একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী দিয়ে চলছে শরণখোলার ৫০ শয্যার হাসপাতাল

এখন সময়: শনিবার, ২৭ জুলাই , ২০২৪, ১০:৩১:১৯ এম

 

আ.মালেক রেজা, শরণখোলা: পরিচ্ছন্নতা কর্মীর অভাবে বাগেরহাটের শরণখোলায় ৫০ শয্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ বিরাজ করছে। ৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে অন্য একজন পবিরচ্ছন্নতা কর্মী শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়োগ থাকলেও অজ্ঞাত কারণে বাগেরহাট সদর হাসমপাতালে ডেপুটেশনে কর্মরত রয়েছেন বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, হাসপাতালেত ৪ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মীর চাহিদা থাকলেও মাত্র একজন পরিচ্ছন্নকর্মী দিয়ে যাবতীয় কার্যক্রম চলছে। আর তিনি অবসরে যাওয়ার সময় হয়েছে তাই বয়সের ভারে সব কাজ করতেও পারেন না। আর এ কারণে ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়া রোগী ও চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীরা বাথরুম ও লেট্রিনে গিয়ে বেহাল অবস্থার মধ্যে পড়েন।  রোগীদের অভিযোগ লেট্রিনের দুর্গন্ধে অনেক সময় ওয়ার্ডে থাকা কষ্টকর হয়ে পড়ে।

শরণখোলা হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে ১১ জন ডাক্তারের পদ থাকলেও কর্মরত রয়েছেন মাত্র ৭ জন। যার জন্য উপজেলার ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষের সেবা দিতে অনেক সময় হিমশিম খেতে হচ্ছে। মেডিকেল টেকনলজিষ্ট ল্যাবরেটরী ১ জন, রেডিওগ্রাফী ১ জন, কার্ডিও গ্রাফার ১ জন, স্বাস্থ্য পরিদর্শক ১ জন, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ২ জন কর্মরত থাকলেও  স্বাস্থ্য সহকারীর ১৬ টি পদ শূণ্য রয়েছে। আর এজন্য রোগীরা এক্সরে, ইসিজি ও অন্যান্য পরীক্ষা করানোর সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই বিভিন্ন সময় উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসা রোগীরা জানায় অনেক সময় অপেক্ষা করে ডাক্তারের সিরিয়াল পাওয়া যায়। তাছাড়া যে ধরনের টেস্ট রোগীর জন্য দেয়া হয় তার বেশির ভাগ হাসপাতালের বাহিরে ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে করাতে হয়। আর এতে বাড়তি অর্থ দিতে গিয়ে রোগীর ওষধ কেনার পয়সা আর থাকে না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ভুক্তভোগী বলেন, শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনেক ডাক্তার কাগজে কলমে থাকলেও উপর মহলের সহযোগিতায় তাদের সুবিধা মতো স্থানে চলে যান। কিন্তু তারা বেতন ভাতা ঠিকই এখান থেকে উত্তোলন করলেও সেবা দেন বাগেরহাট, খুলনা বা ঢাকায়। এদের মধ্যে রয়েছেন ডা. নাদিরা নওরিন ঢাকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ডা. প্রসেনজিত কুমার বাগেরহাট সদর, ডা. তাহসিনা হক প্রমি খুলনা সদর হাসপাতাল ও ডা. সবুজ মিয়া(হোমিওপ্যাথিক) মঠবাড়িয়া পিরোজপুর।

এ ব্যাপারে শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডা. প্রিয় গোপাল বিশ্বাস বলেন, পরিচ্ছন্নতা কর্মী নিয়োগ না হওয়ায় বাইরে থেকে ২/১ জনকে দিয়ে কর্মকর্তা কর্মচারীদের কাছ থেকে টাকা তুলে আপাতত পরিচ্ছন্নতার কাজ করে সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং পরিচ্ছন্নকর্মী নিয়োগের জন্য উপর মহলে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামান পারভেজ বলেন, পরিচ্ছন্নতা কর্মীর ব্যাপারে অনেকবার উপর মহলে বলা হলেও তারা নিয়োগ না দেয়ায় অনেকটা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।

বাগেরহাট জেলা সিভিল সার্জন ডা. জালাল আহম্মেদ বলেন, সরকারি ভাবে পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োগ না থাকায় কিছুটা জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। তবে ডাক্তার সমস্যা সমাধানে ঊর্ধ্বতন মহলে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। 

এ ব্যাপারে খুলনা বিভাগীর পরিচালক ডা. মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ না থাকায় এই জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। যে সকল ডাঃ ঢাকা বা খুলনাতে আছেন তাদের অধিদপ্তর থেকে বদলি করা হয় সেখানে আমার করণীয় কিছু থাকে না। তবে বাগেরহাটে যিনি আছেন তার ব্যাপারে লিখিতভাবে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।