স্বাস্থ্যে মাফিয়া চক্র সক্রিয়, দরকার সচেতনতা : হাইকোর্ট

এখন সময়: শনিবার, ২৭ জুলাই , ২০২৪, ০৬:৫৮:২০ এম

 

স্পন্দন ডেস্ক: বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মাফিয়া চক্র স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে সক্রিয় রয়েছে মন্তব্য করে এ ব্যাপারে সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছে হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ।

ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশু আয়ান আহমেদের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে ক্ষতিপূরণের রিট মামলার শুনানিতে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর বেঞ্চ থেকে রোববার এ মন্তব্য আসে।

এদিন রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ। রিটকারীর পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট এ বি এম শাহজাহান আকন্দ মাসুম।

এ মামলায় দেশের স্বাস্থ্যখাত নিয়ে তথ্য ও আইন তুলে ধরার জন্য অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনিরকে ‘ইন্টারভেনর‘ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

মামলায় পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী মঙ্গলবার দিন ধার্য করা হয়েছে।

অ্যাডভোকেট এ বি এম শাহজাহান আকন্দ মাসুম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আজ স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে দেশে নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত হাসপাতালের সংখ্যাসহ বিভিন্ন বিষয় যুক্ত করে আরেকটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এগুলো নিয়ে আগামী মঙ্গলবার শুনানি হবে।“ 

শুনানিকালে বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক বলেন, বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্য খাতে মাফিয়া চক্র ওষুধসহ মেডিকেল উপকরণ সরবরাহে ‘রি-এজেন্ট’ হিসেবে কাজ করে।

“স্বাস্থ্যখাত নিয়ে সবার সচেতন হওয়া প্রয়োজন। শুধু আদেশ দিলাম, পত্রিকায় নাম এল, এটা আমরা চাই না। ১৮ কোটি মানুষের উপকার হবে এমন কিছু করতে চাই।“

এ মামলার শুনানিকালে গত ২৯ জানুয়ারি শিশু আয়ান আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তদন্ত কমিটির রিপোর্টকে ‘আইওয়াশ‘ ও ‘হাস্যকর‘ বলে মন্তব্য করেছিল এই বেঞ্চ।

স্বাস্থ্য বিভাগ দায় এড়ানোর জন্য এ ধরনের রিপোর্ট দাখিল করেছে বলেও আদালত ওইদিন মন্তব্য করেছিল। 

পাঁচ বছর বয়সী আয়ানকে খতনা করানোর জন্য গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর ঢাকার সাঁতারকুল এলাকার ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালে নিয়ে গিয়েছিল তার পরিবার। অ্যানেসথেসিয়া দেওয়ার পর তার আর জ্ঞান ফেরেনি।

পরে তাকে গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। গত ৭ জানুয়ারি সেখানেই মৃত্যু হয় শিশুটির।

আয়ানের বাবা শামীম আহামেদ পরে বাড্ডা থানায় মামলা করেন। ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অ্যানেস্থেসিওলজিস্ট সাইদ সাব্বির আহমেদ, সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক তাসনুভা মাহজাবিন,অজ্ঞাতনামা পরিচালকসহ কয়েকজনকে আসামি করা হয় সেখানে।

পরে জানা যায়, যথাযথ নিবন্ধন ছাড়াই চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল কর্তৃপক্ষ। এ কারণে ওই হাসপাতালের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

আয়ানের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন যুক্ত করে গত ৯ জানুয়ারি হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এ বি এম শাহজাহান আকন্দ মাসুম।

আয়ানের মৃত্যুর জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলাকে দায়ী করে ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয় সেখানে। পাশাপাশি হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিল এবং নতুন রোগী ভর্তি না করার নির্দেশনা চেয়ে একটি সম্পূরক আবেদন করে রিট আবেদনকারীপক্ষ।

এ রিট মামলায় পরে শিশু আয়ানের বাবা পক্ষভুক্ত হন এবং পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের দাবি জানান।

স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে এ মামলায়।