নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রচণ্ড ভ্যাপসা গরমে নাকাল হয়ে পড়েছে যশোরের জনজীবন। আগুন ঝরা রোদের কারণে মাটি থেকেও তাপ উঠছে। ঘরে বাইরে কোথাও স্বস্তি মিলছে না। ফ্যানের বাতাসেও গরম অনুভূত হচ্ছে। রোববার সূর্যের তেজ ছিল যেন শরীর পুড়িয়ে দেয়ার মতো। ভ্যাপসা গরমে শরীরও ঘেমেছে দরদর করে।
তারপর জীবিকার তাগিদে শ্রমজীবী মানুষ খাঁ খাঁ রোদে কাজ করতে গিয়ে হাঁফিয়ে উঠছেন। গরমে ছোটবড় সবার হাঁসফাঁস অবস্থা। হাসপাতালে রোগীও বেড়েছে। লাগাতার তাপ সহ্য করতে না পেরে শিশু ও বয়স্করা অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
এদিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, যশোরে তাপমাত্রা ছিল ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে শনিবার ছিল ৩৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি গ্রামের আনিসুর রহমান জানান, ওষ্ঠাগত গরমে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। প্রখর রোদ থেকে ঘরে ফিরেও গরমে তার মতো অনেকেই ছটফট করছেন। ঘরে—বাইরে কোথাও স্বস্তি নেই। ফ্যানের বাতাসেও গরম। এই গরম কোনভাবে সহ্য করার মতো না।
চান্দুটিয়া গ্রামের রড মিস্ত্রি রনি জানান, গরমের কারণে রডে হাত দেয়া যাচ্ছেনা। তারপরও কষ্ট করে কাজ করতে হচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের যে ঊর্ধ্বগতি তাতে কাজ না করে উপায় নেই।
কৃষক শফিকুল ইসলাম জানান, পাটক্ষেতে কাজ করতে গিয়ে তার মনে হচ্ছিল রোদ যেন আগুনের ফুলকি হয়ে ঝরছে। আগুনঝরা রোদের তেজে বাইরে বের হওয়া মুশকিল। যা সত্যিই কষ্টকর ছিলো। কিন্তু জীবিকার তাগিদে বাধ্য হয়ে রোদে পুড়ে কাজ করেছেন।
রিকসা চালক সালাউদ্দিন মিয়া জানান, প্রচণ্ড তাপের মধ্যে রিকসা চালাতে মন চায় না তার। কিন্তু অভাবের সংসার। তাই কষ্ট হলেও রিকসা চালানো ছাড়া উপায় নেই। টানা রোদে রিকসা চালাতে গিয়ে গরমে গায়ের কাপড় ঘেমে ভিজে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, গরমের কারণে দুপুরের দিকে শহরে রাস্তায় খুব বেশি মানুষের ভিড় থাকছেনা। কড়া রোদে মানুষের শরীর ‘পুড়ে’ যাচ্ছে।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আব্দুস সামাদ জানান, প্রচন্ড গরমের কারণে হাসপাতালে শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। বেশির ভাগ শিশু ও বয়স্করা ঠান্ডা জ্বর ও কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছেন।
‘ভাইরাল ফিভার’ বা মৌসুমি রোগ থেকে রক্ষা পেতে শিশুদের বেশি বেশি তরল খাবার খাওয়ানো ছাড়াও রোদে ঘোরাঘরি করতে না দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন এই চিকিৎসক। তিনি জানান, গরমে বাড়ছে অস্বস্তি। কড়া রোদ ও আবহাওয়ার কারণে বয়স্ক মানুষ নানা ধরণের অসুখে আক্রান্ত হচ্ছেন।