খুলনা প্রতিনিধি : খুলনার অন্যতম ব্যস্ত সড়ক রূপসা ট্রাফিক মোড় থেকে খানজাহান আলী (রূপসা) সেতু পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার পথ মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘ ১২ বছরেও সংস্কার না হওয়ায় বড় বড় গর্ত, উঁচু-নিচু ভাঙাচোরা রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষ চরম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এ সড়কের কাজ দ্রুত সম্পন্নের দাবিতে ফুঁসে উঠেছেন খুলনার নাগরিক সমাজের নেতারা। এ অবস্থায় দ্রুত কাজ সমাপ্তি এবং অর্থ অপচয় ও ধীরগতির জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে খুলনা নাগরিক সমাজ। বুধবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে শিপইয়ার্ড সড়কের দাদা ম্যাচ কোম্পানির সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মো. বাবুল হাওলাদার। তিনি জানান, ২০১৩ সালে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ) শিপইয়ার্ড সড়ককে চার লেনে উন্নীত করার জন্য ৯৮ কোটি ৯০ লাখ টাকার প্রকল্প অনুমোদন করে। তবে নানা জটিলতা শেষে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে কার্যাদেশ দেওয়া হলেও নির্ধারিত সময়সীমা ২০২৪ সালের জুনে অতিক্রান্ত হয়েছে। কেডিএ দাবি করছে প্রায় ৭০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে, কিন্তু বাস্তবে ডিভাইডার, ড্রেন, ফুটপাথ, লবণচরা সেতু ও কালভার্টসহ গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো এখনো সম্পন্ন হয়নি। বাবুল হাওলাদার অভিযোগ করেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অপরিকল্পিত ও ধীরগতির কারণে সড়ক কোথাও ইট খোয়া, কোথাও গর্ত, আবার কোথাও জলাবদ্ধ হয়ে কৃষিজমির মতো অবস্থায় পরিণত হয়েছে। এতে শুধু জনদুর্ভোগ নয়, স্থানীয় শিল্প-বাণিজ্যও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বহু দোকানপাট বন্ধ হয়ে গেছে, শত শত শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, প্রকল্পে এতো ধীরগতি ও ব্যর্থতার পরও কেন ঠিকাদারকে প্রায় ৭০ কোটি টাকা প্রদান করা হলো? কেন তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা হলো না? তিনি আরও বলেন, দীর্ঘসূত্রিতা ও অব্যবস্থাপনার কারণে প্রকল্পের ব্যয় আড়াই গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, অথচ জনদুর্ভোগ ও অর্থনৈতিক ক্ষতির কোনো প্রতিকার হয়নি। নাগরিক সমাজের নেতারা জানান, শিপইয়ার্ড সড়ক এখন খুলনাবাসীর দুর্ভোগের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। দ্রুত কাজ শেষ না হলে এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ গণমাধ্যমকর্মীদের আহ্বান জানান, অতীতের মতো এবারও ভুক্তভোগী মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে বিষয়টি জাতীয়ভাবে তুলে ধরতে। এ সময় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।