স্পন্দন (Spandan) শব্দের অর্থ হলো কম্পন, মৃদু নড়াচড়া, স্ফুরণ বা হৃদস্পন্দন (heartbeat), যা কোনো কিছুর মধ্যে চলমান, পর্যায়ক্রমিক গতি বা শিহরণকে বোঝায়। দৈনিক স্পন্দন হলো সেইসব। মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিতে স্পন্দন এগিয়ে যাচ্ছে তার আপন গতিতে। তড়িঘড়ি নয়, অনেকটা ধীরে ধীরে পা ফেলে স্পন্দন। অনেকটা মহিষের মতো। হুটহাট কোনো সিদ্ধান্ত নয়, যুগের সাথে তাল মিলিয়ে অত্যন্ত ধীরস্থিরভাবে একঝাঁক নিবেদিত কর্মী বাহিনী নিয়ে পথ পাড়ি দিচ্ছে সুস্থধারার পত্রিকাটি।
মহান বিজয়ের মাসে দৈনিক স্পন্দন জন্ম নেয় শত্রুমুক্ত যশোরে অস্থায়ী সরকারের প্রথম জনসভার দিনে ২০০৬ সালের ১১ ডিসেম্বরে।
আফিল গ্রুপ শুধু ব্যবসায়ীক মনমানসিকতায় নয়, সৃজনশীল কাজেও এগিয়ে যেতে চায়। এই মন্ত্রে সমাজকে এগিয়ে নিতে গ্রুপের কর্ণধার বিশিষ্ট শিল্পপতি আলহাজ শেখ আফিল উদ্দিন সংবাদপত্র প্রকাশের দিকে মনোনিবেশ করেন। তার ভাবনা থেকে গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান দৈনিক স্পন্দনের জন্ম হয়। শুরুতে একঝাঁক দক্ষ কর্মী বাহিনী নিয়ে যাত্রা শুরু হয় পত্রিকাটির। সেই থেকে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আজ অবধি পথ চলছে। ১৯ বছর আগে জন্ম নেয়া পত্রিকাটি আজ ২০ বছরে পদার্পণ করলো।
‘সত্যের সন্ধানে অবিচল’ স্লোগান বুকে ধারণ করে এগিয়ে যাচ্ছে এ অঞ্চলের সংবাদপত্র জগতের নির্ভরতা ও বস্তত্মুনিষ্ঠতার প্রতীক দৈনিক স্পন্দন। গণমানুষের আশা আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশা, উন্নয়নসহ সামগ্রীক জীবনের তথ্যের সঠিক প্রকাশনার মধ্য দিয়ে পত্রিকাটি দেশ তথা জাতির জন্য নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছে। এত লম্বা সময় একটি পত্রিকার টিকে থাকার লড়াইয়ে কম সময় নয়। কষ্টসাধ্য হলেও জেলা শহর থেকে প্রকাশিত পত্রিকাটি অনেকটা নিয়মনীতি মেনে এক ঝাঁক উদ্যেমি সংবাদকর্মী নিয়ে মানুষের অধিকার আদায়ে নিপীড়িত নির্যাতিতদের পক্ষে নিষ্ঠা ও সততার সাথে এগিয়ে যাচ্ছে। সৎ ও সাহসী সাংবাদিকতার আদর্শ সমুন্নত রাখতে পত্রিকাটি বরাবরই উদগ্রীব। সাবলীল ভাষা ব্যবহার ও দুর্বোধ্য ভাষা পরিহার করে পত্রিকার প্রকাশনা অব্যাহত রাখার চ্যালেঞ্জও করে যাচ্ছে। আমরা চাই পত্রিকার মানের দিক ঠিক রাখতে।
নানা সমস্যা-সংকটের মধ্যেও এখনো পর্যন্ত স্পন্দন পিছু হটেনি। নিয়মনীতি থেকে পিছপা হয়নি পত্রিকার সম্পাদকীয় নীতি। আর এটির বিশেষত্ব হলো নিজের পত্রিকার কোনো সংবাদের বিজ্ঞাপন আকারে প্রতিবাদ না ছাপা ও অশ্লীল বিজ্ঞাপন পরিহার করা। এতে পত্রিকার লাভের দিক চিন্তা না করে সুস্থ ধারার পত্রিকা উপহার দেয়াই ‘সম্পাদকীয় নীতি’। আমরা নিপীড়িত নির্যাতিত অবহেলিত মানুষের পক্ষে থেকে কাজ করতে চাই। তথ্য সন্ত্রাস করে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি নয় বরং সঠিক তথ্য জানানোর জন্য স্পন্দন সব সময় জনগণের পাশে থাকার প্রত্যাশা করে। কিন্তু সামনের পথচলা কতটা সহজ হবে সেই দুশ্চিন্তা ভর করছে প্রতিনিয়ত।
দৈনিক স্পন্দন প্রতিষ্ঠার পর থেকে এদেশের সব গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক, জনমুখী আন্দোলনে সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার সারথি হিসেবে ভূমিকা রেখে চলেছে। সামাজিক দায়িত্বশীলতা সমুন্নত রাখার ক্ষেত্রেই আমরা সব সময় দৃষ্টি দিয়েছি। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই পত্রিকাটি পরিচিতি পেয়েছে যশোরাঞ্চলের আস্থা এবং নির্ভরতার সংবাদপত্র হিসেবে। আমরা নির্দ্বিধায় বলতে পারি, এক্ষেত্রে স্পন্দন অবশ্যই অন্য যে কোনো সংবাদপত্র থেকে আলাদা। আমরা নিরন্তর কাজ করে চলেছি জনগণের কণ্ঠস্বর হিসেবে। এক্ষেত্রে আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি মহান মুক্তিযুদ্ধের অবিনাশী চেতনা। তারুণ্যের শক্তিতে আমরা লড়াই করছি একটি গণমুখী অসাম্প্রদায়িক বিজ্ঞানমনস্ক ও মুক্ত চিন্তার সমাজ প্রতিষ্ঠায়।
স্পন্দন পরিবার একাগ্রতা ও নিষ্ঠার সাথে শ্রম দিয়ে যাচ্ছে পত্রিকাটি কিভাবে উন্নতির দিকে ধাবিত হয়। স্পন্দন হচ্ছে যশোরের সবচেয়ে ভারসাম্যপূর্ণ পত্রিকা। পাঠকের মন জোগাতে ও মন জাগাতে সর্বসাধ্য নিয়োগ করছে।
আমাদের কাছে মনে হয়, সংবাদপত্র এখন পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। পরিবর্তনের এই ধারাবাহিকতায় দৈনিক স্পন্দনও তাল মিলিয়ে যাচ্ছে।
পত্রিকাটিতে ওয়েবপেজ http:www.dailyspandan.com, ই-পেপার http:www.edailyspandan.com/ যুক্ত রয়েছে। প্রতিনিয়ত এক ক্লিকেই সব খবর দেখা যাচ্ছে।
সেই ধারাবাহিকতায় ১৯ পূর্ণ করে ২০ বছরে পদার্পণের এই শুভলগ্নে স্পন্দনের পাঠক, লেখক, বিজ্ঞাপনদাতা, পত্রিকা পরিবেশক, বিপণনকারী, শুভানুধ্যায়ীসহ সবাইকে জানাই শুভেচ্ছা-অভিনন্দন। আজকের সূর্যোদয় হোক নতুন স্পন্দন, নতুন সবকিছু।