আজগর হোসেন ছাব্বির,দাকোপ: দাকোপের কালাবগী এলাকায় দেখা দিয়েছে ভয়াবহ নদী ভাঙন। ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে বেশ কিছু বসত ভিটে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চলে গেছে নদী গর্ভে। পাউবোর কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এলাকাবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সূত্রে জানা যায়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩২ নম্বর পোল্ডারের আওতায় কালাবগী ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বর্ডার তথা চেয়ারম্যান ঘাট এলাকায় শনিবার সকাল থেকে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দেয়। গত ২৪ ঘণ্টায় কালাবগী মডেল বাজারের অন্তত ৫টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বসত বাড়ি নদী গর্ভে চলে গেছে। বাজারের অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, সুন্দরবন প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে স্থাপিত পানির প্লান্টসহ জনগুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু স্থাপনা আছে ঝুঁকির মুখে। ভাঙনে স্থানীয় মিজানুর গাজী, কালাম গাজী, সাইফুল চৌকিদার, সালাম মোল্যা ও ছবেদ সরদারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বসত বাড়ি ইতোমধ্যে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এ ছাড়া বাজারের খানজাহান সরদার, রিয়াজুল সানা, মোস্তফা মোল্যা ও রুবেল গাজীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে শতভাগ ঝুঁকির মুখে। দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে মডেল বাজারটি বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ দিকে ভাঙনের খবর পেয়ে সুতারখালী ইউপি চেয়ারম্যান মাসুম আলী ফকির, সাবেক চেয়ারম্যান গাজী আশরাফ হোসেন, ইউপি সদস্য আইয়ুব আলী ঢালী, মহসিন শেখ, নিমাই মন্ডলসহ স্থানীয় পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। রোববার সকালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভাগীয় পর্যায়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তারা প্রাথমিক ভাবে ভাঙন প্রতিরোধে জিও ব্যাগ ফেলানোর আশ্বাস দিয়েছেন। এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান মাসুম আলী ফকির ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, জিও ব্যাগ কোন সমাধান নয়, ভাঙন প্রতিরোধে স্থায়ী সমাধানের লক্ষে নদী শাসন এবং ব্লক ড্যাম্পিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।
উল্লেখ্য গত ২৫ মে ২০০৯ আইলার তাণ্ডবে পাউবোর ৩২ নম্বর পোল্ডারের অধিকাংশ ভেড়ি বাঁধ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে প্রায় সাড়ে ৪ শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে চায়নার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ৩২ ও ৩৩ নম্বর পোল্ডারে টেকসই ভেড়ি বাঁধ নির্মাণ করে। কিন্তু স্থানীয়দের দাবি নদী শাসন না করে নির্মিত শত কোটি টাকার প্রকল্প হস্তান্তরের আগেই ফের ভাঙন দেখা দেয়। ফলে সেখানকার ৫০ হাজার মানুষের জীবন রয়ে গেছে এখনও অনিরাপদ।