আ. মালেক রেজা, শরণখোলা (বাগেরহাট) : বাগেরহাটের শরণখোলায় অতিদরিদ্রের জন্য নির্ধারিত ৪০ দিনের কর্মসূচির মধ্যে ২১ দিন পর কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। বাকি ১৯ দিন কাজ করতে না পারায় তাদের বরাদ্দের টাকা ফেরত পাঠানো হয়েছে। অপরদিকে, সরকারের যুগান্তকারী পদক্ষেপ জি টু পি পদ্ধতিতে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে উপকারভোগীদের কাছে সরাসরি টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা করা হলেও ৮৯ জন হতদরিদ্র কাজের মজুরি থেকে বঞ্চিত রয়েছেন বলে জানা গেছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ২০২১ সালের ৫ মে ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের (দ্বিতীয় পর্যায়) অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচি প্রকল্পের আওতায় জনপ্রতি দৈনিক ৪০০ টাকা মজুরি হারে ৪০ দিনের কর্মসূচিতে উপজেলার চার ইউনিয়নের ৪৫৩ জন উপকারভোগীর অনুকুলে ৭২ লাখ ৪৮ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর। ১০ মে থেকে কাজ শুরুর পর সরকারি ছুটি বাদে ৮ জুন পর্যন্ত ২১ দিনের কাজ হয়েছে। ৮ জুন প্রকল্পের কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবার কারণে বাকি ১৯ দিনের কাজের জন্য বরাদ্দকৃত ৩৪ লাখ ৩১ হাজার ২০০ টাকা ফেরত চলে গেছে।
উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের সোনাতলা ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, তার এলাকার সোলায়মান, তহমিনা বেগম, দেলোয়ার হোসেন, শাহিদা বেগম ওজহুরা বেগম প্রথম পর্যায়ের ২৯ দিনের মজুরির টাকা পায়নি।
রায়েন্দা ইউনিয়নের সদর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জালাল আহমেদ রুমী জানান, তার এলাকার আকলিমা বেগম নামে একজন হতদরিদ্র এ পর্যন্ত কোন টাকা পায়নি। তাছাড়া আমিনুর, মমতাজ, দুলালসহ ৬/৭ জন শ্রমিক প্রথম পর্যায়ের ২৯ দিনের মজুরির টাকা পায়নি।
রায়েন্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজমল হোসেন মুক্তা জানান, বর্তমানে সুন্দরবন ও সাগরে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় অনেক জেলে পরিবারে হাহাকার চলছে। অন্যদিকে অতিদরিদ্র প্রকল্পের অর্থ ফেরত যাওয়া ও কাজ করেও মজুরি না পাওয়া পরিবারগুলো খুব কষ্টে দিনযাপন করছে। বিষয়টি সমাধানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল আলীম বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ৮ জুন পর্যন্ত কাজ করতে বলা হয়েছে। যার জন্য ১৯ দিনের বরাদ্ধকৃত ৩৪ লাখ ৩১ হাজার ২০০ টাকা ফেরত দিতে হয়েছে।
শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূর-ই আলম সিদ্দিকী জানান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর নির্ধারিত সময় বেঁধে দেয়ায় কাজ করানো সম্ভব হয়নি। তবে, যারা টাকা পায়নি তাদের বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের উপপরিচালক (কাবিটা-৩) মো. নায়েব আলী জানান, সরকারি নির্দেশনার বাইরে অতিরিক্ত কাজ করার সুযোগ না থাকায় টাকাগুলো ফেরত চলে এসেছে। তবে, সরকারের মহাপরিকল্পনায় আগামী জুলাই থেকে ৮০/১০০ দিনের কর্মসূচি বাস্তবায়ন হবার সম্ভাবনা রয়েছে এবং যারা টাকা মজুরি পায়নি তারা অতি শীঘ্রই টাকা পাবেন বলে তিনি আস্বস্ত করেন।