স্পন্দন ডেস্ক : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নিয়ে যেতে কাতার সরকারের ব্যবস্থাপনায় জার্মানি থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আসবে ঢাকায়।
ঢাকায় কাতার দূতাবাসের জনসংযোগ কর্মকর্তা আসাদুর রহমান আসাদ শুক্রবার বিকালে বলেন, “কাতার সরকার এই এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে দিচ্ছে, সেটা জার্মানি থেকে ঢাকায় আসবে।”
শনিবার বিকালে ওই এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায় পৌঁছাতে পারে বলে দূতাবাস থেকে প্রাথমিক ধারণা দেওয়া হলেও একটি সূত্র জানিয়েছে, বিষয়টি আরো বিলম্বিত হতে পারে।
তিনি বলেন, “এয়ার অ্যাম্বুলেন্স শনিবার আসার জন্য যে প্রস্তুতি, সেটা এখনো নেওয়া হয়নি। খালেদা জিয়ার মেডিকেল টিমের ওপর বিষয়টা নির্ভর করছে। তবে সেটা শনিবার আসছে না এ বিষয়টি মোটামুটি নিশ্চিত।”
কথা ছিল, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া লন্ডনে যাবেন কাতারের আমিরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে চড়ে। কিন্তু ‘কারিগরি জটিলতায়’ তা সম্ভব না হওয়ায় এই বিকল্প ব্যবস্থা করেছে কাতার সরকার।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা শুক্রবার সকালে বলেছিলেন, ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স নামার জন্য কোনো শিডিউল চাওয়া হয়নি। সে কারণে বেবিচক বা শাহজালাল বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের তরফে কোনো প্রস্তুতিও রাখা হয়নি।
কাতারের এয়ার অ্যাম্বুলেন্স যে শুক্রবার আসছে না, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও তা সকালে জানিয়েছিলেন।
তিনি বলেছিলেন, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ‘কারিগরি ত্রুটির কারণে’ এই জটিলতা তৈরি হয়েছে। সব ঠিক থাকলে সেটা শনিবার পৌঁছাতে পারে।
“ম্যাডামের শরীর যদি যাত্রার উপযুক্ত থাকে এবং মেডিকেল বোর্ড যদি সিদ্ধান্ত দেয়, তাহলে ইনশাল্লাহ ৭ তারিখ (রোববার) ফ্লাই করবেন।”
কিন্তু জটিলতা আরো আছে। বিএনপির একজন শীর্ষ নেতা বলেছেন, খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ড বৃহস্পতিবার তাকে বিদেশে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছিল। কিন্তু রাতে তার শারীরিক অবস্থার কিছুটা অবনতি ঘটে। যাত্রা পিছিয়ে যাওয়ার এটাও একটি কারণ।
এখন এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা হলেও খালেদা জিয়াকে ১৩ ঘণ্টা বিমানে রেখে লন্ডনে নেওয়া সম্ভব হবে কি না, তা পুরোপুরি তার শারীরিক অবস্থা এবং মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে।
বিএনপি চেয়ারপরসন খালেদা জিয়া গত ২৩ নভেম্বর থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড বৃহস্পতিবার সিদ্ধান্ত নেয়, উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে যুক্তরাজ্যে নিয়ে যাওয়া হবে। তখনই কাতারের আমিরের এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের কথা বলা হয়।
বিএনপির একটি সূত্র জানিয়েছিল, খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য চীনে নেওয়ার একটি প্রস্তাব সে দেশ থেকে এসেছিল। তাকে বিদেশে নেওয়ার জন্য চীন এয়ার অ্যাম্বুলেস পাঠাতেও আগ্রহী ছিল।
কিন্তু খালেদা জিয়ার যুক্তরাজ্য প্রবাসী বড় ছেলে তারেক রহমান তার মাকে লন্ডনে নেওয়ার এবং সেজন্য কাতার আমিরের এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহারের পক্ষেই মত দেন, কারণ ওই উড়োজাহাজটি ঢাকা থেকে সরাসরি লন্ডনে পৌঁছাতে পারে, জ্বালানি নিতে মাঝে কোথাও নামতে হয় না।
কাতারের আামির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করেই চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। সেখানে লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি রেখে কিছুদিন তার চিকিৎসা চলে। পরিস্থিতির উন্নতি হলে কিছুদিন লন্ডনে তারেকের বাসায় থেকে চিকিৎসা নেন। অনেকটা সুস্থ হয়ে গত ৬ মে একই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তিনি দেশে ফিরেছিলেন।