ফল-সবজির মিশ্র চাষে সফল হাবিবুর

এখন সময়: শনিবার, ২৭ জুলাই , ২০২৪, ০৬:৩০:৩৮ এম

 

বাবুল আক্তার, চৌগাছা: যশোরের চৌগাছা উপজেলায় ফল বাগানে পাঁচ লক্ষাধিক টাকার সবজি উৎপাদন করেছেন এক চাষি। পৌর এলাকার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা হাবিবুর রহমান মাল্টা বাগানের ফাঁকা জায়গায় রকমারি সবজির আবাদ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। ইতিমধ্যে লক্ষাধিক টাকার কাঁচা মরিচ বিক্রি করেছেন। অন্যান্য সবজি বিক্রি হয়েছে লাখ খানেক টাকার। এ ছাড়া দুই লক্ষাধিক টাকার আলু বিক্রি হবে বলে আশাবাদী তিনি।

সরেজমিন দেখা যায়, বাগানে সারিবদ্ধভাবে রোপণ করা মাল্টা গাছ। মাঝখানের ফাঁকা জায়গায় আলুর ক্ষেত। এর সঙ্গে লাউ, পেঁয়াজ, রসুন, পেঁপে, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মরিচ, লাল,  সবুজ ও পালং শাক ও শিমসহ হরেক রকমের সাথী ফসল। চারপাশের বেড়ায় মেটে আলু।

হাবিবুর রহমান জানান, ৫ বছর আগে ৪ বিঘা জমি লিজ মাল্টা বাগান করেন। বর্তমানে বাগানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫ বিঘায়। এ বছর প্রায় সাড়ে ৭ লাখ টাকার মাল্টা বিক্রি করেছেন। এ ছাড়া ২ বিঘা জমিতে রয়েছে নার্সারি। পেয়ারা ৪ বিঘা। ড্রাগন ৩ বিঘা।

তিনি জানান, বাগানের ফাঁকা জায়গা ফেলে না রেখে ফল-সবজির মিশ্র চাষে লাভবান হয়েছেন।

মাল্টা বাগানে গিয়ে দেখা যায়, বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত হাবিবুর রহমান। আলাপচারিতায় জানান, প্রথমে নার্সারি ব্যাসায়ী ছিলেন। এতে অভাব ছিল নিত্য সাথী। অভাব পিছু ছাড়ছিল না।

তিনি বলেন, ৫ বছর আগে নার্সারি ব্যবসার পাশাপাশি চার বিঘা জমি লিজ নিয়ে মাল্টা বাগান করি। এতেই ভাগ্যের চাকা ঘুরে যায়। ১৫ বিঘা জমির লিজ মূল্যের দুই লক্ষাধিক টাকা পরিশোধ করেছি। বাগান পরিচর্চার কাজ করেন প্রতিদিন ৫ থেকে ৭ জন। বছরে তাদের বেতন দিতে হয় প্রায় দেড় লাখ টাকা।  

হাবিবুর বলেন, পরীক্ষামূলক ভাবে প্রথমে সাথী ফসল হিসেবে সবজি চাষ করে সফল হই। এর পরে বাণিজ্যিক ভাবে আমার ৯ বিঘা জমিতে মাল্টা, পেয়ারা ও ড্রাগন বাগানে সবজি চাষ করেছি। বাগানের বেশির ভাগ সবজি বিক্রি হয়েছে। বাকি আছে গোল আলু।

তিনি বলেন, আমার বাগানে যে সবজি উৎপাদন হয়েছে তার মধ্যে কাঁচা মরিচে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছি।  কাঁচা ঝাল বিক্রি করেছি এক লাখের বেশি টাকার। অন্যান্য সবজি থেকে এসেছে আরো লাখ খানেক টাকা। সব ঠিক থাকলে আলু থেকে আরো দুই লক্ষাধিক টাকা আসবে বলে আশা করছি। এ ছাড়া অন্যান্য সবজি তো রয়েছেই।

বাগান ঘুরে দেখা যায়, কোথাও এক টুকরো ফাঁকা জায়গা ফেলে রাখেননি। মাল্টা গাছর সারির ফাঁকা জায়গায় আলু, মিষ্টি কুমড়া, মরিচ, বেগুন, বাঁধাকপি, ফুলকপি, পেঁয়াজ, রসুন, শি ও লাউয়ের মাচাসহ বিভিন্ন শাকসবজি।

তিনি জানান, বাগানের সাথী ফসল থেকে যে পরিমাণ সবজি উৎপাদন হয়েছে; তাতে পাঁচ লাখেরও বেশি টাকা আয় হবে। এতে বাগান পরিচর্চা ও জমির লিজের খরচ উঠে আসবে। ফল থেকে যে পরিমাণ টাকা আসবে তার পুরোটাই লাভ।

তিনি অভিযোগ করেন, ১৫ বিঘা জমিতে ফল বাগান ও সবজির চাষ করলেও উপজেলা কৃষি অফিসের কেউ কখোনো খোঁজ খবর নেননি। সরকারি কোনো প্রণোদান সুবিধাও পাইনি। এসব সুযোগ সুবিধা পেলে আরো এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হতো।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোসাব্বির হুসাইন বলেন, ফলবাগানে সাথী ফসল উৎপানের বিষয়টি একটি ভালো খবর। কিন্তু আমাকে কেউ এটি জানায়নি। এখন জানলাম। খোঁজ নিয়ে দেখবো। তাকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে।