স্পন্দন ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে দলের নেতাকর্মীদের তার দলকে সুসংগঠিত করার আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে কোনো আক্রমণ বা ষড়যন্ত্র দলকে ধ্বংস করতে না পারে এবং ফিনিক্সের মতো ছাই-ভস্ম থেকেও জেগে উঠতে পারে।
তিনি বলেন, ‘সংগঠনকে শক্তিশালী করতে পারলে এবং জনগণের সমর্থন পেলে কোনো হামলা বা ষড়যন্ত্র আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে পারবে না।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা রোববার বিকেলে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির ভাষণে একথা বলেন।
তিনি বলেন, সংগঠনের প্রতিটি নেতা-কর্মীর কাছে আমার একটাই আবেদন থাকবে সংগঠনকে সুসংগঠিত করতে হবে। একজন রাজনীতিবিদের জীবনে সংগঠন হচ্ছে সবচেয়ে শক্তিশালী একটি বিষয়। যদি সংগঠন শক্তিশালী হয় তবে দেশের গণমানুষের সমর্থন পাওয়া যায়।
মৃত্যু যে কোনো সময় আসতে পারে এবং তিনি মৃত্যু ভয়ে ভীত নন উল্লেখ করে বলেন, যতই ষড়যন্ত্র হোক যতক্ষণ শ্বাস ততক্ষণ আশ।’ বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়ন করে এদেশের মানুষকে একটা উন্নত জীবন দিয়ে যাওয়াই তাঁর এবং তাঁর সংগঠনের লক্ষ্য বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, প্রত্যেক নেতা-কর্মীকে বলবো, দলের ও নেতাকর্মীদের ওপর বার বার আঘাত এসেছে। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা অনেক কষ্ট সহ্য করেছে। তাদের পরিবারগুলো কষ্ট করেছে। কিন্তু সংগঠন ধরে রেখেছে। কাজেই যেমন সংগঠন করতে হবে তেমনি জনগণের আস্থা ও বিশ^াস অর্জন করতে হবে, সেটাই আমাদের মূল শক্তি।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে পেরেছি বলেই বার বার জনগণ আমাদের ভোট দিয়েছে, আমরা বার বার ক্ষমতায় এসেছি। ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ পর্যন্ত এই দীর্ঘ সময় বাংলাদেশের ইতিহাসে দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রয়েছে। আর গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই আর্থসামাজিকভাবে বাংলাদেশ আজকে এগিয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশের উন্নতি হচ্ছে, বিশ্ব দরবারে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। ফলে আজকে বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এটাকে ধরে রেখেই আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
তিনি সকল গণআন্দোলনে আত্মত্যাগকারী এই সংগঠনের সকল নেতা-কর্মীদের প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা জানান এবং বলেন সেই মহান আত্মত্যাগের মধ্যদিয়েই আজকে দেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সভায় বক্তৃতা করেন। দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ সভা সঞ্চালনা করেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে ৭৫ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠানমালা উদ্বোধন করেন। এ সময় জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হয়। পরে আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক উপকমিটির উদ্যোগে এবং দেশ বরেণ্য বিভিন্ন শিল্পী ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানস্থলে আসার আগেই ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ছাপিয়ে প্রখর দাবদাহ এড়িয়ে আশপাশের ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়, শাহবাগ, হাইকোর্ট এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। সকাল থেকেই প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর নানা রংয়ের পোশাক, টুপি পরে, হেড ব্যান্ড লাগিয়ে ও গামছা বেঁধে, ব্যানার-ফেস্টুন-প্ল্যাকার্ড হাতে ঢাক-ঢোল নিয়ে বাদ্যের তালে তালে, শ্লোগানে শ্লোগানে চারদিক প্রকম্পিত করে দলে দলে নেতা-কর্মী ও সমর্থকগণ অনুষ্ঠানস্থলে আসতে থাকেন।
অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় নেতা জিএম কাদের, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ-ইনু) সভাপতি হাসানুল হক ইনুসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশে বিদেশি মিশনে কর্মরত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকগণও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।