এ,বি সিদ্দিক মন্টু, চৌগাছা : চৌগাছায় ঐতিহ্যবাহী সরকারি শাহাদৎ পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাকা রাস্তাসংলগ্ন জমিতে শতাধিক পুরাতন দোকানঘর ঝুঁকিপূর্ণ হলে ২০১৫ সালে ম্যানেজিং কমিটি নতুন মার্কেট নির্মাণের কাজ শুরু করে। পরবর্তীতে সরকার বিদ্যালয়টি অধিগ্রহণ করলে নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে পৌর সদরের প্রাণকেন্দ্রে সড়কের পাশে বিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন মার্কেট ডাস্টবিনে রূপ নিয়েছে।
জানা গেছে, উপজেলার স্বরুপদাহ গ্রামের মরহুম শাহাদৎ হোসেন ও তার পরিবার ১৯২৯ সালে ৩৮ বিঘা জমি দান করে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৪৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিদ্যালয়টি অনুমোদন লাভ করে এবং ১৯৭৮ সালে পাইলট স্কীমে উন্নতি লাভ করে। এরপর ২০১৬ সালে সরকারের মডেল প্রকল্পে অর্ন্তভুক্ত হয় এবং ২০১৮ সালের ১৩ সেপ্টেমবার সরকার বিদ্যালয়টি অধিগ্রহণ করে।
জানা গেছে, ২০১৫ সালের বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অ্যাড.মনিরুল ইসলাম (সাবেক সংসদ সদস্য) কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ ড. মোস্তানিছুর রহমান, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান দেবাশীষ মিশ্র জয়, আল-মামুন হিমেলসহ সদস্যবৃন্দ বিদ্যালয়ের শতাধিক দোকানঘর ঝুকিপূর্ণ হবার কারণে নতুন মার্কেট নির্মাণের সিন্ধান্ত গ্রহণ করে। এরপর পরিকল্পনা অনুযায়ী মার্কেট নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এক বছর পর হঠাৎ নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে নির্মাণাধীন মার্কেট ডাস্টবিন হিসেবে ব্যবহৃত হলেও পৌরকর্র্তৃপক্ষ বা স্কুল কর্তৃপক্ষের কোন প্রকার মাথাব্যথা নেই।
২০১৮ সালের বিদ্যালয়টি সরকারি করণে হবার পর মার্কেট নির্মাণের কাজ প্রায় ৬ বছরের বেশি বন্ধ। অপরদিকে প্রায় শতাধিক পুরাতন দোকানঘর ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এসব দোকানে এখনও ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। কি কারণে নির্মাণ কাজ বন্ধ হলো এবং বছরের পর বছর ধরে শুরু হচ্ছে না এ নিয়ে জনমনে নানা জল্পনা কল্পনা শুরু হয়েছে।
স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরের দিকে বিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশে চৌগাছা-মহেশপুর সড়ক ঘেষে একটি মার্কেট নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মার্কেট নির্মাণের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান সর্বস্তরের মানুষ। ভিত থেকে শুরু করে পিলার তৈরি পর্যন্ত অর্ধকোটি টাকা ব্যয় করা হয়। এদিকে মার্কেট নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ওই এলাকাটি এক ধরনের পরিত্যক্ত স্থান হিসেবে সকলের কাছে পরিচিতি লাভ করেছে। আর এই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে কিছু অসাধু ব্যক্তি সেখানে তৈরি করেছে ময়লার ভাগাড়। হোটেল রেস্তোরাঁর দইয়ের খুরিসহ বিভিন্ন বোতলজাত সামগ্রি ফেলা হচ্ছে। সবজি বাজারে কিছু ব্যবসায়ী নানা ধরনের ময়লা সেখানে ফেলছে এমনকি পাড়া মহল্লার অনেকে রাতের আঁধারে সেখানে নানা ধরনের ময়লা ফেলে নষ্ট করছে পরিবেশ। দুর্গন্ধ আর মশা মাছির উপদ্রবে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে মানুষ। স্থানীয়রা জানান, সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে ওই এলাকাতে বেড়ে যায় নানা অপরাধীদের আনা গোনা। নিরাপদ স্থান হওয়ায় মাদকসেবিরা সেখানে জমজমাট মাদকের আড্ডা বসায় বলে অভিযোগ রয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিজুর রহমান বলেন, মার্কেট নির্মাণে প্রায় ৫০ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। অর্থ অভাবে সে সময় কাজ বন্ধ করা হয়। এরমধ্যে প্রতিষ্ঠান সরকারি হয়ে যায়, আমি বর্তমান সভাপতি মহোদয়ের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি, তবে সিদ্ধান্ত এখনও জানতে পারেনি। এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতির দায়িত্বে থাকা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুস্মিতা সাহা বলেন, যেহেতু বিদ্যালয়টি সরকারিকরণ হয়েছে। সে কারণে স্থাপনাটি শেষ করার জন্য দ্রুত আমি লিখিতভাবে জানাবো।