নড়াইল পৌর প্রতিনিধি: নড়াইল পৌর বিএনপির কমিটি গঠন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সম্মেলন ও কাউন্সিলরদের ভোটগ্রহণে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো: মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে ভোট কেনা, প্রভাব বিস্তার, নিরপেক্ষতা হারানোসহ নানা অভিযোগ তুলেছেন এ নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী ও জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো: আলী হাসান। রোববার দুপুরে শহরের দুর্গাপুরে রেজিস্ট্রি অফিস সংলগ্ন একটি কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে সাংবাদিকদের কাছে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন তিনি।
বিএনপি নেতা আলী হাসান বলেন, নড়াইল পৌর এলাকায় দুর্বল সাংগঠনিক অবস্থাকে সবল করতে, দলকে সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করতে পৌর বিএনপির সভাপতি পদে প্রার্থী হই। আমি দীর্ঘদিন জেলা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ও যুবদলের সফলভাবে নেতৃত্ব দেয়ার কারণে শহরসহ জেলা পর্যায়ের সর্বত্র আমার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতৃবৃন্দ ও কাউন্সিলদের সাথে আলোচনা এবং তাদের সমর্থন নিয়েই ভোটে অংশগ্রহণ করি। অথচ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম প্রতিহিংসাবশত আমাকে পরাজিত করতে ভোটার প্রতি ৫ থেকে ২০ হাজার টাকা ব্যয় করে ভোট কিনে তার পছন্দের মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থীকে বিজয়ী করেছেন। এ নির্বাচনে জেলা সেক্রেটারি মনিরুল কোটি টাকার উপরে ব্যয় করে নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করেন। ভোট কিনতে টাকা দেয়ার প্রস্তাবের প্রমাণ হিসেবে তিনি ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার আবদুল্লাহ টিটো, মাইমুনুল ইসলাম প্রিন্স ও বাসুদেবকে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করেন। ইতোপূর্বে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী মিঠাপুরের বাসিন্দা ব্যবসায়ী মশিয়ার রহমানকে নলদী ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি বানিয়েছেন। কৃষকদলের খুলনা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তফা কামাল মোস্তর বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক গুলি করার নাটক সাজিয়ে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করেছেন। দলকে মিসগাইড করার কারণে জেলা বিএনপির ৯০শতাংশ নেতাকর্মী মনিরুলের পদত্যাগ চান বলে তিনি মন্তব্য করেন। মনিরুল পদে থাকা অবস্থায় আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি জেলা কমিটির সম্মেলন হলে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষসহ যে কোনো অঘটন ঘটার আশঙ্কাও রয়েছে বলে তিনি জানান। সংবাদ সম্মেলনে পৌর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মো: দেলেয়ার হোসেন বলেন জেলা কমিটির সম্মেলন সফলভাবে সম্পন্ন করতে কমিটি ভেঙে আহবায়ক কমিটির মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করতে হবে।জেলা কমিটি না ভাঙ্গলে ভোটাররা তাদের পছন্দের যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন না। গণতন্ত্রে বিশ্বাসী বিএনপির হাইকমান্ডের কাছে অবিলম্বে জেলা কমিটি ভেঙ্গে দেয়ার উদাত্ত আহবান জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক মোশফেকুর রহমান বাচ্চু, পৌর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক সৈয়দ ওয়াহিদুর রহমান মুকুল, মোহাম্মদ হোসেন, হাশেম বিশ্বাস ফেলানসহ দলীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও ষড়যন্ত্রমূলক। প্রতিহিংসাবশত আমার নামে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
উল্লেখ্য, শনিবার (১৮ জানুয়ারি) নড়াইল পৌর বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন ও ভোট গ্রহণ নড়াইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়।