Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)

কালীগঞ্জের বাড়িতে বাড়িতে জ্বর সর্দি কাঁশি

এখন সময়: মঙ্গলবার, ১ জুলাই , ২০২৫, ০৬:০৩:২৪ এম

জামির হোসেন, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ)   : প্রকৃতির বৈরি আবহাওয়ায় কালীগঞ্জের বাড়িতে বাড়িতে জ্বর,সর্দি, ঠান্ডাকাঁশি দেখা যাচ্ছে। আর এরমধ্যেও আবার প্রকোপ বাড়ছে ডায়রিয়ার। এমন চিত্র শহরের মত প্রত্যন্তাঞ্চলেও। কোনো পরিবারের একজন আক্রান্ত হলেই পর্যায়ক্রমে সকলে আক্রান্ত হচ্ছেন। বেশি অসুস্থরা হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি হলেও অনেকে আবার বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এদিকে অনেকের মধ্যে করোনা উপসর্গ থাকলেও নমুনা পরীক্ষায় তেমন একটা আগ্রহ নেই। চিকিৎসকেরা বলছেন এতে আতংকিত হওয়ার কিছু নেই। এটি সাধারণত ভাইরাল ফেভার। ঠিকমত ব্যবস্থাপত্র ও বিশ্রাম নিলেই তাড়াতাড়ি সুস্থ হওয়া সম্ভব। ভ্যাপসা গরমের সঙ্গে প্রখর রোদ থাকায় বাতাসে জলীয়বাষ্প আধিক্যের কারণে তাপমাত্রা বেড়ে এমন অবস্থা হচ্ছে।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে দেখা যায়, অধিক রোগী ভর্তি রয়েছেন। শয্যা সংকট থাকলেও হাসপাতালের মেঝেতে শুয়ে অনেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের মধ্যে বেশির ভাগই জ¦র সর্দি কাঁশি ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী।  

হাসপাতাল সূত্রে জানাগেছে, সম্প্রতি সময়ে বিভিন্ন রোগ ব্যাধি বেড়েছে। এরমধ্যে জ¦র সর্দির রোগী বেশি। গত মাসের ৮ থেকে ১৫ তারিখ পর্যন্ত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ৩৩৫ জন। তাদের মধ্যে ৬২ জন জ¦র সর্দি কাঁশি নিয়ে। সাথে সাথে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছে ৩৯ জন। এর পরের এক সপ্তাহ বাদ দিয়ে গত ২১ থেকে ৩০ তারিখ পর্যন্ত মাসের শেষ সপ্তাহে অর্থাৎ গত ২১ থেকে ৩০ তারিখ পর্যন্ত এক সপ্তাহে বেশ জ¦রের রোগী এসেছে ১০৮ জন। তাদের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হন ৩৮ জন। আর ডায়রিয়ার রোগী এসেছে মোট ৫২ জন। তাদের মধ্যে ভর্তি হয়েছে ৪৩ জন। অর্থাৎ মোট ১৫ দিনে জ¦র ঠান্ডা কাঁশির রোগী এসেছে ১৭০ জন। আর ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে এসেছে ৯২ জন। সব ধরনের রোগী মিলে এসেছে ৬৮২ জন।  

অফিস সূত্রে আরও জানাগেছে, গত দুই মাস ধরে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেড়েছে। তাদের মধ্যে জ¦র সর্দি কাঁশি ও ডায়রিয়ার রোগীই বেশি। তাছাড়া অনেকের মধ্যে করোনার উপসর্গ থাকলেও করোনা পরীক্ষায় তাদের কোনো আগ্রহ নেই। তারা সাধারণ জ¦র সর্দি ভেবে হাসপাতালের বহির্বিভাগ থেকে ব্যবস্থাপত্র নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।

হাসপাতালে ভর্তি উপজেলার ফরাসপুর গ্রামের আশাদুল ইসলাম ও তত্বিপুর গ্রামের মতিয়ার রহমান জানান, তারাও জ¦র ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে গত ৪ দিন ধরে হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। প্রথমে ঘনঘন বমি ও পাতলা পায়খানা হচ্ছে পরে প্রচণ্ড জ¦রে আক্রমণ করে  আক্রান্তদের শয্যাশায়ী করছে। তারা বলেন সম্প্রতি সময়ে ছড়িয়ে পড়েছে জ¦র সর্দি কাঁশি তবে এখন আবার জ¦রের সঙ্গে ডায়রিয়া রোগী বাড়ছে।  

উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের ছবিরন নেছা জানান, গত ৩ দিন ধরে জ¦রে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। জ¦র এখন কিছুটা কম হলেও দুর্বলতা কাটছে না। তিনি বলেন, তার গ্রামের বেশির ভাগ বাড়িতে এখন জ¦র সর্দিকাঁশির রোগী রয়েছে।

নিয়ামতপুর গ্রামের রোগী সাহেব আলী জানান, গত ৩ দিন আগে রাতে প্রচণ্ড জ¦র আসে। শেষ রাতের দিকে বমি ও পাতলা পায়খানা।

অবস্থা খারাপের দিকে যাওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তিনি বলেন গ্রামের অন্য বাড়িগুলোর মতো তার পরিবারেও এখন মোট ৪ জন জ¦র সর্দি কাঁশির রোগী রয়েছে। তারা বাজার থেকে ওষধ এনে খেয়ে সুস্থতার পথে।

জ¦রে আক্রান্ত হাসপাতালে ভর্তি ২ মাস বয়সী শিশু তাসকিনের মা সাদিয়া খাতুন জানান, তাসকিন গত সপ্তাহ খানেক আগে থেকে জ¦রে আক্রান্ত। হাসপাতালে ভর্তি করে অক্সিজেন দেয়ার পর এখন একটু ভালো।

মাত্র ৯ মাসের শিশু খালিদ হাসানের মা নরেন্দ্রপুর গ্রামের রোজিনা খাতুন জানান,খালিদ গত ৬ দিন জুড়ে জ¦র ঠান্ডায় আক্রান্ত। গতকাল বিকালে খালিদকে ভর্তি করেছেন।

তালিয়ান গ্রামের সাইফা রহমান জানান, বিগত ১৫ দিন ধরে জ¦রে ভুগছি। কোনো রকমে জ¦র কমছে না। বাধ্য হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে গত ৩ দিন চিকিৎসা নিচ্ছেন। তিনি বলেন, খাবারের প্রতি রুচি না থাকায় অধিকমাত্রায় দূর্বল হয়ে পড়েছেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কর্মকর্তা ডা. আলমগীর হোসেন জানান, আবহাওয়া পরিবর্তণের কারনে কোনো কোনো সময়ে কিছু রোগব্যাধির প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। সম্প্রতি সময়ে জ¦র সর্দি কাঁশির রোগী হাসপাতালে বৃদ্ধি পেয়েছে। আবার জ¦রের সঙ্গে ডায়রিয়ার রোগীও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। তিনি আরও বলেন, সাধারণত জ¦র ঠান্ডা কাঁশি নির্দিষ্ট কিছু ঔষধ সেবনের পর সুস্থ হয়ে যায়। তবে করোনা জ¦র দীর্ঘ সময় ও তীব্র হলে নমুনা পরীক্ষার নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। তবে ডায়রিয়াটা সাধারনত আবহাওয়া জনিত বলে তারা মনে করছেন। রোগীরা কয়েকদিনে স্বাভাবিক হচ্ছেন। ফলে ভয়ের কিছু নেই।       

Ad for sale 100 x 870 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
Ad for sale 225 x 270 Position (4)
Position (4)