নূরুল হক, মণিরামপুর : বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দল (বিএনপি)-৮৯, যশোর-৫ (মণিরামপুর) আসনটি বাংলাদেশ উলামায়ে ইসলামকে ছেড়ে দেয়ায় তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে মণিরামপুরের বিএনপির নেতাকর্মীরা।
ইতোপূর্বে এ আসনটিতে উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র অ্যাড. শহীদ ইকবাল হোসেনের নাম ঘোষণা করা হয়।
কিন্তু বুধবার এ আসনটি বিএনপির শরীক দল উলামায়ে ইসলামকে ছেড়ে দিতে অ্যাড. শহীদ ইকবাল হোসেনের পরিবর্তে উলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক রশিদ বিন ওয়াক্কাসের নাম ঘোষনা করেন। এ ঘোষইার পরপরই উপজেলা সদরসহ সারা মণিরামপুরে বিক্ষোভ মিছিল মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বিএনপি এবং দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী এতে অংশ নেয়।
বিক্ষোভ মিছিল শেষে পৌরশহরের সমাবেশে বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি মফিজুর রহমান, অ্যাড. মকবুল হোসেন, পৌর বিএনপির সভাপতি খাইরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাই, বিএনপিনেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আক্তার খান, খান শফিয়ার রহমানসহ প্রমুখ।
এ সময়ে বক্তব্যে বিএনপির নেতৃবৃন্দ বলেন-বিগত ৪০ বছর শহীদ ইকবাল দলের হাল ধরে বিএনপির নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। তাকে বা বিএনপির কাউকে মনোনয়ন না দিয়ে শরীকদের আসন ছেড়ে দিয়েছে বিএনপি। দলীয় নেতাকর্মীদের মনোনয়ন দেয়া হয়নি। বিএনপি করার অপরাধে মণিরামপুরে যে ১৩ জন বিএনপির ভাইকে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের সময়ে ক্রসফায়ার এবং নির্মম নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যা করা হয়েছে, বিএনপি করার অপরাধে যারা নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন, তাদের পরিবারের কাছে ভোট চাইতে যাবে কে? বিএনপি করার অপরাধে যারা অজস্র মামলায় জর্জরিত হয়ে যারা ভিটে-মাটি, ব্যবসা, সংসার হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন-তাদের কাছে ভোট চাইতে যাবে কে? বিএনপি করার অপরাধে যারা বিনা অপরাধে দিনের পর দিন জেলের কষ্ট উপভোগ করেছেন, তাদের কাছে গিয়ে ভোট চাইবে কে?
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম নামের যে একটা দল আছে সেটা তিনি জানেনই না। কারণ বিগত স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের সময়ে মণিরামপুরে এই দলটির কোনো ভূমিকাই ছিলো না। তাদের ভূমিকা টুকটাক গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে। যিনি বিগত স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে কখনোই রাজপথ ছেড়ে যান নাই বা প্রায় ৫০ টি মামলা খেয়েও যাকে দমানো যায় নাই বা বারবার তাকে দুর্বল করার জন্য প্রায় ২৩ বার তার নিজ বাড়িতে হামলা ও তার নিজের ছোট ভাইকে প্রকাশ্য রাস্তায় নির্মম নির্যাতন করে মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে ফেলে রেখে গেছেন, তারপরও যিনি দলীয় প্রতিটি প্রোগ্রাম সফল করেছেন, তিনি কিভাবে মনোনয়ন পায় না জানতে আগ্রহী?
যিনি মণিরামপুর সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের কে সন্তানের মতো আগলে রেখেছেন, তিনি কেন দলীয় মনোনয়ন পাবেন না? অল্প বয়সে বারবার নির্বাচিত মণিরামপুর উপজেলার সদর ইউনিয়ন এর চেয়ারম্যান, পরবর্তীতে বারবার নির্বাচিত মণিরামপুর পৌরসভার জনপ্রিয় মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। বিগত ১৭ বছর ধরে যিনি মণিরামপুরের একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে নেতাকর্মীদের খোঁজখবর নিতে ছুটে চলেছেন ক্লান্তিহীন ভাবে রাতদিন। অসুস্থতা, মৃত্যু, জানাজায় সবখানেই যাকে মণিরামপুরবাসী দেখেছেন এবং মণিরামপুরের সর্বস্তরের মানুষের সাথে যার নিবিড় সম্পর্কের কারণে আপামর গণমানুষের নেতায় পরিণত হয়েছেন, তিনি একমাত্র শহিদ ইকবাল হোসেন। তাকে দলীয় প্রতীক ধানের শীষের মনোনয়ন ফিরিয়ে দিলে এই আসনটি বিএনপিরই হবে ইনশাআল্লাহ। অন্যথায় আসনটি হারাবেন। দল তৃণমূল নেতাকর্মীদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এমন সিদ্ধান্তে বিএনপি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।