আজ কচুয়া মুক্ত দিবস

এখন সময়: শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল , ২০২৪, ০৩:৩১:০২ পিএম

 

নকিব সিরাজুল হক, বাগেরহাট : আজ ১২ ডিসেম্বর বাগেরহাটের কচুয়া মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে হানাদার বাহিনী এবং তাদের দোসর রাজাকারদের বিতাড়িত  করে বীর মুক্তিযোদ্ধারা কচুয়া উপজেলা তৎকালিন থানা সদরসহ সর্বত্র বিজয় পতাকা উড়াতে সক্ষম হন ।

৬ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের সার্বিকভাবে সহযোগিতা দানকারী প্রতিবেশী দেশ ভারত বংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। আনুষ্ঠিানিক ভাবে ভারতীয় বাহিনী এবং মুক্তি বাহিনী মিলে গঠিত হয় মিত্রবাহিনী। যা মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এদিকে কচুয়ায় অবস্থানরত রাজাকারদের অত্যাচারে নিরীহ জনগন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। তাদের মধ্যে থেকে অনেকেই আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম আসামি বাগেরহাট সাব-সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন তাজুল ইসলামের সাথে গোপনে দেখা করে কচুয়া আক্রমণ করতে অনুরোধ করেন। সিদ্ধান্ত হয় ১১ ডিসেম্বর কচুয়া আক্রমণ করার। সে অনুসারে সাব সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন তাজুল ইসলাম এবং কোম্পানি কমান্ডার  ক্যাপ্টেন তবারেক আলীর নেতৃত্বে দুটি গ্রুপে ভাগ হয়ে মুক্তিযোদ্ধারা বর্তমান চিতলমারী উপজেলার সন্তোষপুরে  অবস্থিত সাব-সেক্টর হেড কোয়াটার থেকে এবং কচুয়া উপজেলার ধোপাখালী ঠাকুর বাড়িতে অবস্থিত কোম্পানি কমান্ডারের দপ্তর থেকে কচুয়ার দিকে অগ্রসর হয়। দুপুরের দিকে কচুয়ার অদুরে মঘিয়া কাউন্সিল অফিসের কাছে আসলে রাজাকারদের পেট্রোল পার্টির দ্বারা মুক্তিযোদ্ধা আক্রান্ত হয়। সেখানেই যুদ্ধ শুরু হয়। রাজাকাররা পিছু হটার ভান করে কিছুক্ষণ গুলি ছোড়া থেকে বিরত থাকে। পরিস্থিতি বুঝতে না পেরে সুলতান আলী নামে একজন মুক্তিযোদ্ধা নিজের অবস্থান ছেড়ে দাড়িয়ে রাজাকারদের অবস্থান দেখার চেষ্টা করে। সাথে সাথে তিনি গুলিবিদ্ধ হন এবং সেখানেই তিনি শহিদ হন। ক্যাপ্টেন তাজুল ইসলাম তখন রাজাকারদের মুল ক্যম্পের দিকে ৩ ইঞ্চি মর্টারের দুটি সেল নিক্ষেপ করেন। সেল দুটি মুল ক্যাম্পের উপর না পড়লেও তার কাছে গিয়ে পড়ে বিষ্ফোরিত হয়। ভিত হয়ে রাতের মধ্যে রাজাকাররা কচুয়া ত্যাগ করে বাগেরহাটে এসে জড়ো হয়। ১২ ডিসেম্বর সকালে কচুয়াসদরসহ সর্বত্র পাক বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার মুক্ত হয়। পতপত করে উড়তে থাকে বিজয় পতাকা। এ প্রসঙ্গে কচুয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শিকদার হাবিবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, প্রতি বছর ১২ ডিসেম্বর আসলে বুকটা গর্ভে ভরে ওঠে। গোটাদেশ মুক্ত হওয়ার ৪ দিন আগে আমরা নিজ উপজেলা কচুয়া হানাদার মুক্ত করতে সক্ষম হয়েছিলাম।