে ১৬ এপ্রিল আসামি ইমরান ওমান থেকে জুবায়েরকে দেশে পাঠিয়ে দেয়। ২০ এপ্রিল সালিশে আসামি রেকসোনাকে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা ফেরত দিতে বলা হয়। টাকা না দেয়ায় ওই বছরের ২৫ জুন ইমরান ও তার স্ত্রী রেকসোনাকে আসামি করে মানব পাচার প্রতিরোধ ট্রাইব্যুনালে মামলা করে জুবায়ের। আদালতে আদেশে ওই দিন কোতয়ালি থানায় নিয়মিত মামলা হিসেবে রুজু হয়। এ মামলার তদন্ত শেষে ওই দুইজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। দীর্ঘ সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক প্রত্যেককে ৫ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩ মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। সাজাপ্রাপ্ত রেকসোনা বেগম কারাগারে আটক আছে।