Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)

দেশে কম দামে ফুলের চারা পেয়ে খুশি চাষিরা, কমছে আমদানি নির্ভরতা

এখন সময়: রবিবার, ৬ জুলাই , ২০২৫, ০৫:৩৮:০৩ এম

 

নিজস্ব প্রতিবেদক: ফুলের রাজধানীখ্যাত যশোরের ঝিকরগাছার ফুলচাষি সাজেদা বেগম। এক দশকের বেশি সময় উপজেলার পানিসারাতে চাষ করছেন নানা জাতের ফুল। বছর পাঁচেক ধরে শুরু করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার জারবেরা ফুলের চাষ। আগে ভারত থেকে চারা আমদানি করে চাষাবাদ করলেও এখন যশোরে আরআরএফ নামে বেসরকারি একটি সংস্থার টিস্যু কালচার ল্যাবে উৎপাদিত চারা দিয়ে করছেন ফুলের চাষাবাদ। আগে তুলনায় প্রায় অর্ধেক দামে এখান থেকে চারা নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন বুনছেন এই নারী উদ্যোক্তা।

তিনি বলেন, ‘ভারত থেকে প্রতি পিচ চারা আনতে যেয়ে একশ’ টাকার বেশি খরচ পড়তো। যেহেতু নিজে যেয়ে আনতে পারতাম না, তাই পছন্দের কালার ও জাত আসতো না।  এখন যশোরে আরআরএফ নামে একটি সংস্থার ল্যাবে যেয়ে নিজের পছন্দের জাত ও কালার দেখে ভালো মানের চারা আনতে পারছি। কম দামে ও সময়মতো চারা এনে সঠিক সময়ে চারাও রোপন করতে পেরে নতুন করে স্বপ্ন বুনছেন সাজেদার মতো অসংখ্যা ফুলচাষি।

ফুলের রাজ্য হিসেবে পরিচিত যশোরের গদখালি। একসময় প্রচলিত তথা দেশীয় ফুলের চাষ করতেন এখানকার ফুলচাষিরা। কিন্তু বর্তমানে দেশীয় প্রজাতির বাইরে এখন গদখালিতে চাষ হচ্ছে নেদারল্যান্ডসের লিলিয়াম এস্টোমা জারবেরা। একসময় ভারত থেকে উচ্চ মূল্যে আমদানি করা হতো এসব ফুলের চারা। এখন দেশেই টিস্যু কালচার পদ্ধতিতে চাষ হচ্ছে জারবেরা ফুলের চারা। ভারত থেকে প্রতি পিস জারবেরা ৮০ থেকে ১০০ টাকায় আমদানি করলেও এখন যশোরেই  পাওয়া যাচ্ছে এসব চারা মাত্র ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়।  আরআরএফ নামে একটি বেসরকারি সংস্থা টিস্যু কালচার পদ্ধতিতে ল্যাবে চাষ করছে এসব নামিদামি ফুলের চারা। এতে কমেছে বিদেশ নির্ভরতা। যার আর্থিক সহযোগিতা করছে পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন পিকেএসএফ। চাষি, ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আপাতত চাহিদার তুলনায় কম চারা উৎপাদিত হচ্ছে। তবে, অদূর ভবিষ্যতে বিদেশি এসব ফুল গাছের চারা উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে দেশ।

গদখালির ফুলচাষি ও ব্যবসায়ী মঞ্জুরুল হক বলেন, ‘ভারত থেকে আমরা যে চারা আমদানি করতাম, তার চেয়ে যশোরে টিস্যু কালচার ল্যাবের চারার মান অনেক ভালো। ভারতে চারা আনতে গেলে অগ্রিম টাকা দেওয়া লাগে। কিন্তু মান ও চাহিদা অনুযায়ী চারা পাওয়া যায় না। তিনি বলেন, ফুল চাষিদের জন্য এই উদ্যোগ প্রশংসিত। সরকারি বেসরকারিভাবে ফুলচাষিদের চাষাবাদে এ ধরণের উদ্যোগ বৃদ্ধি পেলে ফুল চাষ সম্প্রসারণ হবে। অন্যদিকে বিদেশ নির্ভরতা কমবে।’ 

আরআরএফ ল্যাব সাইন্স অফিসার হোসাইন আহমেদ বলেন, ‘ ভারত থেকে আমদানির চেয়ে দেশীয় ল্যাবে উৎপাদিত এসব মান উন্নতমানের। চাষিদের চারা দেওয়ার আগে আমরা জাত, রঙ ও মানের দেখিয়ে তাদের চারা সরবারহ করি। এতে তারা তাদের কাঙ্খিত চারা পাচ্ছে। তবে প্রতি মাসে ২৫ হাজারের বেশি চাহিদা থাকলেও উৎপাদন হচ্ছে মাত্র ৫ হাজার। এটা বাড়ানোর জন্য আমরা উদ্যোগ নিচ্ছি। 

আরআরএফ সিনিয়র সহকারী পরিচালক অসিত বরণ মন্ডল বলেন, ‘চাষিরা আগে ভারত থেকে আমদানি করতো উচ্চ দামের ফুলের চারা। কিন্তু আমাদের কাছ থেকে নিলে ৬ রঙের চারা পাচ্ছে। কালার নিশ্চিতের সঙ্গে, ফুলের চারার নামও অর্ধেক। যার কারণে শুরু থেকে যশোর, ঝিনাইদহ,  চুয়াডাঙ্গা, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম অঞ্চল পর্যন্ত চারাগুলো যাচ্ছে। তিনি বলেন, চাষিদের স্বল্পমূলের চারার সঙ্গে চাষীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে আরআরএফ। এছাড়া মাঠে ফুলচাষে কোন সমস্যার সম্মুখীন হয়; আমাদের মাঠ কর্মীরা সহযোগিতা করছেন। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এসব বিদেশি ফুলের চারা উৎপাদনে সয়ংসম্পূর্ণ হবে বাংলাদেশ। এতে এক দিকে যেমন কমবে আমদানি নির্ভরতা অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে।’

 

Ad for sale 100 x 870 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
Ad for sale 225 x 270 Position (4)
Position (4)