আশাশুনি প্রতিনিধি: আশাশুনির শ্রীউলা ইউনিয়নে লাঙ্গলদাড়িয়া গ্রামের নিরঞ্জন সরকারের ছেলে অনিমেষ সরকারের লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। তার বাড়ি পাশের নিম গাছ থেকে শনিবার সকালে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে। তাকে হত্যার পর গাছের ডালের সাথে রশি দিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে বলে তার পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।
তার মা শেফালী সরকার জানান, প্রতিবেশী মৃত ওমর মল্লিকের ছেলে অহিদ মল্লিক ও শ্রীউল ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক আ. মালেক মল্লিক অনিমেষকে নানাভাবে মানসিক নির্যাতন, মারধর ও হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিল। তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে অহিদ মল্লিক মালেক মল্লিকের সাথে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় অনিমেষ ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছিল।
স্ত্রী সঞ্জিতা জানান, শুক্রবার তার স্বামী ভালভাবে খাওয়া দাওয়া করতে পারেনি। বিকাল পর্যন্ত বাড়িতে ছিল। নিরাপত্তার জন্য ঢাকায় কাজে চলে যাবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সন্ধ্যার কিছু আগে দোকানে যায়। ৮/৯ টা পর্যন্ত দোকানে ছিল। গভীর রাত পর্যন্ত বাড়িতে না ফেরায় মোবাইলে ফোন করলে বন্ধ পাওয়া যায়। বিভিন্ন স্থানে ফোনে যোগাযোগ করে তার সন্ধান পাইনি। সকালে খালেক মোল্যার ছেলে বাবলুর বাড়ির পাশে নিমগাছে নাইলনের রশিতে গলায় ফাঁস আটকানো অবস্থায় তার মৃতদেহ পাওয়া যায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করেন এবং এ সময় বাবলুর একতলা বিল্ডিং এর ছাদে অনিমেষের ব্যবহৃত মোবাইল, জাম্পার, জুতা, মানিব্যাগ, গ্যাস লাইট, সিগারেট ও ছাদের পাশের গাছে কাজের সময় ব্যবহৃত ট্রাউজার পাওয়া যায়। মৃতদেহের পা কাদায় ভরা ও গায়ে কাদামাটি লাগানো ছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
বাবলু মোল্যা জানান, আমি কিছুই জানিনা। কিভাবে ছাদের উপর অনিমেষের জিনিসপত্র আসলো তা ভেবে পাচ্ছিনা। কিছুদিন আগে আমার মা ইন্তেকাল করেছে, তা নিয়ে আমরা শোকাগ্রস্ত। সকালে লোকজনের চিৎকারে বিষয়টি জানতে পারি।
অনিমেষ আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযুক্ত অহিদ মল্লিকের স্ত্রী লাভলী জানান।
এএসপি (তালা সার্কেল) মো. হাসানুজ্জামান ও আশাশুনি থানার ওসি নোমান হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নোমান হোসেন জানান, ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা সেটি এখনও বলা যাবেনা। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে, বিস্তারিত পরে জানানো হবে।