নিজস্ব প্রতিবেদক : যশোরের একটি কারাতে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নালিশ করতে গিয়ে উল্টো বাড়ির মালিক দুর্ব্যবহারের শিকারের অভিযোগ করেছেন কয়েকজন প্রশিক্ষণার্থীর অভিভাবক। প্রতিষ্ঠানটি যশোরের সনামধন্য প্রতিষ্ঠান জয়তী সোসাইটির মধ্যে।
অভিভাবকদের দাবি কারাতে ওই প্রতিষ্ঠান নিয়মবহির্ভুত নানা অজুহাতে টাকা আদায় করছে। তারা প্রতিকার না পেয়ে বাড়ির মালিক জয়তী সোসাইটির পরিচালক অর্চনা বিশ্বাসের কাছে অভিযোগ করতে গেলে উল্টো তাদের তাড়িয়ে দেয়া হয়। নানাভাবে অপমানিত হয়েছেন ওই শিক্ষাথীর অভিভাবক।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন অভিভাবক জানিয়েছেন, ঝিকরগাছার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম ২০২২ সালে জয়তী সোসাইটির একটি ভবন ভাড়া নিয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের কারাত সেখানোর প্রতিষ্ঠান গড়েন। তারা প্রথমে ভেবে ছিলেন এই প্রতিষ্ঠানটি জয়তী সোসাইটির। দুইবছর সেখানে প্রশিক্ষণ নেয়ার পর হঠাৎ করে রফিকুল ইসলাম অভিভাবকদের জানান, ব্লাক বেল্টের জন্য খুলনার পরীক্ষা দিতে হবে। অভিভাবকসহ প্রশিক্ষণার্থীদের যাতায়াত, কিছু সরঞ্জামসহ জনপ্রতি ১০ হাজার ৯৫০ টাকা করে লাগবে। সে সময় তারা অভিযোগ করেন পরীক্ষার ফি এক হাজার টাকা বাদে আর কোনো খরচ নেই। যাতায়াত ও খাওয়া বাবদ খুব বড়জোর ৫ হাজার টাকা করে খরচ হতে পারে। কিন্তু প্রায় ১১ হাজার টাকা করে চাপিয়ে দেয়া অন্যায়। তারা এতো টাকা দিতে পারবেন না বলে জানালে রফিকুল ইসলাম ৬জন অভিভাবককে জানিয়ে দেন তাদের পরীক্ষা দেয়ার ব্যবস্থা করতে পারবেন না। ফলে ৬জন অভিভাবক তাদের বাচ্চাদের নিয়ে পুলিশ লাইন কদমতলায় একটি ঘর ভাড়া করে রফিকুল ইসলামের প্রতিষ্ঠানের প্রশিক্ষক সোয়েব আহমেদ ও সাকিল হেলাল নাঈমকে দিয়ে প্রশিক্ষণ দেয়ার ব্যবস্থা করেন। কিন্তু পরবর্তীতে রফিকুল ইসালামের ছেলে নয়ন ইসলাম রাব্বী হুমকি দিয়ে সোয়েবকে প্রশিক্ষণ দিতে নিষেধ করেন এবং নানা ভয়ভীতি দেখায়। এই ঘটনায় থানায় একটি জিডিও হয়। যদিও জিডি পরবর্তীতের প্রত্যাহার করে নেন সোয়েব।
তাদের অভিযোগ মাত্র এক হাজার টাকা ফি দিয়ে তাদের শিশুদের খুলনায় নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে রফিকুল ইসলাম খামখেয়ালীপনা করেন এবং ইচ্ছা মাফিক প্রায় ১১ হাজার টাকা দাবি করেন। প্রশিক্ষণ দেয়ার নামে বহুগুন টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এই বিষয়ে কারাতে ফেডারেশনে একটি লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
গত বুধবার বিকেলে ওই ৬জন অভিভাবক জয়তী সোসাইটির পরিচালক অর্চনা বিশ্বাসের কাছে যান রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি নিয়ে। কিন্তু অচর্না বিশ্বাস তাদের কোনো অভিযোগ আমলে নেন নি, উল্টো তাদের নানাভাবে রফিকুলের পক্ষে অবস্থান নিয়ে অপমানিত করেন বলে তারা অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে প্রশিক্ষক রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, ওই ৬জন শুরু থেকে সব কিছু জানেন। ২৬ জন অভিভাবক কোনো কথা বললেন না। শুধু ওই ৬জন নানাভাবে তাকে নাজেহাল করেছেন। অ্যাকাডেমি থেকে একজন বাচ্চাকে অভিভাবকসহ খুলনায় নেয়া, যাতায়াত, সরঞ্জাম প্রদান, থাকা খাওয়া, তার ফিসহ ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের জন্য এককালিন ১০হাজার ৯৫০ টাকা চাওয়া হয়েছিল। তারা দিতে রাজি হয়নি। তারা অন্যত্র চলে গিয়ে আমাকে নানাভাবে হেনস্তা করছে।
অভিযোগ বিষয়ে জয়তী সোসাইটির পরিচালক অর্চনা বিশ্বাস বলেছেন, কয়েকজন নারী তার কাছে এসেছিলেন। তারা ভাড়াটিয়া রফিকুল সম্পর্কে নানা কথা বলেন। তিনি তাদের সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ভাড়াটিয়ার সাথে কি চুক্তি হয়েছে না হয়েছে সেটা তাদের বিষয়; আমার বিষয় না। রফিকুল ভাড়াটিয়া। সে প্রতিমাসে বেতন দেয়। তার সাথে আমার আর কোনো সম্পর্ক নেই। তাদের কোনো অপমান অপদস্থ করা হয়নি বরং তারা আমার সম্পর্কে নানা মিথ্যা অভিযোগ করেছেন বলে জানিয়েছেন অর্চনা বিশ্বাস।